#গুয়াহাটি: ফি বছরই অসমে বন্যা হয়, কিন্তু এ বারের বন্যা সম্ভবত সাম্প্রতিক অতীতের মধ্যে সব থেকে ভয়াবহ। বন্যায় এখনও পর্যন্ত ৪৩ লক্ষ মানুষ দুর্গত। কাজিরাঙার প্রাণীরাও অসহায়, কারণ এই জাতীয় উদ্যানের ৯৫% অংশই এখন জলের তলায়।
রাজ্যের ৩৩টা জেলার মধ্যে বন্যার প্রকোপে পড়েছে ৩০টা জেলা। এর মধ্যে সব থেকে খারাপ অবস্থা বরপেটা জেলার। এই জেলায় ৭ লক্ষ ৩৫ হাজার মানুষ দুর্গত। ক্ষয়ক্ষতির নিরিখে এর পরেই রয়েছে গোয়ালপাড়া, মরিগাঁও, নগাঁও এবং হায়লাকান্দি জেলা। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে গুয়াহাটি শহরেও ব্রহ্মপুত্রের জল ঢুকে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সে কারণে ইতিমধ্যেই ব্রহ্মপুত্রের পাড় বরাবর বসবাসকারী মানুষদের নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
বন্যার জল বাড়ছে কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানে। জঙ্গলের ৯৫% অঞ্চল এখন জলার তলায়। গত দু’দিনে ১৭ বন্যপ্রাণীর মৃত্যু হয়েছে বলে বন দফতর। বন্যার জল থেকে বাঁচতে প্রাণীদের নিরাপদ স্থানের উদ্দেশে দৌড়োদৌড়ি করে দেখা গিয়েছে।রাজ্য জুড়ে মোট ১৮৩টি ত্রাণশিবিরে তৈরি করা হয়েছে। সেখানে এখনও পর্যন্ত ৮৩ হাজার মানুষকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। রাজ্যের বাকি অঞ্চলের সঙ্গে ‘আপার অসম’-এর যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। বন্যায় জলের তলায় চলে গিয়েছে ৯০ হাজার হেক্টর চাষের জমি। এর মধ্যে প্রচুর জমিতেই ধান রোয়া হয়ে গিয়েছিল।
রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ১৫টি দল নামানো হয়েছে। সাধারণ মানুষকে সমস্ত রকম সাহায্য করা হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোওয়াল।জানা গিয়েছে, এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সোমবার মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করে অসমের বন্যা পরিস্থিতির ব্যাপারে খোঁজ নেন। কী কী ক্ষতি হয়েছে ও বর্তমানে কী পরিস্থিতি তার বিবরণ প্রধানমন্ত্রীকে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মোদী জানিয়েছেন, কেন্দ্র এই পরিস্থিতিতে সবরকম সাহায্য করবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন, মানুষদের বিপদ থেকে উদ্ধার করতে যা দরকার হয়, সব করতে হবে।
শুল্ক এবং বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরে অতিরিক্ত সচিব কুমার সঞ্জয় কৃষ্ণ জানান, গত বছর বন্যার জন্য কেন্দ্র যে ৫৯০ কোটি টাকার অনুদান দিয়েছিল, সেই অর্থ দিয়েই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যেই বন্যা বিপর্যস্ত জেলাগুলিতে ত্রাণের জন্য প্রায় ৫৬ কোটি টাকা পাঠানো হয়েছে।