মাইগ্রেনের ব্যথায় ভুগছেন? জেনে নিন কী খাবেন, কোন খাবারগুলো এড়িয়ে চলবেন

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

ওয়েব ডেস্ক: মাইগ্রেন’- এই নামটার সাথে আমরা কম-বেশি সবাই পরিচিত। বিশেষ করে আমাদের মধ্যে যাদের মাইগ্রেন (migraine)-এর সমস্যা রয়েছে তারা সহজেই এই ব্যথার তীব্রতা উপলব্ধি করতে পারি। আচ্ছা, খাবার কি মাইগ্রেন-এর উপর কোনো প্রভাব ফেলে? চলুন দেখে নেই মাইগ্রেন রোগীদের খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে। সেই সাথে আসুন এক নজরে এখন দেখে নেয়া যাক মাইগ্রেন কী এবং আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন এনে কিভাবে এর থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি পাওয়া সম্ভব!

এটি একটি নিউরোলোজিকাল (neurological) বা স্নায়ুবিক অবস্থা, যা কিনা বিভিন্ন উপসর্গের জন্ম দেয়। নির্দিষ্টভাবে কী কারণে এই অসুখ হয় তা জানা না গেলেও, ধারণা করা হয় কিছু ফ্যাক্টর (factor) যেমন- উজ্জ্বল আলো, অত্যধিক গরম, ডিহাইড্রেশন (dehydration) বা পানিশূন্যতা, হরমোনাল পরিবর্তন- বিশেষ করে মহিলাদের পিরিয়ড বা গর্ভকালীন সময়ে, স্ট্রেস, উচ্চ শব্দ, নির্দিষ্ট কিছু খাবার, ওষুধের প্রতিক্রিয়া, ধূমপান বা মদ্যপান এর জন্য দায়ী হতে পারে।

খাবারের সাথে মাইগ্রেন-এর সরাসরি কোন সম্পর্ক না থাকলেও, নিচের কিছু খাবার প্রায় সময়ই এই মাইগ্রেন-এর ব্যথাকে বাড়িয়ে দেয় বলে গবেষকদের ধারণা। যেমন-

১) কফি: পানীয়টি আমাদের দেশ তথা গোটা দুনিয়া জুড়ে খুবই জনপ্রিয় একটি পানীয়। এর উপাদান হিসেবে থাকা কাফেইন চা, সোডাসহ অনেক অ্যানার্জি ড্রিঙ্কস-এও পাওয়া যায়। কিন্তু বিপত্তিটা বাধে অতিরিক্ত পরিমান ক্যাফেইন (caffeine)-এর কারণে। ক্যাফেইন-এর সাথে মাথা ব্যথা বা মাইগ্রেন-এর যোগসূত্রটা বেশ জটিল। এটি বিভিন্ন রকমভাবে এই ব্যথার উপর প্রভাব ফেলে।অনেক ক্ষেত্রে ক্যাফেইন-এর সাথে প্যারাসিটামল (paracetamol) খেলে উপকার পাওয়া যায়। তবে সব কিছু বিবেচনা করে মাইগ্রেন রোগীদের খাদ্যাভ্যাস থেকে ক্যাফেইন গ্রহন কমানো বা অতিরিক্ত ক্যাফেইন আছে এমন খাবার গ্রহন বাদ দেওয়াটাকেই সবচেয়ে উত্তম উপায় বলছে বিশেষজ্ঞরা।

২) পুরানো পনির: আমরা অনেকেই পনির খেতে ভালোবাসি। তবে যাদের মাইগ্রেন আছে, তাদের পুরানো পনির (cheese) খেলে সমস্যা হয়। মাইগ্রেন রোগীদের খাদ্যাভ্যাস যদি পুরানো পনিরের সাথে হাত মেলায়, তবে অসুখকে অনেকটা বাড়ায়। তবে সেটা এর মধ্যে থাকা টাইরামিন (tyramine)-এর জন্য দায়ী বলে বিশ্বাস বিজ্ঞানীদের। যা কিনা পনির ছাড়াও ওয়াইন (wine), ইস্ট (yeast)-এর নির্যাসেও বিদ্যমান।

৩) প্রক্রিয়াজাতক্রিত মাংস: পটাশিয়াম নাইট্রাইট (potassium nitrate), সোডিয়াম নাইট্রাইট (sodium nitrate) এই প্রিজারভেটিভ ( preservative)-গুলো প্রক্রিয়াজাতক্রিত মাংসতে থাকে। এ জন্য অনেক সময় এই ধরনের মাংসকে মাইগ্রেন এর জন্য দায়ী করা হয়। সসেজ (sausage) এই ধরনের খাবারের অন্যতম পরিচিত একটি নাম।

৪) মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট: এর আরেকটি নাম হলো টেস্টিং সল্ট (tasting salt)। চাইনিজ (chinese), ইতালিয়ান (italian)-সহ যে কোন রকমের ফাস্টফুড বা মুখরোচক খাবারের স্বাদ বাড়াতে একে যেন আমাদের চাই-ই চাই। কিন্তু এই স্বাদবর্ধক অনেক সময় ব্যথাবর্ধকের কাজটাও করে থাকে আমাদের অজান্তেই।

৫) চকোলেট: গবেষণায় দেখা গেছে অন্তত (২-২২)% মাইগ্রেন রোগী চকোলেট (chocolate)– এর কারণে সংবেদনশীল। যদিও কারো কারো মতে মাইগ্রেন রোগীদের খাদ্যাভ্যাস এর মধ্যে এই মজাদার খাবারটির সাথে ব্যথার কোন সম্পর্ক নেই।

উপরের খাবারগুলো ছাড়াও ডিম, টমেটো, পেঁয়াজ, গমের তৈরি খাবার (যেমনঃ পাস্তা, ম্যাকারনি), টক জাতীয় ফলের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় মাইগ্রেন-এর তীব্রতা বাড়ানোর জন্য। অনিয়মিত খাবার গ্রহন বা না খেয়ে থাকা মাইগ্রেন রোগীদের খাদ্যাভ্যাস হলে এটি একটি বেশ বড় কারণ এই যন্ত্রণা বাড়ার ক্ষেত্রে।

মাইগ্রেন রোগীদের খাদ্যাভ্যাস টিপস
এতো গেলো কী কী এড়িয়ে চলতে হবে। চলুন দেখে নেওয়া যাক কী কী একজন মাইগ্রেন রোগীর খাদ্যাভ্যাস এর অন্তর্ভূক্ত হতে হবে!

১. লাল চাল: লাল চালের ভাত যে শুধু আমাদের শরীরের সুগার (sugar) নিয়ন্ত্রনের জন্যই উপকারী তা নয়, এটি আমাদের এই অসুখের যন্ত্রণাও কমাতে পারে।

২. রঙিন সবজি: যেমন মিষ্টি আলু, গাজর, পালং শাক। এগুলো আপনার ব্যথার তীব্রতা কমানোর পাশাপাশি শরীরের মিনারেলস (minerals)- এর চাহিদাও পূরণ করতে সক্ষম।

৩) শুকনো ফল: মাইগ্রেন রোগীদের খাদ্যাভ্যাস এ শুকনো ফল রাখা ভালো। কিসমিস, খেজুর, চেরি বা ক্র্যানবেরি। তবে আপনি যদি ডায়াবেটিক (diabetic) রোগী হয়ে থাকেন তবে অবশ্যই বুঝে শুনে খেতে হবে। এছাড়াও ম্যাপল সিরাপ, ভ্যানিলা নির্যাস এর মতো কিছু প্রাকৃতিক অ্যাসেন্স দেয়া খাবার থাকতে পারে।

সম্প্রতি আমেরিকার মাইগ্রেন ফাউন্ডেশন কিছু টাটকা মাংস, মুরগি এবং মাছকে “মাইগ্রেন সেফ ফুড” হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest