কলকাতা: ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় ফণীর তাণ্ডবের পর বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলতে চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু ওড়িশার রাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হলেও পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র রাজ্যপালের সঙ্গেই কথা নয় মোদীর। কী কারণে?
তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ ছিল, ফণী-পরবর্তী পরিস্থিতি জানতে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ভেঙে মুখ্যমন্ত্রীর পরিবর্তে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন নরেন্দ্র মোদী। এ নিয়ে প্রকাশ্যে কোনও কথা না বললেও পিএমও সূত্রের দাবি, এ তথ্য একেবারেই সঠিক নয়। বরং গত কালই মমতার সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ফোন করা হয় তাঁকে।নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক পিএমও-র এক আধিকারিক এ দিন জানিয়েছেন, শনিবার ফণী সংক্রান্ত আপডেট জানতে প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে দু’বার ফোন যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। তবে মমতার কাছ থেকে কোনও বারই সাড়া মেলেনি। তাঁর কথায়, “প্রথম বার ফোন করায় মুখ্যমন্ত্রীর অফিস থেকে জানানো হয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্বাচনী প্রচারে গিয়েছেন। তিনি ফিরে এলে প্রধানমন্ত্রীর ফোনের উত্তর দেবেন। তবে তা হয়নি। এর পর আরও এক বার মোদীর সঙ্গে মমতার কথা বলানোর জন্য ফোনকল করা হয়। তবে মুখ্যমন্ত্রীর অফিস থেকে সে ফোনকলেরও উত্তর দেওয়া হয়নি।”
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে অগত্যা প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী’র সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় এবং রাজ্যপালের কাছ থেকে নরেন্দ্র মোদী রাজ্যের সাম্প্রতিক অবস্থার খোঁজখবর নেন। বিতর্কটি শুরু হয় নরেন্দ্র মোদীর টুইটকে কেন্দ্র করে। সেই টুইটে মোদী রাজ্যপালের সঙ্গে তাঁর আলোচনার বিষয়টির উল্লেখ করেন। রাজ্যের ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যের বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ না করে রাজ্যপালের কাছ থেকে খবর নেওয়া ”যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর ওপর আক্রমণ এবং সংবিধান থেকে বিচ্যুতি’ বলে তৃণমূলের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে সমালোচনা করা হয়। রাজ্যপালের সঙ্গে যোগাযোগ করে নরেন্দ্র মোদী ভারতীয় জনতা পার্টির সদস্য হিসেবে আচরণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নয় এই অভিযোগ তুলে তৃণমূল রাজনৈতিক আক্রমণ শানায় মোদী তথা বিজেপি’র বিরুদ্ধে। প্রধানমন্ত্রী কী ভাবে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিকে এড়িয়ে রাজ্যের পরিস্থিতি জানার জন্য রাজ্যপালের সঙ্গে যোগাযোগ করলেন তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তৃণমূলের মহাসচিব তথা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর আরও অভিযোগ, নরেন্দ্র মোদী ওড়িশার উদ্ধার ও ত্রাণ ব্যবস্থার খবর নেওয়ার জন্য সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারলেন অথচ পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে তাঁকে ফোন করতে হল রাজ্যপালকে।
তৃণমূলের পক্ষ থেকে ওঠা অভিযোগকে নস্যাৎ করে দিয়ে দু’বার ফোন করেও না পাওয়ার তথ্যটি আজ জানানো হয় প্রধানমন্ত্রীর দফতরের পক্ষ থেকে।