রুমা গুহঠাকুরতার জীবনাবসান (১৯৩৪-২০১৯)

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

#কলকাতা: চলে গেলেন রুমা গুহঠাকুরতা। সোমবার ভোররাতে মৃত্যু হয় প্রবীণা এই শিল্পীর। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর।

এককালের শক্তিময়ী অভিনেত্রী ও সংগীতশিল্পী রুমা দেবী দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থতায় ভুগছিলেন। ছেলে অমিত কুমারের সঙ্গে মুম্বইতেই থাকতেন। তবে কিছু দিন হল কলকাতায় এসেছিলেন তিনি। কলকাতায় তাঁর বাড়িতেই এ দিন প্রয়াত হন তিনি। মায়ের মৃত্যুসংবাদ পেয়ে অমিত কুমার মুম্বই থেকে বিকেলের মধ্যেই কলকাতায় আসছেন। রুমা দেবীর অপর পুত্র অয়ন ও কন্যা শ্রমণা মায়ের পাশেই রয়েছেন। পারিবারিক সূত্রের খবর, নানা রকম বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন প্রবীণা এই শিল্পী। সেই অসুখে ভুগেই প্রয়াত হয়েছেন তিনি। জানা গিয়েছে, আজই শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে শিল্পীর। কেওড়াতলা মহাশ্মশানে তাঁর অন্ত্যোষ্টি হওয়ার কথা৷

কিশোর কুমারের প্রথম স্ত্রী রুমা। তাঁদের সন্তান অমিত। ১৯৩৪ সালে কলকাতায় জন্ম হয় রুমার। বাবা সত্যেন ঘোষ এবং মা সতী ঘোষ সংস্কৃতি জগতের মানুষ ছিলেন। ১৯৫২ সালে কিশোর কুমারের সঙ্গে বিয়ে হয় রুমার। ১৯৫৮ সালে বিচ্ছেদ হয়ে যায় তাঁদের। কিশোরের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর রুমার সঙ্গে বিয়ে হয় অরূপ গুহ ঠাকুরতার। ১৯৬০ সালে অরূপ বাবুকে বিয়ে করেন রুমা। গায়িকা শ্রমণা চক্রবর্তী, অয়ন গুহ ঠাকুরতা রুমা এবং অরূপবাবুর সন্তান।

দেবব্রত বিশ্বাসের ছাত্রী রুমা সুগায়িকা ছিলেন। গান গেয়েছেন, ‘অমৃত কুম্ভের সন্ধানে’, ‘বাঘিনী’, ‘পলাতক’-সহ আরও বেশ কিছু বিখ্যাত ছবিতে। অভিনেত্রী হিসাবেও অত্যন্ত দক্ষ ছিলেন রুমা। সত্যজিৎ রায় থেকে তপন সিংহ, তরুণ মজুমদার থেকে রাজেন তরফদার প্রত্যেকের ছবিতে অভিনয়ের জন্য প্রশংসিত হয়েছেন রুমা।

‘গঙ্গা’, ‘শাখাপ্রশাখা’, ‘আরোগ্য নিকেতন’, ‘আশিতে আসিও না’, ‘অভিযান’, ‘পলাতক’, ‘বাঘিনী’, ‘নির্জন সৈকতে’, ‘বালিকা বধূ’, ‘পার্সোন্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট’, ‘দাদার কীর্তি’, ‘হংসমিথুন’, ‘ত্রয়ী’, ‘৩৬ চৌরঙ্গী লেন’-সহ বহু বাংলা ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন রুমা। ‘জোয়ার ভাটা’, ‘মশাল’, ‘আফসর’, ‘রাগ রং’-এর মতো হিন্দি ছবিতেও অভিনয় করেছেন তিনি। ‘অভিযান’ ছবিতে যেমন অত্যন্ত সিরিয়াস একটি চরিত্রে তাঁকে দেখা গিয়েছে, তেমন আবার ‘আশিতে আসিও না’ কিংবা ‘পলাতক’-এ একেবারে ভ‌িন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন রুমা। ‘বিস্তীর্ণ দু’ পারে অসংখ্য মানুষের’ কিংবা ‘ভারতবর্ষ সূর্যের এক নাম’ গানগুলি শুনলেও ক্যালকাটা ইয়ুথ কয়্যারে রুমার সংগীত পরিচালনার কথাও মনে পড়ে বাঙালির। ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ‘আশিতে আসিও না’ ছবিতে ‘তুমি আকাশ এখন যদি হতে’ গানটির দৃশ্যায়নে রুমার অভিনয় আজীবন মনে রাখবেন দর্শকরা। রুমাদেবীর মৃত্যুর খবর পেয়েই বালিগঞ্জ প্লেসে তাঁর বাড়িতে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তিনি বলেন, “আমি এর আগেও এই বাড়িতে এসে ওনার সঙ্গে গল্প করেছি৷ খুবই খারাপ লাগছে৷ আমরা ওনার পরিবারকে প্রস্তাব দিয়েছিলাম রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্য করার জন্য, সেটা তাঁরা মেনে নিয়েছেন৷”

রুমা গুহ ঠাকুরতার মৃত্যুতে ফেসবুকে শোকবার্তা জানিয়েছেন সিপিএমের শ্রমিক নেতা শ্যামল চক্রবর্তী৷ তিনি লিখেছেন, “বামপন্থী সাংস্কৃতিক আন্দোলনে রুমাদির অবদান আমরা কোনওদিন ভুলতে পারব না৷ তাঁর শেষযাত্রায় সকলকে যোগ দিতে অনুরোধ করছি৷ বিকেল ছ’টায় রুমাদির বাড়ি৷”

রুমার প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন সংস্কৃতি জগতের বিশিষ্ট জনরা।

 

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest