#নয়াদিল্লি: প্রাক্তন আইপিএস সঞ্জীব ভাটকে বৃহস্পতিবার যাবজ্জীবন কারাদন্ডের সাজা শোনালো জামনগর সেশন কোর্ট। ১৯৮৯ সালে পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর এক ঘটনায় তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে এই সাজা শোনায় আদালত। এই মামলায় বাকী ৬ আসামীর সাজা এখনও ঘোষিত হয়নি।
১৯৯০ সালে জামনগরের অ্যাডিশনাল এসপি থাকাকালীন তাঁর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তোলা হয়েছিলো। ওই সময় এক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার ঘটনায় তিনি প্রায় ১৫০ জনকে গ্রেপ্তার করেছিলেন। যাদের মধ্যে প্রভুদাস বৈশ্নানি নামের এক ব্যক্তি পুলিশি হেফাজত থেকে ছাড়া পাবার পরেই কিডনি জনিত অসুখের কারণে হাসপাতালে মারা যান। এই ঘটনার পর প্রভুদাসের ভাই সঞ্জীব ভাট এবং অন্য ছয় পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে এফ আই আর দায়ের করেন। তাঁর অভিযোগে বলা হয়েছিলো থানায় থাকাকালীন আটকদের ওপর পুলিশ অত্যাচার চালিয়েছিল।
সেই মামলা চলাকালীন ২০১১ সালে কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগে সঞ্জীব ভট্টকে সাসপেন্ড করা হয়। ২০১৫-র অগস্ট মাসে সরকারি গাড়ি অপব্যবহারের অভিযোগে বরখাস্তও করা হয় তাঁকে।
বরাবরই নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহের কট্টর সমালোচক সঞ্জীব ভট্ট। বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ এবং আরও দু’জনের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে পর্যন্ত গিয়েছিলেন তিনি। তাঁদের বিরুদ্ধে ২০০২ সালের গুজরাত দাঙ্গার তদন্ত বিপথে চালিত করার অভিযোগ তুলেছিলেন। এমনকি গুজরাতের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দাঙ্গায় যুক্ত ছিলেন বলেও অভিযোগ করেন ভট্ট। যদিও শীর্ষ আদালত নিযুক্ত বিশেষ তদন্তকারী দল সিট সেই অভিযোগ খারিজ করে দেয়। ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তিনি গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপি বিধায়ক মায়া কোদনানীকে উদ্দেশ্য করে এক খোলা চিঠি লিখেছিলেন। যে চিঠিতে তিনি গুজরাট দাঙ্গায় নরেন্দ্র মোদী এবং মায়া কোদনানীর ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেছিলেন। তাঁর ওই চিঠি সেই সময় রাজনৈতিক মহলে তুমুল বিতর্ক সৃষ্টি করেছিল।
প্রসঙ্গত, গত ফেব্রুয়ারিতে সুপ্রিম কোর্টে এক আবেদনে তাঁর পরিবারের জন্য নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছিলেন প্রাক্তন আইপিএস সঞ্জীব ভাট। যদিও গত ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি এ কে সিক্রি এবং বিচারপতি এস আব্দুল নাজিরের বেঞ্চ সেই আবেদন খারিজ করে দেয় এবং তাঁকে গুজরাট হাইকোর্টে এই আবেদন জানাতে বলে।
১৯৮৮ ব্যাচের আইপিএস অফিসার সঞ্জীব ভট্ট এই মুহূর্তে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন। দু’দশকেরও বেশি পুরনো একটি মাদক মামলায় গতবছর তাঁকে গ্রেফতার করে সিবিআই। বনসকাঁথার ডিএসপি থাকাকালীন সুমেরসিংহ রাজপুরোহিত নামের এক আইনজীবীকে মাদক রাখার অভিযোগে গ্রেফতার করেন তিনি। কিন্তু ভুয়ো অভিযোগে রাজপুরোহিতকে ফাঁসানো হয়েছিল বলে পরবর্তীকালে তদন্তে উঠে আসে।