কলকাতা: রাজ্যের জন্য বিশেষ পর্যবেক্ষক নিয়োগ করল নির্বাচন কমিশন৷ দ্বিতীয় দফার নির্বাচনের দিন বিশেষ পর্যবেক্ষক অজয় নায়েক রাজ্যে আসছেন৷ নির্বাচন কমিশনের সূত্রে খবর, দ্বিতীয় দফা থেকেই সম্পূর্ণ নির্বাচন প্রক্রিয়া দেখবেন তিনি৷ ১৮ই এপ্রিল তিনি রাজ্যে এসে বাকি দফার নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন৷ তার তত্ত্বাবধানেই পুলিশ প্রশাসনকে কাজ করতে হবে বলে জানা গিয়েছে৷
কমিশনের এই পদক্ষেপকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন বাংলার রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। তাঁদের মতে, এর অর্থ পরিষ্কার, বাংলায় অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট করানোর জন্য ত্রুটি রাখতে চাইছে না কমিশন। অতীতে একই ভাবে একবার অবসরপ্রাপ্ত নির্বাচন কমিশনার কে জে রাওকে বিশেষ পর্যবেক্ষক হিসাবে নিয়োগ করেছিল কমিশন। পরে দুঁদে আমলা আফজল আমানুল্লাহকে একই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তখন ছিল বাম জমানা। ভোটে সন্ত্রাস ও রিগিংয়ের অভিযোগ তুলে তখন কমিশনের কাছে সুবিচার চেয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এতোদিনে বৃত্ত বোধ হয় সম্পূর্ণ। তৃণমূল জমানায় অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট করাতে বিশেষ পর্যবেক্ষক নিয়োগ করতে হচ্ছে কমিশনকে। অর্থাৎ পরিবর্তনের পরেও ট্রাডিশন বদলায়নি বাংলায়।
প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গে প্রথম দফার ভোট গ্রহণের আগে বিশেষ কেন্দ্রীয় পুলিশ পর্যবেক্ষক নিয়োগ করে দিয়েছিল নির্বাচন সদন। প্রথমে বিএসএফের প্রাক্তন ডিজি কে কে শর্মাকে নিয়োগ করা হলেও পরে তৃণমূলের আপত্তিতে তাঁকে সরিয়ে প্রাক্তন আইপিএস কর্তাকে বিবেক দুবেকে সে পদে বসানো হয়েছে। কমিশনের এ দিনের ঘোষণায় পরিষ্কার দ্বিতীয় দফার ভোট পুরো নজর থাকবে নতুন পর্যবেক্ষকের।
এখন প্রশ্ন হল, কেন বিশেষ পর্যবেক্ষক নিয়োগ করতে হল নির্বাচন কমিশনকে?
জাতীয় নির্বাচন কমিশনের তরফে এর সুনির্দিষ্ট কোনও ব্যাখ্যা এ দিন দেওয়া হয়নি। তবে কমিশন সূত্রে বলা হচ্ছে, লোকসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার দিনই মুখ্য নির্বাচন কমিশনার বিশেষ পর্যবেক্ষক নিয়োগের কার্যকারণ ব্যাখ্যা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “কোনও রাজ্যে ভোট গ্রহণের সময় স্পর্শকাতরতা অনুভব করলে তথা প্রয়োজন পড়লে বিশেষ পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হবে। কমিশন এখনই ঠিক করে রাখেনি কোথায় কোথায় বিশেষ পর্যবেক্ষক নিয়োগ করবে। পরিস্থিতি অনুযায়ী সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” এর মানে স্পষ্ট। বাংলায় বিশেষ পর্যবেক্ষক নিয়োগ করার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।