১৪ ফেব্রুয়ারি। বিশ্বব্যাপী প্রেমের দিবস। সেই দিনই রোপিত হয়েছিল হিংসার এক চূড়ান্ত বিষাক্ত বীজ।

Pulwama Attack: পুলওয়ামা দিবস, ভালবাসা থেকে হিংসাতে রূপান্তর

১৪ ফেব্রুয়ারি। বিশ্বব্যাপী প্রেমের দিবস। সেই দিনই রোপিত হয়েছিল হিংসার এক চূড়ান্ত বিষাক্ত বীজ। সাল ২০১৯। জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলার লেথোপোড়ায় ভারতীয় সেনা কনভয়ের ওপর অতর্কিত পাকিস্তানী জঙ্গিগোষ্ঠী জইশ-ই-মহম্মদের আক্রমণ(pulwama attack black day)। তার জেরে ঘটনাস্থলেই শহীদ হন ৪০ জন সিআরপিএফ জওয়ান।

দিনটা কিন্তু শুরু হয়েছিল স্বাভাবিক ছন্দেই। প্রেমদিবস বলে কথা! সারা দেশ তখন প্রেমের জোয়ারে মাতোয়ারা। জওয়ানরাই বা বাদ যাবেন কেন? উলুবেড়িয়া’র বাবলু সাঁতরা-ই যেমন। ১৩ ফেব্রুয়ারি মাকে ফোন করেছিলেন(pulwama attack date)। কথা বলতে চান নিজের মেয়ের সঙ্গে। তাঁর ছুটি মঞ্জুর হয়ে গিয়েছে। খুব শিগগিরই বাড়ি আসছেন।

বেলা ৩টে নাগাদ পুলওয়ামায় কনভয়ের দিকে ছুটে আসে একটি জিপ। কেউ ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেননি কী ছিল এই জিপে? ছিল আইইডি বিস্ফোরক। জিপটি সজোরে ধাক্কা মারে কনভয়ের একটি বাসে। নিমেষে তীব্র বিস্ফোরণ। এই বিস্ফোরণ হতেই দেখতে না দেখতেই কনভয় লক্ষ্য করে ধেয়ে আসতে থাকতে এলোপাথাড়ি গুলি।

কিচ্ছু করার ছিল না! এই অতর্কিত হামলায় মুহূর্তে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ভারত মায়ের ৪০ সিআরপিএফ সন্তান। তবে ভারতীয় সেনাও চুপ থাকেনি। সম্মিলিত আক্রমণে জঙ্গিদের সকলকেই খতম করে দেয় তারা।পুলওয়াম নিয়ে রাজনৈতিক তরজাও কম হয়নি(pulwama attack quotes)। পুলওয়ামা হামলা নিয়ে ছবিও হয়েছে(pulwama attack movie)। পুলওয়ামা হামলা নিয়ে ব্যাপক উত্তেজনা চরিয়েকগিলেন সাংবাদিক অর্ণব গোস্বামী(arnab goswami chat pulwama attack)। এমনকি পুলবামা হামলার আগে লিক হয় হোয়াটসআপ(pulwama attack whatsapp status) অডিয়েট শোনা গিয়েছিল যে অর্ণব কিভাবে এই হামলাকে কাজে লাগানোর কথা বলছেন।

১৪ ফেব্রুয়ারি সারা দেশের সঙ্গে উলুবেড়িয়াতে পালন করা হবে পুলওয়ামা দিবস। হাওড়ার চেঙ্গাইলের শহিদ বাবলু সাঁতরার বাড়ির কাছে তাঁর মূর্তিতে মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোও হয়েছে। ছেলে নেই, তিনি জানেন। কিন্তু তিন বছর পার হয়ে গেলেও ওই দিনে সকালবেলায় বাড়ির বাইরে কারো পায়ের আওয়াজ শুনতে পেলেই অজান্তেই মনের মধ্যে একটা আশার আলো জ্বলে উঠে বৃদ্ধ মায়ের চোখে।

২০১৯ সালের ১৩ফেব্রুয়ারি সকালে শেষবারের মতো মাকে ফোন করেছিলেন বাবলু সাঁতরা। সকালে ডিউটিতে যাওয়ার আগে মেয়ের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন। মাকে জানিয়েছিলেন, ছুটি মঞ্জুর হয়ে গেছে, ডিউটি করে ফিরে বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি শুরু নেবেন। কিন্তু বিকেলে ফোনে আসতে, সেই দুঃসংবাদ।

পুরসভার পক্ষ থেকে খবর, বাংলার এই শহিদের জন্য চেঙ্গাইলে তাঁর বাড়ির কাছে রাস্তার ধারে একটি মূর্তি বসানো হয়েছে। রাস্তার নামকরণ করা হয়েছে বাবলু সাঁতরা সরণী বলে। তাই সারা দেশ যখন পুলওয়ামা-কাণ্ডের শহিদের স্মৃতিতে পুলওয়ামা দিবস পালন করছে। তখন চেঙ্গাইল মনে করছে তার ভূমিপুত্রকে।