নিউজ কর্নার ওয়েব ডেস্ক: ফেস অ্যাপ -এর জনপ্রিয়তা এখন তুঙ্গে বিশ্বজুড়ে। অ্যাপ ব্যবহার করে নিজেদের বয়স্ক রূপ যাচাই করতে ব্যস্ত সেলেব্রেটি থেকে আমজনতা। কিন্তু এই অ্যাপের মাধ্যমেই আপনার ব্যক্তিগত তথ্য বিকিয়ে দিচ্ছেন না তো? প্রশ্ন সাইবার বিশেষজ্ঞদের। অনেকেই বলছেন, নির্মল আনন্দের ‘ফাঁদে’ ওই অ্যাপ প্রস্তুতকারী সংস্থার কাছে ব্যবহারকারীর ছবি ও তথ্য চলে যাচ্ছে। রাশিয়ার একটি সংস্থার তৈরি ওই অ্যাপ তথ্য নিয়ে কী করতে পারে, তা নিয়েও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকে।
২০১৭-তে প্রথম প্রকাশ্যে আসা FaceApp শুরু থেকেই বেশ জনপ্রিয়। সাইবার বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, এই অ্যাপ ব্যবহারের আগে অনেকেই শর্তাবলী খুঁটিয়ে পড়েন না। তার ফলে অজান্তেই সেই সব শর্তাবলী মেনে নেন। শর্ত অনুযায়ী, ওই অ্যাপ বিনামূল্যে ব্যবহারের বিনিময়ে ব্যবহারকারী সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে তাঁর ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহারের অনুমতি দিচ্ছেন। শুধু তা-ই নয়, ফেসবুকে তাঁর বন্ধুদের তথ্যও তুলে দিচ্ছেন সংস্থার সার্ভারে। ওই অ্যাপে তিনি যত ছবি ব্যবহার করছেন, সেগুলিও সংস্থার কাছে চলে যাচ্ছে। বস্তুত, ২০১৭ সালে এক বার এই অ্যাপ নিয়ে শোরগোল শুরু হয়েছিল। ফের নতুন ভাবে অ্যাপটি জনপ্রিয় হওয়ায় আবার বিতর্ক মাথাচাড়া দিয়েছে।
সম্প্রতি সেলিব্রেটিরা এই অ্যাপ ব্যবহার করা শুরু করায় এই জনপ্রিয়তা তুঙ্গে ওঠে। গুগল প্লে স্টোরে ফোটো এডিটিং অ্যাপ-এর সেকশানে প্রথম স্থানে এই অ্যাপ। কিন্তু এই অ্যাপের শর্তাবলীকে গ্রাহ্য করার মাধ্যমেই ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য চলে যাচ্ছে অ্যাপ প্রস্তুকারীদের হাতে। বুধবার মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই-কে দেওয়া চিঠিতে এই আশঙ্কা প্রকাশ করেন সিনেট সংখ্যালঘু নেতা চাক শুমাখার। তিনি লেখেন, “রুশ অ্যাপটি মার্কিন ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্যাবলী কোথাও ফাঁস করছে কিনা তাই নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। রুশ সরকারকে এই তথ্যাবলী দেওয়া হলেও সেক্ষেত্রে আর কিছুই করার থাকবে না।”
মার্কিন আইনজীবি এলিজাবেথ পটস্ ওয়েইনস্টেইনও এই বিষয়ে টুইট করে তাঁর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। অ্যাপের শর্তাবলীর একটি স্ক্রিনশট পোস্ট করেন তিনি। সেখানে তিনি দেখান, এই অ্যাপ ব্যবহার করার সময়ে ব্যবহারকারীরা তাদের ফোটো, নাম এবং পছন্দাবলীর মতো তথ্য তুলে দিচ্ছেন এই রুশ সংস্থার হাতে।
এ বিষয়ে গুগলের প্রাক্তন মার্কেটিং ম্যানেজার এরিয়েল হোস্টাটও সহমত পোষণ করেছেন। হোস্টাট জানান, এই ধরনের অ্যাপ নিয়ে তিনি বার বার ব্যবহারকারীদের সচেতন করেছেন। তিনি বলেন, “এই তথ্য কোনও ভাবে হ্যাকারদের হাতে গেলে তার ফল হতে পারে মারাত্বক। ব্যক্তিগত তথ্য থেকে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, সব কিছুই অ্যাকসেস করা যাবে এ ভাবে।”
সাইবার বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, শুধু এই একটি অ্যাপ নয়, তথ্য সংগ্রহের ফাঁদ পেতে নেট-দুনিয়ায় আরও হাজার হাজার অ্যাপ রয়েছে। না-জেনে সেই অ্যাপের ফাঁদে নিরন্তর পা দিচ্ছেন ব্যবহারকারীরা।