#মস্কো: রানওয়েতে জরুরি অবতরণের সময় আগুনের গ্রাসে রাশিয়ার এরোফ্লোট উড়ান সংস্থার যাত্রীবিমান। প্রশাসন সূত্রে খবর, এখনও অবধি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৪১ জন। নিহতদের মধ্যে অন্তত ২টি শিশু রয়েছে বলে খবর। দুর্ঘটনায় জখম হয়েছেন অন্তত পক্ষে ছয় জন আরোহী।
রবিবার সন্ধ্যা ছ’টা ৩ মিনিটে মস্কোর শেরেমেটিয়েভো বিমানবন্দর থেকে রাশিয়ার উত্তর পশ্চিমের শহর মুরমানস্ক শহরের উদ্দেশে উড়ে যায় সুখোই সুপারজেট-১০০ বিমানটি। বিমান পরিষেবা সংস্থা এরোফ্লটের উড়ানটিতে যাত্রী ও কেবিন ক্রু মিলিয়ে ছিলে্ন ৭৮ জন। ওড়ার কিছুক্ষণ পরেই জরুরি অবতরণের জন্য বার্তা পাঠান পাইলট। বিমানবন্দর থেকে সবুজ সঙ্কেত পেয়ে রানওয়েতে প্রায় আড়াআড়ি ভাবে জরুরি অবতরণ করে বিমানটি। ওড়ার আট মিনিট পরই রানওয়েতে নামে বিমানটি। কিন্তু ততক্ষণে পিছনের অংশে আগুন ধরে গিয়েছে। যাত্রীদের মধ্যে শুরু হয়েছে তীব্র আতঙ্ক, কান্নাকাটি। রানওয়েতে নামার পরে জলন্ত বিমানের ভিডিয়ো ধরা পড়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে পিছনের প্রায় অর্ধেক অংশই গ্রাস করেছে ভয়াবহ আগুন। সামনের দিকের জরুরি অবস্থায় নামার দরজা দিয়ে পিছলে নীচে নেমে আসছেন যাত্রীরা। তাঁদের অনেকেরই কোলে বা সঙ্গে শিশুও ছিল।
Ад в Шереметьево: Sukhoi Superjet 100, вылетевший из Москвы в Мурманск, вернулся из-за пожара на борту. Горит как факел, а в это время из передних дверей полным ходом идет эвакуация pic.twitter.com/oRWI6npPCu
— Дмитрий Смирнов (@dimsmirnov175) May 5, 2019
জরুরি অবতরণের খবর পেয়ে বিমানবন্দরে দমকল এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী প্রস্তুতই ছিল। রানওয়ে ছোঁয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয় আগুন নেভানোর কাজ। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। ভিতরে দগ্ধ এবং দমবন্ধ হয়ে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। ৪১ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে রাশিয়ার তদন্তকারী সংস্থা। আহতদের প্রথমে বিমানবন্দরে প্রাথমিক চিকিৎসার পর হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঘটনার পরেই একটি ভিডিও ফুটেজ ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। দেখা যাচ্ছে, বিমানটি রানওয়ে ছুঁয়ে ফেলার পরেও তাতে দাউদাউ করে জ্বলছে আগুন। কালো ধোঁয়ায় ভরে গিয়েছে বিমানবন্দর চত্বর। বিমানের পিছনের প্রায় অর্ধেক অংশ দাউ দাউ করে জ্বলছে। তার মধ্যেই বিমানের জরুরি দরজা দিয়ে স্কিড করে একের পর এক যাত্রী নেমে আসছেন নীচে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, যে ভাবে বিমানটি জ্বলছিল, তাতে এক জনেরও প্রাণ বেঁচে যাওয়াটা একটা ‘আশ্চর্য’ ঘটনা। ৭৮ জন-সমেত জীবন্ত ঝলসে যেতে পারতেন বিমানে।
সূত্রের খবর, সেরেমেতেভো বিমানবন্দর থকেে উড়ে, উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় মারমানস্কের দিকে যাওয়ার কথা ছিল বিমানটির। কিন্তু ওড়ার কিছু পরেই বিমানটির ক্রু থেকে বিপদ সংকেত আসে। সঙ্গে সঙ্গে ওই বিমামনবন্দরেই বিমানটি জরুরি অবতরণের চেষ্টা করলেও প্রথম দফায় সফল হয়নি। সেটা হলে হয়তো এত বড় বিপদ এড়ানো যাতে পারত।দ্বিতীয় বারের চেষ্টায় সেটি অবতরণ করা মাত্র, কয়েক গুণ তীব্রতায় জ্বলে ওঠে আগুন। ঘটনার পরে ওই বিমানবন্দরে বেশ কিছু ক্ষণ বন্ধ থাকে বিমান ওঠা-নামা। কেন এত বড় বিপদ ঘটল, তার অনুসন্ধানে তদন্ত শুরু করেছেন উড়ান কর্তৃপক্ষ। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণেই জরুরি অবতরণের বার্তা পাঠান ওই বিমানের পাইলট।