#কলকাতা: বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্তের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আসার তোড়জোড় চলছে তৃণমূলে। মঙ্গলবার পুরসভার চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তী ওই অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপনের চিঠি পাঠান কাউন্সিলারদের কাছে। ওই চিঠিতে স্বাক্ষর করেন পুরসভার ৩৫ জন কাউন্সিলার।
এ দিন দুপুর ২টো নাগাদ বিধাননগর পুরসভার চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তীর কাছে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করেন তৃণমূল কাউন্সিলররা। তবে চিঠি পেলেও যে ইস্তফা দেওয়ার প্রশ্ন নেই, তিনি যে ভোটাভুটির অপেক্ষাতেই থাকবেন, তা-ও এ দিন স্পষ্ট করে দিলেন সব্যসাচী। তিনি বলেন, “৪০ জন কাউন্সিলারের সই করার কথা। সই করলেন ৩৫ জন। পুর আইন অনুযায়ী অনাস্থা নিয়ে আসা যায়। কিন্তু অনা্স্থা আনতে হলে অ্যাজেন্ডা মেনেই নিয়ে আসতে হবে। তবে অনাস্থা পেশ হোক, দেখুন না কী হয়”!
বিধাননগর পুর নিগমে মোট আসন ৪১। সাড়ে চার বছর আগের পুর নির্বাচনে ৩৭টি আসনে জিতেছিল তৃণমূল। ২টি গিয়েছিল কংগ্রেসের ঝুলিতে, ২টি পেয়েছিল বামেরা। পরে ১ কংগ্রেস ও ১ বাম কাউন্সিলর তৃণমূলে নাম লেখান। ফলে তৃণমূলের আসন বেড়ে হয় ৩৯। ক্ষমতায় থাকার জন্য অবশ্য ২১টি আসন থাকলেই হয়। তৃণমূল ভবনে গত রবিবার যে বৈঠক ফিরহাদ হাকিম ডেকেছিলেন, তাতে ৩৬ জন কাউন্সিলর যোগ দিয়েছিলেন। সেই ৩৬ জনই সব্যসাচীর অপসারণের পক্ষে মত দেন বলে তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছিল। আর মঙ্গলবার যে অনাস্থা প্রস্তাব জমা পড়ল, তাতে সই করলেন ৩৫ জন। কৃষ্ণা চক্রবর্তী যে হেতু পুর নিগমের চেয়ারম্যান, সে হেতু তিনি অনাস্থা প্রস্তাবে সই করতে পারেন না। তাঁর সভাপতিত্বেই অনাস্থার উপরে ভোটাভুটি হবে।
কিন্তু সব্যসাচী এ দিনও আত্মবিশ্বাস দেখাতে চেয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘অনাস্থা যদি আনা হয়, তা হলে তো ভোটাভুটি হবে। আর ভোটাভুটিটা হবে গোপন ব্যালটে। সেটা হোক, তা হলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে, সংখ্যাগরিষ্ঠতা কোন দিকে রয়েছে।’’ যদি অনাস্থায় তিনি হেরে যান, তা হলে বিরোধী দলের কাউন্সিলর হিসেবেই কাজ করবেন— মঙ্গলবার প্রথমে এই রকম মন্তব্যই করেছিলেন সব্যসাচী। পরে অবশ্য সে মন্তব্য তিনি সংশোধন করে নেন। বলেন অনাস্থায় হেরে গেলে সাধারণ কাউন্সিলর হিসেবে কাজ করবেন।
মঙ্গলবারও মেয়রের চেয়ারে বসেই সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হন সব্যসাচী দত্ত। অনাস্থা প্রস্তাব আসা মানেই যে হেরে গিয়েছেন, তা মনে করার কোনও কারণ নেই— এ কথাও মনে করিয়ে দেন তিনি।