শ্রীনগর: সকাল থেকে নির্বিঘ্নেই ভোট চলেছিল উপত্যকায়। সংঘর্ষ বা গোলমালের কোনও খবর মেলেনি। নির্বাচনের প্রথম দিন বেশ উৎসবের মেজাজই ছিল উপত্যকায়। কিন্তু ভোট শেষের পরই চেনা ছবিটা বদলে গেল। জনতা-পুলিশ সংঘর্ষে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল উত্তর কাশ্মীরের হান্দোয়ারা। অভিযোগ উঠল, নিরাপত্তা বাহিনীদের ছোড়া গুলিতে প্রাণ গিয়েছে এক ছাত্রের।
পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেলের পর থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওটে কুপওয়ারা জেলার হান্দোয়ারা। পুলিশ ও নিরাপত্তারক্ষীদের লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে শুরু করে উত্তেজিত জনতা। কয়েকজন পুলিশ কর্মী পাথরের ঘায়ে আহতও হযেছেন। উত্তেজনা থামাতে গুলি চালায় নিরাপত্তারক্ষীরা।
স্থানীয় সূত্রে দাবি, সাধারণ মানুষকে লক্ষ্য করেই নাকি গুলি চালাচ্ছিল নিরাপত্তারক্ষীরা। সংঘর্ষের মাঝে পড়ে গুলি লেগে গুরুতর জখম হয় ওয়েইস আহমেদ নামে সপ্তম শ্রেণির এক পড়ুয়া। ওয়েইস মান্দিগ্রামের বাসিন্দা। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় তার। মুস্তাক আহমেদ নামে আরও এক ব্যক্তির আহত হওয়ার খবর মিলেছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। ২০১৭ সালে এই হান্দোয়ারাই ছাত্র-পুলিশ সংঘর্ষে ভয়াবহ চেহারা নিয়েছিল। প্রশাসনের দাবি, উপত্যকার বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলি নির্বাচনকে প্রভাবিত করার জন্য ফের অশান্তি তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে। মদত দিচ্ছে ছাত্রছাত্রীদেরও।
অথচ সকালের ছবি ছিল পুরোপুরি অন্য। ভোট ঘিরে উত্তরপ্রদেশের কৈরানা, মহারাষ্ট্রের গড়চিরৌলি, ছত্তীসগঢ়ের বস্তার, নারায়ণপুর-সহ দেশের বিভিন্ন অংশে যখন বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ, গুলি, বিস্ফোরণের খবর সামনে আসছে, কাশ্মীরে তখন বুথের বাইরে ভোটারকে নাচানাচির ছবি সামনে এসেছিল সোশ্যাল মাধ্যমে।
সেখানে দেখা যাচ্ছে বারামুলা লোকসভা কেন্দ্রের বান্দিপোরায় একটি বুথের বাইরে লম্বা লাইন। তার পাশেই মাঝবয়সী এক ব্যক্তি ভোট দিতে এসে আনন্দে নাচছেন। আর তাঁকে উৎসাহ দিচ্ছেন লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা অন্যান্যরা। পাশের ভোটের লাইন থেকেই কেউ এই দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করেছেন। ৪০ সেকেন্ডের এই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ পেতেই ছড়িয়ে পড়িয়েছে। ভিডিও দেখে নেটিজেনরা প্রশংসায় পঞ্চমুখ। কেউ কেউ কমেন্ট করেছেন, কাশ্মীর যেন সব দিন এমনই খুশিতে থাকে। কেউ লিখেছেন, সুন্দর… দেশের সব থেকে বড় উৎসব উদ্যাপন শুরু হয়েছে।