নয়াদিল্লি: বন্দী হওয়ার পর ৩ দিনের মধ্যে অবশেষে দেশে ফিরছেন উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান ৷প্রথমে পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলা। তারপর ভারতের এয়ার স্ট্রাইক এবং পাকিস্তানের পাল্টা। সব মিলিয়ে ৫০ বছর বাদে সম্মুখ সমরে দুই দেশের বায়ু সেনা। এই আবহে ভারতীয় বায়ু সেনার উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানকে মুক্তি দিচ্ছে পাকিস্তান। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই ভারতের পথে রওনা দিয়েছেন উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। পাকিস্তানের ইসলামাবাদ থেকে তাঁকে নিয়ে আসা হচ্ছে লাহৌরে। সড়কপথে নিয়ে আসা হচ্ছে তাঁকে। বিকেল নাগাদ ওয়াঘা-আতারি সীমান্তে পৌঁছাবেন তিনি ।পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র জানালেন, তিনটে থেকে চারটের মধ্যেই মুক্তি পেয়ে যাবেন অভিনন্দন। ইতিমধ্যেই ভারতের সীমান্ত এলাকায় অভিনন্দনকে বরণ করতে উৎসব শুরু হয়ে গিয়েছে। সাধারণ মানুষরাই যোগ দিয়েছেন এই আনন্দ উদযাপনে।
ইতিমধ্যেই ছেলেকে নিতে অমৃতসরে পৌঁছে গিয়েছেন তাঁর বাবা এয়ার মার্শাল এস বর্তমান ও মা শোভা বর্তমান।বৃহস্পতিবার মাঝরাতেই দিল্লি পৌঁছন তাঁরা। অভিনন্দনের বাবা, প্রাক্তন এয়ার মার্শাল এস বর্তমান এবং অভিনন্দনের মা, চিকিৎসক শোভা বর্তমানকে এর পরেই নিয়ে যাওয়া হয় অমৃতসর। বিমান ভর্তি মানুষ উঠে দাঁড়িয়ে প্রবল করতালিতে স্বাগত জানিয়েছেন তাঁদের।
WATCH VIDEO: Parents of IAF pilot Wing Commander #AbhinandanVarthaman get standing ovation inflight pic.twitter.com/fV1n4ZCcoh
— The Indian Express (@IndianExpress) March 1, 2019
অন্যদিকে , পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংহও ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে টুইট করে জানিয়েছেন অমৃতসরের আতারি সীমান্তে অভিনন্দনকে গ্রহণ করতে তিনি নিজে উপস্থিত থাকবেন। টুইটে তিনি লেখেন, “অমৃতসরে আছি। জানতে পেরেছি যে, পাক সরকার অভিনন্দনকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ওয়াঘা সীমান্তে তাঁকে আনা হবে। সীমান্ত থেকে তাঁকে গ্রহণ করা আমার কাছে একটা বড় সম্মানের বিষয়।”
বুধবার অভিনন্দন বর্তমানকে হেফাজতে নেয় পাক সেনা। ওইদিন সকালে ভারতের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে পাক যুদ্ধবিমান। আকাশপথে পাক হামলা বানচাল করতে আকাশে উড়ে যায় ভারতীয় বায়ুসেনার ২টি মিগ-২১ বিমান। একটি মিগ-২১ বিমানকে সে দেশে নামায় পাকিস্তান। এরপরই পাক সেনার মুখপাত্র দাবি করেন, অভিনন্দন নামে এক ভারতীয় পাইলটকে তাদের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এরপরই অভিনন্দনকে ফেরাতে তৎপর হয়ে ওঠে নয়া দিল্লি। ‘‘কোনওরকম দর কষাকষি নয়, অবিলম্বে অক্ষত অবস্থায় অভিনন্দনকে ফেরানো হোক’’, এই দাবিই পাকিস্তানকে করে ভারত। বৃহস্পতিবারই পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান জানিয়েছিলেন, শান্তির বার্তা দিতেই তাঁরা উইং কম্যান্ডারকে মুক্তি দিচ্ছেন।ভারতীয় পাইলটকে মুক্তির ব্যাপারে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান, তাতে সন্তোষ প্রকাশ করেছে আমেরিকা।
রাজনৈতিক মহলের মতে,আন্তর্জাতিক চাপের কাছে নতিস্বীকার করেই এমন সিদ্ধান্ত নেয় ইসলামাবাদ। পাক সরকারের উপর চাপ তৈরি করেছিল আমেরিকা এবং সৌদি আরব। এই অধ্যায়ের শুরু থেকেই ভারতের লক্ষ্য ছিল আন্তর্জাতিক স্তরে পাকিস্তানকে চাপে ফেলা। দিল্লি সেই কাজটাই করেছে। তারই ফলশ্রুতিতে পাকিস্তানের উপর চাপ দিয়েছে আমেরিকা এবং সৌদি আরব।