নয়াদিল্লি: শারীরিক অত্যাচার হয়নি ঠিকই। কিন্তু পাকিস্তানে ৬০ ঘণ্টার বন্দি জীবনে তাঁকে প্রচণ্ড মানসিক অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে বলে দেশে ফিরে জানিয়েছেন উইং কম্যান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। সরকারি সূত্রকে উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা এএনআই শনিবার সন্ধ্যায় এই চাঞ্চল্যকর খবর সামনে এনেছে।দেশে পা রেখে সেই কথা বায়ুসেনার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন অভিনন্দন।
দিল্লিতে বায়ুসেনার হাসপাতালে এই মুহূর্তে রাখা হয়েছে অভিনন্দন-কে। সেখানেই আপাতত তাঁর ‘কুলিং ডাউন’ প্রক্রিয়া চলছে। ‘কুলিং ডাউন’ প্রক্রিয়া হল শত্রু শিবিরে বন্দি থাকা সৈনিকের যাবতীয় উৎকন্ঠাকে স্বাভাবিকস্তরে নামিয়ে আনার একটি পদ্ধতি। এর সঙ্গে রক্ত-চাপের ওঠা-নামা থেকে শুরু করে নানা ধরনের শারীরিক প্যারামিটারের স্বাভাবিকতা ও অস্বাভাবিকতা-কে নজরে রাখা হয়। চিকিৎসকরা যখন মন করবেন এই সৈনিক মানসিক ও শারীরিকভাবে একদম ফিট তখন ‘কুলিং ডাউন’ প্রক্রিয়া শেষ হয়। অভিনন্দনে-র শারীরিক ও মানসিক অবস্থা কেমন তা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি। তবে, যেটুকু তথ্য মিলিছে তাতে দাবি করা হচ্ছে পাকিস্তানে অভিনন্দনকে হেফাজতে রাখার সময় প্রবলভাবে মানসিক অত্যাচার করা হয়। নানাভাবে তাঁকে হয়রান করার চেষ্টা চলে। কিন্তু, বায়ুসেনার কঠোর অনুশাসনে শিক্ষিত এবং ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমির প্রাক্তন ছাত্রকে কাবু করতে পারেনি পাকিস্তান। তবে, এই মানসিক অত্যাচার অভিনন্দনের মতো একজন সিনিয়র অফিসারকেও যে খানিকটা ধাক্কা দিয়েছে তাতে সন্দেহ নেই। শুক্রবার রাতেই নাকি পাকিস্তানিদের হেফাজতে থাকার অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বায়ুসেনার উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের এই মানসিক অত্যাচারের কথা উল্লেখ করেছিলেন অভিনন্দন। পাক সেনা কর্তৃক প্রকাশিত ভিডিয়োতে অবশ্য অভিনন্দন জানিয়েছিলেন, তাঁর সঙ্গে ভাল ব্যবহার করেছিলেন পাক সেনাকর্তারা। কিন্তু কোন পরিস্থিতিতে অভিনন্দন ওই বিবৃতি দিয়েছিলেন, তা নিয়ে সন্দিহান ছিলেন অনেকেই।
শনিবার দিল্লিতে হাসপাতালে অভিনন্দনের সঙ্গ দেখা করতে আসেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তিনি অনেকটা সময় অভিনন্দনের সঙ্গে কাটান। তিনি অভিনন্দনকে জানান, তাঁর জন্য গোটা দেশ গর্ব অনুভব করছে। তাঁর সাহস ও কাজের প্রতি সততা এবং নিষ্ঠার কথা এখন প্রতিটি দেশবাসীর হৃদয়ে। তাঁর সঙ্গেই ছিলেন বাহিনীর শীর্ষ আধিকারিরকাও। এরমধ্যে সেখানে উপস্থিত হন অভিনন্দনের স্ত্রী ও ছেলে। তাঁদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী।