চিত্রগ্রাহক সের্গেই গর্শকভকে নিয়ে গোটা বিশ্বে তুমুল হৈচৈ হচ্ছে। সকলের মুখে একটাই শব্দ, ‘এই আন্তরিক ছবি নাড়া দিয়েছে অন্তর’! বাঘিনী আলিঙ্গন করে আছে গাছকে। সেই অসাধারণ, মায়াময় ছবিটি ধারণ করেছেন সের্গেই।
পৃথিবীর অন্যতম বিরল কোনো প্রাণীর ছবি তোলা মুখের কথা নয়। এমন ছবি তুলতে গেলে দক্ষতা তো বটেই, পাশাপাশি ভাগ্যের সহায়তাও খুব প্রয়োজন। সাইবেরিয়ার বাসিন্দা সের্গেই গর্শকভ নিঃসন্দেহে তেমনই একজন দক্ষ এবং সৌভাগ্যবান মানুষ। তাঁকে নিয়ে আর কোন কথা হবে না।
গভীর অরণ্যে গাছকে বাঘিনী আলিঙ্গন করে রয়েছে, এই অনন্য দক্ষতার ফটোগ্রাফির জন্যে চলতি বছরের ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফার অব দ্য ইয়ার (ডব্লিউপিওয়াই) পুরস্কারটি উঠেছে তাঁরই হাতে। লন্ডনের ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়মের আয়োজনে একটি টিভি প্রেজেন্টার এবং কেমব্রিজের রয়্যাল হাইনেস ওফ ডাচেসের যৌথ উদ্যোগে এই পুরস্কার দেওয়া হল।
আরও পড়ুন: মুহাম্মদ ঘোরি জমানার বিরল সোনার কয়েন নিলাম লন্ডনে, দাম শুনলে ঘুরে যাবে মাথা
ছবিতে দেখা যাচ্ছে, একটি বাঘিনী একটি গাছকে আলিঙ্গন করে রয়েছে। গাছের গায়ে নিজের গা ঘষছে। এটা একান্তই নিজের উপস্থিতির চিহ্ন রেখে যাওয়া। গাছের গায়ে নিজের শরীরের গন্ধ রেখে গিয়ে এ জঙ্গলের তামাম প্রাণীকুলকে যেন বলছে সে– এখানে কিন্তু আমি আছি!
ছবিটিকে পুরস্কার দিতে গিয়ে বিচারকেরা বলেছেন, সের্গেইয়ের তোলা ছবিতে আলো রঙ এবং টেক্সচারের যে বিরল সৌন্দর্য ধরা পড়েছে, তা শুধুমাত্র কোনও পেইন্টিংয়েই থাকতে পারে! বিবিসি নিউজ আবার অন্য ভাবে ব্যাখ্যা করেছে। তারা বলেছে, দেখে মনে হচ্ছে, বাঘটি যেন অরণ্যের একান্ত অংশ। ওর লেজটা এমন ভাবে বেঁকে রয়েছে যেন ওটা ওই গাছের শিকড়। যেন দুটি সত্তাই এক।
চিত্রগ্রাহক অরণ্যের মধ্যে লুকিয়ে রাখা ক্যামেরায় মাদী বাঘের এই মনোরম আলোকচিত্র বন্দী করেছেন। এমনভাবে ক্যামেরা বসানো হয়েছিল, যেন কোনো বাঘ এলেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে ছবি তোলা হয়ে যায়। ছবিটি ক্যামেরার লেন্সে ধরা পড়ার ১০ মাস আগে ক্যামেরা সেট করে রেখেছিলেন সের্গেই গর্শকভ। অর্থাৎ দীর্ঘ সময়ের প্রচেষ্টায় সাফল্য এসেছে এভাবে!
আরও পড়ুন: সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার আমেরিকান মহিলা কবি লুইস গ্লাকের