#কলকাতা: বিধাননগর পুরসভার মেয়রপদে ইস্তফা দিলেন সব্যসাচী দত্ত। গত বুধবারই তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পুরসভার অনাস্থা ভোট নিয়ে রায় দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এ দিন সব্যসাচী কাজ চালিয়ে যাওয়ার উপযুক্ত পরিবেশ নেই বলে দাবি করে মেয়রপদ থেকে ইস্তফা দিলেন।
সাংবাদিক বৈঠকে সব্যসাচী বলেন, “মেয়র হিসাবে কাজ করার সময় বেশির ভাগ কাউন্সিলারের সহযোগিতা পেয়েছি। কিন্তু কিছু রাজারহাট নিউটাউন এলাকার বেশ কয়েকজন স্বার্থান্বেষী কাউন্সিলার কোনো রকমের সহযোগিতা করেননি”।
ক’দিন আগেই সব্যসাচীর বিরুদ্ধে বেআইনি ভাবে জলাভূমি ভরাটের অভিযোগ উঠেছিল। এ দিনের সাংবাদিক বৈঠকে সেই অভিযোগকে ভুয়ো প্রমাণ করতে একাধিক তথ্য তুলে ধরেন তিনি। বলেন, “আমি বেআইনি ভাবে জলাভূমি ভরাট করে নির্মাণে বাধা দিয়েছিলাম। পদক্ষেপ চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী দফতরে চিঠি দিয়েছিলাম। সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলিতেও চিঠি দিয়েছিলাম। কিন্তু কোনো জায়গা থেকেই কোনো সহযোগিতা পাইনি। তারপরই বুঝেছি এখানে থেকে আন্দোলন করা সম্ভব নয়”। তিনি বলেন, “আমার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আমাকে নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। তার পরিপ্রেক্ষিতেই আমি মামলা করেছিলাম। হাইকোর্টে আমার নৈতিক জয় হয়েছে”।
বিদ্যুৎ ভবনে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার কারণ ফের একবার মনে করিয়ে দেন সব্যসাচী। বলেন, “আমাদের দলনেত্রী শিখিয়েছিলেন, মেহনতি শ্রমিকশ্রেণির মানুষের স্বার্থে লড়াই করতে। সেই পথ ধরেই এগিয়ে চলেছি। কিন্তু এখন তা সম্ভব হচ্ছে না। স্বার্থান্বেষী মানুষেরা কাজে বাধা দিচ্ছেন। অসৎ কাজের সঙ্গে আমি আপস করতে চাই না। যত দিন বাঁচব, ততদিন মুখ বন্ধ করব না”।
রাজ্যের পুরমন্ত্রী তথা তৃণমূলের অন্যতম শীর্ষনেতা ফিরহাদ হাকিম আগেই সব্যসাচীকে ফোন করে মেয়র পদ ছাড়তে বলেছিলেন বলে তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছিল। মেয়র পদ শেষ পর্যন্ত যখন ছাড়লেনই, তখন ফোন পাওয়ার পরেই ছাড়লেন না কেন? এমন প্রশ্নের সম্মুখীনও এ দিন হতে হয় বিধাননগরের সদ্য প্রাক্তন মেয়রকে। সব্যসাচী বলেন, ‘‘মেয়রটা তো ফোনে ফোনে হইনি। কেউ ফোন করে দিল আর আমি মেয়র হয়ে গেলাম, এমন তো হয়নি। তাই ফোনে ফোনে মেয়র পদ ছেড়ে দেওয়ার প্রশ্নও ওঠে না।’’
এ দিন মেয়রপদ থেকে সব্যসাচী ইস্তফা দেওয়ায় হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে অনাস্থার কী হবে, সে বিষয়ে তৃণমূলের তরফে এখনও কোনো মন্তব্য করা হয়নি।