Today is Dwijendralal Ray's birthday, learn many things that the poet does not know

দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের আজ জন্মদিন, জানুন কবির না জানা বহু কথা

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

কবি, নাট্যকার ও সংগীতস্রষ্টা দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের জন্মদিন আজ। ১৮৬৩ সালের ১৯ জুলাই পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগরে তার জন্ম। পিতা কার্তিকেয়চন্দ্র রায় ছিলেন কৃষ্ণনগর রাজবংশের দেওয়ান। তার বাড়িতে বহু গুণীজনের সমাবেশ হতো।

বাংলায় জনপ্রিয়তা পাওয়া দেশাত্মবোধক গানের মধ্যে অন্যতম হল দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের ‘ধনধান্যে পুষ্পে ভরা’। তিনি ডিএল রায় নামে বেশি পরিচিত। পাঁচ শতাধিক গান লিখেছেন তিনি- যা দ্বিজেন্দ্রগীতি নামে পরিচিত।

১৮৭৮ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় ১০ টাকা বৃত্তি লাভ করেন দ্বিজেন্দ্রলাল। এফএ পাস করেন কৃষ্ণনগর কলেজ থেকে। হুগলি কলেজ থেকে বিএ ও ১৮৮৪ সালে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে এমএ পাস করেন। কিছুদিন ছাপরার রেভেলগঞ্জ মুখার্জ্জি সেমিনারিতে শিক্ষকতা করেন। এরপর কৃষিবিদ্যা পড়তে সরকারি বৃত্তি নিয়ে ইংল্যান্ড যান। রয়্যাল এগ্রিকালচারাল কলেজ ও এগ্রিকালচারাল সোসাইটি হতে কৃষিবিদ্যায় এফআরএএস এবং এমআরএসি ও এমআরএস ডিগ্রি লাভ করেন। ইংল্যান্ডে থাকাকালে ১৮৮৬ সালে প্রকাশিত হয় একমাত্র ইংরেজি কাব্যগ্রন্থ লিরিকস অব ইন্ডিয়া। ওই বছরই দেশে ফিরে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। ৩ বছর বিদেশে থাকার জন্য তাকে প্রায়শ্চিত্ত করতে বলা হয়। এতে অসম্মতি জানালে অনেক ধরনের সামাজিক উৎপীড়ন সহ্য করতে হয়।

ভারতে ফিরে সার্ভে ও কর মূল্যায়নে প্রশিক্ষণ নিয়ে মধ্যপ্রদেশে সরকারি দফতরে যোগ দেন দ্বিজেন্দ্রলাল। পরে দিনাজপুরে সহকারী ম্যাজিস্ট্রেট পদে নিয়োগ পান। ১৮৯০ সালে বর্ধমান এস্টেটের সুজামুতা পরগনায় সেটেলমেন্ট অফিসার হিসেবে কাজ করাকালে কৃষকদের অধিকার নিয়ে বাংলার ইংরেজ গভর্নরের সঙ্গে বিবাদ ঘটে। অসুস্থতার কারণে ১৯১৩ সালে অবসর নেন।

কৈশোরেই দ্বিজেন্দ্রলাল কবিতা লেখা শুরু করেন। ১৯০৫ সালে তিনি কলকাতায় পূর্নিমা সম্মেলন নামে একটি সাহিত্য সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯১৩ সালে ভারতবর্ষ পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব নেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে একসময় তার সখ্যতা থাকলেও পর সাহিত্য নিয়ে মতবিরোধ দেখা দেয়। তার সাহিত্যের গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হলো দেশপ্রেম ও ইতিহাস চেতনা। তার প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে রয়েছে- কাব্যগ্রন্থ : দুই খণ্ডে আর্যগাথা (১৮৮৪), দ্য লিরিকস অব ইন্ডিয়া (১৮৮৬ ), হাসির গান (১৯০০), মন্দ্র (১৯০২), আলেখ্য (১৯০৭) এবং ত্রিবেণী (১৯১২)। রম্য : একঘরে (১৮৮৯), সমাজ বিভ্রাট ও কাল্কি অবতার (১৮৯৫), বিরহ (১৮৯৭), ত্র্যহস্পর্শ (১৯০০), প্রায়শ্চিত্ত (১৯০২) এবং পূনর্জন্ম (১৯১১)। নাটক : পাষাণী (১৯০০), সীতা (১৯০৮), ভীষ্ম (১৯১৪), পারাপারে (১৯১২), বঙ্গনারী (১৯১৬), তারাবাঈ (১৯০৩), রাণা প্রতাপসিংহ (১৯০৫), দুর্গাদাশ (১৯০৬), নূরজাহান (১৯০৮), মেবার পতন (১৯০৮), সাজাহান (১৯০৯), চন্দ্রগুপ্ত (১৯১১) এবং সিংহল বিজয় (১৯১৫)। এ ছাড়া অনেক লেখা এখনও অপ্রকাশিত রয়েছে।

দ্বিজেন্দ্রলালের মূল অবদান ধরা হয় সঙ্গীতে। তার গানে দুটি ভিন্ন ধারা বিদ্যমান- ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত ও ইউরোপীয় ধ্রুপদি সঙ্গীত। ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের ধ্রুপদ ও খেয়াল তাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিল। এর উপর ভিত্তিকে অনেক গানে সুর করেন। এ ছাড়া কয়েকটি কীর্তনাঙ্গ গান রয়েছে। তার গানের অনুষঙ্গ হলো দেশপ্রেম ও রঙ্গরস। বাংলায় হাসির গানে তার অবদান অতুলনীয়। উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে রয়েছে- ধনধান্যে পুষ্পভরা, ওই মহাসিন্ধুর ওপার হতে, আমি তোমার কাছে ভাসিয়া যাই, মলয় আসিয়া বলে গেছে কানে, পতিতোদ্বারিনী গঙ্গে, কে গান গেয়ে গেয়ে চলে যায়, নিখিল জগত সুন্দর সব, তোমারেই ভালবেসেছি আমি, আজি বিমল নিদাঘ প্রভাতে, ঘনতমসাবৃত অম্বর ধরণী, নীল আকাশের অসীম ছেয়ে, এসো প্রাণসখা এসো প্রানে, একি শ্যামল সুষমা, চরন ধরে আছি ও বেলা বয়ে যায়।

১৮৮৭ সালে বিখ্যাত হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক প্রতাপচন্দ্র মজুমদারের মেয়ে সুরবালা দেবীকে বিয়ে করেন। এ কবি, নাট্যকার ও সঙ্গীতজ্ঞ ১৯১৩ সালের ১৭ মে কলকাতায় মারা যান।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest