এতদিন আকারে-ইঙ্গিতে বোঝাচ্ছিলেন। এবার সরাসরি তৃণমূল ছাড়ার ইচ্ছের কথা ঘোষণা করলেন কোচবিহার দক্ষিণের বিধায়ক মিহির গোস্বামী। বৃহস্পতিবার ফেসবুকে একটি পোস্ট করে দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন মিহির। আর সেইসঙ্গেই জানিয়ে দেন, তৃণমূলে আর নয়।
এদিন ফেসবুকে মিহির গোস্বামী লেখেন, ‘গত ৩ অক্টোবর ২০২০ তারিখে তৃণমূল কংগ্রেসের যাবতীয় সাংগঠনিক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে এও জানিয়েছিলাম, দলনেত্রীর নির্দেশ পেলে আমি বিধায়ক পদ থেকেও ইস্তফা দিতে পারি। তারপর প্রায় দুমাস হতে চলল আমি যেমন নিজের বিবেকের সঙ্গে ও নিজের যুক্তিবোধের সঙ্গে চিন্তন-মন্থন করেছি তেমনই আমার ভাবনাকে মানুষের সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিয়মিত শেয়ার করেছি। যে সব মানুষ আমার ভাবনাকে যুক্তিযুক্ত ভেবে স্বাগত জানিয়েছে, তাঁদের উদ্দেশ্যেই আবার বলি, গত দশ বছর যে তৃণমূল দলের একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে দলের মধ্যে বারবার অবহেলিত ও অপমানিত হয়েছি, দলের রাজ্য নেতৃত্ব তাতে নীরব ও প্রচ্ছন্ন মদত জুগিয়ে গিয়েছেন।’
আরও পড়ুন: আপাতত বন্ধ থাকছে স্কুল, কমছে ২০২১ সালের মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিকের সিলেবাস, জানালেন শিক্ষামন্ত্রী
একইসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে শাসক দলের এই বিধায়ক লিখেছেন, ‘দলনেত্রীকে সেসব কথা বারংবার জানিয়েও পরিস্থিতির ইতরবিশেষ হয়নি। আজ সব সহ্যের সীমা অতিক্রম করার সময় অনুভব করেছি, বাইশ বছর আগে যে দলটির সঙ্গে যোগ দিয়েছিলাম, আজকের তৃণমূল সেই দল নয়। এই দলে আমার জায়গা নেই। তাই আজ এই তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে আমার যাবতীয় সম্পর্ক ছিন্ন করতে চাই। আমি আশা করছি, আমার দীর্ঘদিনের সাথী বন্ধু ও শুভানুধ্যায়ীরা আমাকে মার্জ্জনা করবেন।’
রাজনৈতিক মহলের মতে, দিনকয়েক ধরে দলের বিরুদ্ধে মিহির গোস্বামীর তোপ দাগার একমাত্র কারণ এবার তাঁর বিজেপিতে যোগদানের রাস্তা পরিস্কার করা। দুর্গাপুজোর পর তৃণমূল নেতারা মিহিরবাবুর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েও তাই তাঁর দেখা পাননি। কিন্তু বিজেপি সাংসদ নিশিত অধিকারীর সঙ্গে দেখা করেছেন মিহির। যদিও তারপর মিহির গোস্বামীর বাড়িতে গিয়েছিলেন মন্ত্রী তথা কোচবিহারের তৃণমূল নেতা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। মিহির গোস্বামী তৃণমূলেই থাকবেন বলে আশাপ্রকাশ করেছিলেন তিনি। কিন্তু এদিনের পর সেই সম্ভাবনা আর রইল না বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
আরও পড়ুন: ভ্যাকসিন পৌঁছে দিতে একসঙ্গে কাজ করব, মোদীকে আশ্বাস মমতার,দাবি বাকি টাকারও