#কলকাতা: আগে ছিল ৫ আর, এবার ৯। সবমিলিয়ে ২১ জুলাইয়ের আগে হাতছাড়া হওয়া কাঁচড়াপাড়া নিজেদের দখলে নিতে একেবারে ঘুঁটি সাজিয়ে নিল তৃণমূল। জানা গেল, কাঁচড়াপাড়ার আরও ৯ জন কাউন্সিলর যারা তৃণমূল ছেড়ে শুভ্রাংশুর সঙ্গে দিল্লিতে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন তাঁদের ‘ঘর ওয়াপসি’ ঘটছে। শনিবারই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন তাঁরা।
কাঁচড়াপাড়া পুরসভায় মোট আসন ২৪। তার মধ্যে একজন সিপিএম ও একজন নির্দল কাউন্সিলর। বাকি ২২ জন তৃণমূলের কাউন্সিলর ছিলেন। কিন্তু লোকসভা ভোটের ফল বেরনোর পর শুভ্রাংশু রায় বিজেপিতে যোগদান করলে, সেই ২২ জনের মধ্যে ১৭ জন-ই তাঁর সঙ্গে দিল্লি যান। সেই দলে ছিলেন চেয়ারম্যান সুদামা রায়ও। এরপরই কাঁচড়াপাড়া পুরবোর্ড ঘিরে আশঙ্কা দানা বাঁধে। ফলে খাতায় কলমে না হলেও সংখ্যাধিক্যের জেরে কাঁচড়াপাড়া পুরসভার দখল নেয় বিজেপি। ২১ জুলাইয়ের আগে যা বেশ ধাক্কা ছিল তৃণমূলের কাছে। তবে ফিরহাদ হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন শহিদ দিবসের আগে কাঁচড়াপাড়ার দখল নেবে তৃণমূল। আর সেটাই হল। এর আগে ৫ জন কাউন্সিলর বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন, আর এখন আরও নয় সব মিলিয়ে ১৪ জন কাউন্সিলর ফিরছে তৃণমূলে। সব মিলিয়ে কাঁচড়াপাড়ায় তৃণমূলের মোট আসন সখ্যা দাঁড়াল ১৯। অর্থাৎ কাঁচড়াপাড়া পুরবোর্ড ফের চলে এল তৃণমূলের ঘরে।
উল্লেখ্য, দল বদলের এহেন হিড়িকের মাঝে শুভ্রাংশু রায় দাবি করেছিলেন যে ৫ জন ফের তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন তাঁরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন ওরা তৃণমূলে যাবে না। চেয়ারম্যান সুদামা রায়েরও দাবি ছিল, তিনি বিজেপি ছেড়ে কোথাও যাবেন না। তবে আশ্চর্য যাদুতে প্রায় সবাইকেই নিজের ঘরে টেনে নিল তৃণমূল। ২১ জুলাইয়ের আগে এটা যে তৃণমূলের একটা বড় সাফল্য তা বোধহয় আলাদা করে বলার প্রয়োজন নেই।
শনিবার তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলনে হাজির করেন ওই কাউন্সিলারদের। এ দিন পুরসভার চেয়ারম্যান সুদামা রায়, মাখন সিনহা, বাসবা বিশ্বাস, উমা বিশ্বাস, লিপি বণিক, লিপি বণিক, মৃত্যুঞ্জয় দাস-সহ ন’জন তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় কাঁচরাপাড়া পুরসভা ফের দখল করল তৃণমূল। এ দিনের সাংবাদিক বৈঠকে বিজেপি নেতা মুকুল রায়কে একহাত নেন অভিষেক।নাম না-করে অভিযেক বলেন, “আপনি আপনার পাড়া বাঁচাতে পারছেন না। পাড়ায় মুখ দেখাতে পারছেন না। প্রতিদিন নিত্যনতুন দাবি করছেন। কাল বলেছিলেন, ৬০ জন বিধায়ক যোগাযোগ করছেন, আজ বলছেন ১৬০ জন বিধায়ক যোগাযোগ করছেন, কাল বলবেন, ২৯৪ জনই যোগাযোগ করছেন। নিজের পাড়ার ১০ জন কাউন্সিলারকে সামলাতে পারছেন না, রাজ্য দখল করার স্বপ্ন দেখছেন”।
একই সঙ্গে অভিষেক বলেন, “যাঁরা বিজেপিতে গিয়েছিলেন, তাঁরা দাবি করেছেন, জোর করে দলবদল করায় বিজেপি। মিডিয়া এক জন বিজেপি নেতার অনেক নাম দিয়েছে। কেউ বলছে চাণক্য। আমার মনে হয়, বিজেপির চাণক্য, মেড ইন চায়না। শুধুমাত্র দিল্লির কাছে নম্বর বাড়ানোর চেষ্টা করছেন”।