#পিয়ংইয়ং: উত্তর কোরিয়া-আমেরিকার ঠান্ডা যুদ্ধ মেটাতে আচমকাই এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। উত্তর কোরিয়ায় গিয়ে প্রেসিডেন্ট কিম জং উনের সঙ্গে বৈঠক করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। পদে থাকাকালীন এই প্রথম কোনও মার্কিন প্রেসিডেন্ট উত্তর কোরিয়ার মাটিতে পা রাখলেন।
উত্তর কোরিয়ার শাসক কিং জং-উনের সঙ্গে সাক্ষাতে রবিবার দক্ষিণ কোরিয়ার ‘অসামরিক এলাকায়’ পৌঁছলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক ত্বরাণ্বিত হওয়ার পর পরই ওই অসামরিক এলাকা খুলতে রাজি হন কিং জং উন। গত বছর অক্টোবরে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্র প্রধান ওই এলাকায় বৈঠক করেন। এ দিন কিম-ট্রাম্প বৈঠকে দুই রাষ্ট্রপ্রধানই উত্তর কোরিয়ার পরমাণু অস্ত্র সমস্যার সমাধান করতে কার্যকরী পর্যায়ের বৈঠকে সম্মত হয়েছেন। এ দিন প্রথমে ডিএমজেড-এ দাঁড়িয়ে করমর্দন করেন দু’জন। তার পর সেখান থেকে হেঁটে উত্তর কোরিয়ার মাটিতেও পা রাখেন ট্রাম্প। সেখানে দাঁড়িয়ে আরও এক বার হাত মেলান কিমের সঙ্গে। দু’জনের মধ্যে কিছুক্ষণের জন্য একটি বৈঠকও হয়। শাসক কিমের সঙ্গে করমর্দন করে ধন্যবাদ জানান ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, “এটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। দুই দেশের সম্পর্ক আরও মজবুত হতে চলেছে।” এই বৈঠককে শান্তির করমর্দন আখ্যা দিয়ে কিম বলেন, ‘‘উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার সীমান্তরেখায় এই বৈঠকই প্রমাণ করে, আমরা অতীতকে পিছনে ফেলে এসেছি।’’ ট্রাম্পও বলেছেন, ‘‘কিম তাঁর পছন্দমতো যে কোনও সময়ে হোয়াইট হাউসে স্বাগত।’’
২০১৮ সালে সিঙ্গাপুরে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের ‘ঐতিহাসিক সাক্ষাত’ হয়। এর পর ভিয়েতনামে তাঁদের সাক্ষাত্ হলে আলোচনা ভেস্তে যায়। কিন্তু এ দিন কিম ও ট্রাম্প দু’জনেই আশাবাদী সদর্থক আলোচনা হতে চলেছে তাঁদের। ইঙ্গিতটা অবশ্য শনিবারই মিলেছিল ট্রাম্পের টুইটে। তিনি লিখেছিলেন, পিয়ংইয়ং-ওয়াশিংটনের অচলাবস্থা কাটাতে বোঝাপড়ার চেষ্টা চলছে। আর তার পরের দিনই উত্তর কোরিয়ায় ট্রাম্পের পৌঁছে যাওয়া অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মত কূটনৈতিক মহলের। যদিও এই উষ্ণতা চিরস্থায়ী কি না, তা নিয়ে সন্দিহান কূটনৈতিক মহলের একটা বড় অংশ। কারণ কিম-ট্রাম্প সম্পর্কে এই রকম উত্থান পতন গত কয়েক বছরে বারবারই দেখেছে আন্তর্জাতিক বিশ্ব। কখনও দু’জন দু’জনের প্রেমে পড়েছেন, তো পরক্ষণেই আবার দু’জন দু’জনকে কঠোর শাস্তির হুমকি দিয়েছেন।
পিয়ংইয়ং-এর পরমাণু অস্ত্র ভাণ্ডার নিয়ে বরাবরই উদ্বিগ্ন আমেরিকা। অনেক বার কোরিয়াকে হুমকি-হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ট্রাম্প। পাল্টা তোপ দেগেছেন কিমও। এই পরিস্থিতিতে সশরীরে ট্রাম্পের উপস্থিতি সম্পর্কের বরফ অনেকটাই গলতে পারে। উল্লেখ্য, এ দিন দক্ষিণ কোরিয়া সফরে এসে প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য নিয়ে আলোচনা হয় মার্কিন প্রেসিডেন্টের।