মৃত্যুমিছিল বেড়েই চলেছে মায়ানমারে (Myanmar)। গত মাসে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকেই বিক্ষোভে উত্তাল মায়ানমার। সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলেই গুলি করে মারা হচ্ছে আন্দোলনকারীদের। শনিবারও নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ৫০ জন।
এই ঘটনার সমালোচনা করে জান্তা বাহিনী বিরোধী গোষ্ঠীর মুখপাত্র ডঃ সাসা বলেন, “সেনাবাহিনীর কাছে আজ লজ্জার দিন। যেখানে ৩০০-রও বেশি নিরীহ মানুষকে খুন করা হয়েছে, সেখানে মিলিটারি জেনারেল সশস্ত্র বাহিনী দিবস পালন করছেন।”এর আগে ১৪ মার্চ মায়ানমারের হ্লাইনথায়া (Hlaingthaya) শহর ও অন্যান্য অঞ্চলে অগ্নিকাণ্ড এবং গুলি চালনার ঘটনায় ৩৯ জন প্রাণ হারান। ফেব্রুয়ারি শেষ ভাগে ও মার্চের শুরুতেও ৩৬ জনকে গুলি করে খুন করে সেনাবাহিনী।
গত দু’মাসে সেনার গুলিতে অন্তত ৩২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবু দমানো যায়নি গণতন্ত্রকামীদের। শুক্রবারও রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করেছিল হাজার হাজার গণতন্ত্রকামী মানুষ। এদিকে সাধারণ মানুষের তীব্র প্রতিবাদের সামনেও নিজেদের অনড় অবস্থানই ধরে রেখেছে জুন্টা (Junta)। এবার তারা পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে, যদি গণতন্ত্রকামীরা ফের পথে নামে তাহলে সরাসরি মাথায় গুলি করবে তারা।
আরও পড়ুন: ভাল সম্পর্ক চাই, ইমরানকে চিঠি দিলেন মোদী
একটি চ্যানেলে বসে সরাসরি হুমকি দেন এক সেনা কর্তা, ”আপনাদের জেনে রাখা দরকার, যে কোনও সময় আপনাদের বিপদ আরও বাড়িয়ে মাথায় ও ঘাড়ে গুলি করা হবে।” প্রসঙ্গত, এখনও পর্যন্ত যতজন মারা গিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে অন্তত ২৫ শতাংশকে মাথাতে গুলি করেই হত্যা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১ ফেব্রুয়ারি আচমকাই দেশের শাসনক্ষমতা নিজেদের হাতে তুলে নেয় মায়ানমার সেনা। পালটা ক্যু বা সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে পথে নামে দেশের আমজনতা। কোথাও তারা বিক্ষোভ দেখাচ্ছে, তো কোথাও আবার শান্তিপূর্ণ অবস্থান করছে। রাজধানী নাইপিদাও থেকে শুরু করে ইয়াঙ্গন পর্যন্ত প্রায় সমস্ত বড় শহরে রাস্তায় সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে সরব হয়েছে হাজার হাজার মানুষ। সেনার হাতে বন্দি নেত্রী আং সান সু কি’র মুক্তির দাবি জানাচ্ছেন তাঁরা। কয়েকদিন আগেই প্রায় ৩২টি চিনা সংস্থার কারখানায় হামলা চালায় জনতা। কারণ, টাটমাদাও বা বার্মিজ সেনার পাশে দাঁড়িয়েছে বেজিং। আর এতেই ক্ষিপ্ত গণতন্ত্রকামীরা। সোমবারও রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ দেখান অনেকে। কিন্তু আং সাং সু কি-পন্থীদের দমনে মরিয়া সে দেশের সেনা। আর সেই কারণেই নির্বিচারে দমন পীড়ন চালাচ্ছে তারা।
আরও পড়ুন: নজরে মতুয়া ভোট, হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুরের ভিটেয় পুজো দিয়ে বঙ্গ ভোটের প্রচার সেরে নিলেন নমো