প্রচারে নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে ধর্নায় বসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার পৌনে আটটা নাগাদ খবর আসে, মমতার প্রচারে ২৪ ঘণ্টার জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে নির্বাচন কমিশন। তার পরেই মমতা টুইট করেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘নির্বাচন কমিশনের অগণতান্ত্রিক এবং অসাংবিধানিক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আমি বেলা ১২টা থেকে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে ধর্নায় বসছি’।
তারকেশ্বর ও কোচবিহারের জনসভায় তিনি যা বলেছিলেন, তারই প্রেক্ষিতে মমতাকে নোটিস পাঠিয়েছিল কমিশন। আব্বাস সিদ্দিকির নাম না করে তারকেশ্বরে মন্তব্য করেছিলেন মমতা। তার পরেই জনতার উদ্দেশে তিনি বলেছিলেন, ‘‘সংখ্যালঘু ভোট ভাগ হতে দেবেন না। বিজেপি এলে মনে রাখবেন সমূহ বিপদ, সবচেয়ে বেশি আপনাদের।’’ কমিশন বলেছিল, কোনও জাত, পাত ধর্মের ভিত্তিতে ভোট চাওয়া আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধির পরিপন্থী। যদি কোনও প্রার্থীর বিরুদ্ধে এই বিষয়ে অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তা হলে তাঁর প্রার্থীপদ খারিজও করা যেতে পারে। এর পরেই মমতাকে নোটিস পাঠায় কমিশন।
অন্য দিকে, কোচবিহারের সভা থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রসঙ্গে মন্তব্য করেন মমতা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ‘নির্দেশে’ই সিআরপিএফ-এর একাংশ বিজেপি-র হয়ে কাজ করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। মমতা বলেন, ‘‘সিআরপিএফ যদি গন্ডগোল করে, মেয়েদের একটা দল ওদের ঘেরাও করে রাখবেন। আর একটা দল ভোট দিতে যাবেন। শুধু ঘেরাও করে রাখলে ভোট দেওয়া হবে না। তাই ভোট নষ্ট করবেন না। ৫ জন ঘেরাও করবেন। ৫ জন ভোট দেবেন।’’ মমতার এই মন্তব্যের ভিত্তিতেও চিঠি পাঠায় কমিশন। তার জবাবে মমতা লেখেন, ‘দেশের বাহিনীর প্রতি তাঁর সর্বোচ্চ সম্মান রয়েছে’। কিন্তু সেই উত্তরে সন্তুষ্ট নয় কমিশন।
আরও পড়ুন: Mathabhanga Firing: ‘গণহত্যা করেছে বাহিনী’, কালো পোশাকে প্রতিবাদ মমতার
To protest against the undemocratic and unconstitutional decision of the Election Commission of India, I will sit on dharna tomorrow at Gandhi Murti, Kolkata from 12 noon.
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) April 12, 2021
বাংলার রাজনীতিতে গান্ধীমূর্তি ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধরনা, এই দুইয়ের সমাপতন রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে থেকেছে। যে সময় সিঙ্গুর ও নন্দীগ্রাম থেকে ফিরেও তিনি একাধিকবার এই গান্ধীমূর্তির পাদদেশে ধরনায় বসেছেন। শেষবার মেট্রোর ওয়াই চ্যানেলে তিনি ধরনায় বসেছিলেন ২০১৯ সালে। তৎকালীন কলকাতা পুলিশের কমিশনার রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে সিবিআই হানার প্রতিবাদে তিনি দু’দিন ব্যাপী এই ধরনা চালান। এ বার ফের একবার ধরনায় বসবেন তিনি। তবে রাজ্যে নির্বাচন চলাকালীন তাঁর এই ধরনায় বসার প্রভাব পড়বে কতটা, তা নিয়েই তুঙ্গে উঠছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।
আরও পড়ুন: ‘১ জনকে মারলে ৪ জনকে মারা হবে’, শীতলকুচি নিয়ে ফের বিতর্কিত মন্তব্য বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসুর