বিহারের দশরথ মাঝিকে মনে আছে? যিনি স্ত্রীর উদ্দেশ্যে একা হাতে পাহাড় কেটে রাস্তা বানিয়েছিলেন। যাকে নিয়ে বলিউডে সিনেমাও বানানো হয়েছে। দশরথ কিন্তু সরকারের আশায় বসে থাকেননি। ঈশ্বর কোনো আলৌকিক কিছু ঘটাবেন বলেও ভাবেননি। নিজেই রাস্তা বানিয়ে ফেলেছিলেন।
এবার বিহারেই খোঁজ পাওয়া গেল আরেক দশরথ মাঝির। ইনি ৩০ বছরে একা হাতে জলকষ্ট নিবারণে কেটে ফেলেছেন খাল। এনার নাম লোঙ্গি ভুঁইয়া (Longi Bhuiyan)। ৭২ বছর বয়সী লোঙ্গির বাড়ি গয়ার (Gaya) কাছে একটি গ্রামে। সেই গ্রামে খাল ( Canal) কেটে জল এনে গ্রামবাসীদের স্বস্তি দিয়েছেন মানুষটি। গ্রামের তিন হাজার মানুষ তাঁর জন্য দারুণ উপকৃত হয়েছেন। এই খাল ঐ এলাকায় চাষবাসের ক্ষেত্রে জলের সমস্যা মেটাবে। ক্ষেতগুলি প্রচুর পরিমাণে জল পাবে।
আরও পড়ুন: গাছের সঙ্গে বিয়ে! ধুমধাম করে প্রথম বিবাহবার্ষিকী পালন করলেন দুই সন্তানের মা
For the last 30 years, I would go to the nearby jungle to tend my cattle & dig out the canal. No one joined me in this endeavour… Villagers are going to cities to earn a livelihood but I decided to stay back: Laungi Bhuiyan who has dug out a canal single-handedly in Gaya(12.09) https://t.co/pfaJxa00G5
— ANI (@ANI) September 12, 2020
গয়ার কাছেে একটি গ্রামে থাকেন লোঙ্গি। সেই গ্রামে চাষবাসের জন্য জলের ভীষণ সমস্যা ছিল। তাই প্রতিদিন একটু একটু করে লড়াই করে নিজেই গ্রামে জল আনলেন তিনি। ৩০ বছর ধরে খাল কেটেছেন তিনি। লোঙ্গি জানান, বর্ষাকালে পর্যাপ্ত বৃষ্টি হলেও গ্রামে জল আসার কোনও সুযোগ ছিল না। তাঁর এই খাল কাটার ফলে পাহাড়ি নদী থেকে সরাসরি জল আসবে গ্রামে। গয়া জেলা থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে কোঠিওয়ালা গ্রাম ঘেরা জঙ্গল আর পাহাড়ে। সেখানেই সবার চোখের আড়ালে এমন অসম্ভব কাজ করে ফেলেছেন তিনি। খুঁড়েছেন ৩ কিলোমিটার লম্বা খাল।
৭২ বছর বয়সী লোঙ্গি বলেন, ‘প্রথম থেকে কেউ তাঁকে এই কাজে উৎসাহ দেয়নি। বরং সবাই যখন রুটিরুজির তাগিদে বেরিয়েছেন, তখনও তিনি একাই খাল কাটতে থাকেন। প্রথমে মানুষজন তাঁকে পাগল বলেছে, কেউ বিশ্বাসই করতে পারেনি আমি এটা করতে পারব। তবে ৩০ বছরের টানা চেষ্টায় আমি সফল হয়েছি।’
লোঙ্গি একসময় নিজে চাষ বাস করতেন কিন্তু জলের অভাবে ভালো করে চাষ করতে পারতেন না। ফলে তার ছেলেরা আর চাষের কাজ করতে চাননি, কাজের জন্য তারা শহরে চলে যান।তাই জলের মর্ম মানুষটি খুব ভালো করে অনুধাবন করতে পেরেছিলেন।আর তাই ৩০ বছর ধরে তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। যার ফলশ্রুতি আজকের জল ভরা এই খাল। যা দেখে রীতিমতো কৃতজ্ঞ গোটা গ্রামের মানুষ।
আরও পড়ুন: বিতর্কিত মানচিত্র পেশ পাকিস্তানের, প্রতিবাদে ওয়াকআউট করল ভারত