দাঙ্গাবাজদের সঙ্গে আপোষ করে লাভ হবে না। কারণ এরা কেবল দাঙ্গাই জানে। আর দাঙ্গার মাধ্যমে তারা বিশেষ দলে ঠাঁই পেতে চায়। তাদের সে চেষ্টা বেশিরভাগ সময়ই সফল হয়। তাই বিজ্ঞাপন তুলে নিয়েও রক্ষা নেই। ‘লভ জিহাদ’-এর প্রচার করার ধুয়ো তুলে এ বার বিখ্যাত এক গয়না প্রস্তুতকারী সংস্থার স্টোরে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল। এমনকি ওই স্টোরের ম্যানেজারকে লিখিত ভাবে ক্ষমাও চাওয়ানো হয়েছে বলে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে।
সম্প্রতি উৎসবের বিজ্ঞাপনে হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের কথা তুলে ধরেছিল ওই গয়না প্রস্তুতকারক সংস্থাটি। কিন্তু পাল্টা অভিযোগ ওঠে, ওই সংস্থাটি ‘লভ জিহাদ’-এর তত্ত্ব প্রচার করছে। আর এ নিয়েই নতুন করে বিতর্ক দানা বাঁধে। সোমবার রাতে গুজরাতের গাঁধীগ্রামে ওই সংস্থাটির একটি স্টোরে হামলা চালায় এক দল লোক। তারা ওই স্টোরের ম্যানেজারকে দিয়ে লিখিয়ে নেয়, ‘ওই বিজ্ঞাপনটি লজ্জানজক এবং আমরা ক্ষমাপ্রার্থী’। এর পর তা স্টোরের বাইরে সেঁটে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন : মাথা পিছু আয়ের নিরিখে বাংলাদেশের থেকে পিছিয়ে যাবে ভারত, পূর্বাভাস আইএমএফের
আগের কোনও জমনাতেই মানুষকে মধ্যে বিদ্বেষ এমন মাত্রা ছাড়া হয়নি। কেন্দ্রীয় শাসক দল এই দায় কোনও মতে অস্বীকার করতে পারে না। যে বিদ্বেষকে তারা ভোটে কাজে লাগাতে চেয়েছে আগামী দিনে সেই বিদ্বেষ গোটা দেশকে পুড়িয়ে শেষ করে দেবে। তা কেবল হিন্দু-মুসলিমে সীমাবদ্ধ থাকবে না। দেশপ্রেমের নাম করে নতুন করে যে ‘হিন্দু মৌলবাদিতার’ জন্ম দেওয়া হল তার খেসারত দিতে হবে ‘নিউ ইন্ডিয়াকে’ । যেমন পাকিস্তানকে দিতে হয়েছে। সেখানে জুম্মার দিনে মসজিদে বিস্ফোরণ হয়েছে। তা করেছে কোন ‘মুসলিম।’ ভারতেও সেই দিন বেশি দূরে নয়। এদেশে ‘গো-মাতা ‘এবং ‘গেরুয়া ভারত মাতার ‘ সন্তানরা আসলে পাক মদতপুষ্ট সন্ত্রাসবাদীদের নকল করতে চেষ্টা করছে। তার ফল হবে মারাত্মক। মনে রাখবেন গান্ধী ঘাতক কোনও মুসলিম ছিল না।
I like this ad. Keep sharing. Wish Tanishq wouldn’t bow down to petty, paid trolls. Ignore the haters. https://t.co/KeFATBe1bm
— Konkona Sensharma (@konkonas) October 13, 2020
যে বিজ্ঞাপন নিয়ে হইচই তাতে দেখানো হয়েছিল, মুসলিম পরিবারে বিয়ে হয়ে আসা এক হিন্দু তরুণী গর্ভবতী। তাঁকে হাত ধরে সাধভক্ষণ অনুষ্ঠানে নিয়ে যাচ্ছেন শাশুড়ি। আয়োজন দেখে ওই তরুণী বলছেন, ‘আপনাদের তো এ সবের রীতি নেই!’ জবাবে শাশুড়ি বলেন, ‘মেয়েকে খুশি করার রীতি সব জায়গাতেই রয়েছে।’ বিজ্ঞাপনটি প্রকাশ্যে আসতেই সংস্থাটির বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠেন এক শ্রেণির নেটাগরিক। হিন্দু-মুসলিম একতার দোহাই দিয়ে আদতে ‘লভ জিহাদ’-এর প্রচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন তাঁরা। ওই সংস্থাটিকে বয়কটের দাবিও ট্রেন্ডিং হয়ে ওঠে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এর পিছনে গেরুয়া শিবিরের ইন্ধন রয়েছে বলেই মনে করছেন অনেকে। চাপে পড়ে শেষ পর্যন্ত বিজ্ঞাপনটি প্রত্যাহার করে নেয় ওই সংস্থা। কিন্তু বিতর্কের আগুন যেন তাতেও নিভছে না।
আরও পড়ুন : চার বছরের শিশুকেও ছাড়ল না যোগীরাজ্যের ধর্ষক! এক মাসের মাথায় ফের ধর্ষণ হাতরাসে