রেশন কার্ডের মতোই এবার ‘এক দেশ এক স্বাস্থ্যকার্ড’ চালু করার কথা ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী। সেইসঙ্গে ন্যাশনাল ডিজিটাল হেলথ মিশনের ঘোষণাও করলেন তিনি।
শনিবার দিল্লির লালকেল্লায় ৭৪তম স্বাধীনতা দিবসের মঞ্চে দাঁড়িয়ে ন্যাশনাল ডিজিটাল হেলথ মিশনের ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই প্রকল্পের ফলে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় বিপ্লব আসবে বলে জানিয়েছেন তিনি। এই হেলথ মিশন সম্পূর্ণ ভাবে প্রযুক্তি নির্ভর হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
মোদী জানান যে এই প্রকল্পের অধীনে সব ভারতবাসীকে একটি করে হেলথ আইডি কার্ড দেওয়া হবে। সেই কার্ডে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির যাবতীয় স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্য থাকবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আজকের দিনে আমি ন্যাশনাল ডিজিটাল হেলথ মিশনের ঘোষণা করছি। এই মিশনের মাধ্যমে প্রত্যেক ভারতীয়র স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্য একটি প্ল্যাটফর্মেই সংরক্ষিত করে রাখা থাকবে। প্রত্যেক ভারতীয়কে একটি হেলথ আইডি কার্ড দেওয়া হবে। সেই হেলথ কার্ডের নম্বর সবার আলাদা হবে। ওই ব্যক্তি কোন ডাক্তারকে দেখিয়েছেন, তাঁর স্বাস্থ্যের কী সমস্যা রয়েছে, সব তথ্য ওই কার্ডের মধ্যেই থাকবে। পরবর্তীকালে তাঁরা যা যা টেস্ট বা চিকিৎসা করাবেন, তার সব তথ্যও ওই কার্ডেই জমা হবে। এতে সবার স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সব তথ্য এক ক্লিকেই জানা যাবে।”
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে সেজে উঠেছে গোটা দেশ, দেখুন ছবি
করোনা আবহের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার ভারতীয়দের স্বাস্থ্যের দিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে বলেই এদিন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের আওতায় এতদিনে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে কীভাবে মানুষ সুবিধা পাচ্ছে সেই তথ্যও এদিন তুলে ধরেন নরেন্দ্র মোদী। আগামী দিনে দেশবাসীকে আরও সুবিধা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
আয়ুষ্মান ভারত প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনার অধীনে এই ন্যাশনাল ডিজিটাল হেলথ মিশন দেশের স্বাস্থ্য পরিষেবাকে অনেকটাই উন্নত করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই প্রকল্পের অধীনে সব ভারতীয় একটি করে হেলথ কার্ড পাবেন, এই কার্ডে তাঁর প্রেসক্রিপশন, ডায়গনস্টিক রিপোর্ট, ডিসচার্জ সামারি-সহ স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সব তথ্য জমা থাকবে। তবে এই কার্ড থেকে তথ্য পাচার হওয়ার কোনও সম্ভাবনা থাকবে না বলে দাবি করা হয়েছে। কারণ কোনও ব্যক্তি যে চিকিত্সককে তাঁর কার্ড অ্যাকসেস করতে দেবেন, তিনি একবারই মাত্র তা অ্যাকসেস করতে পারবেন।
এই কার্ডের ফলে টেলি-কনসালটেশন এবং ই-ফার্মেসির সুবিধে আরও সহজে পাওয়া যাবে বলে জানানো হয়েছে। আয়ুষ্মান ভারতের ইমপ্লিমেন্টিং এজেন্সি ন্যাশনাল হেলথ অথরিটি এই প্ল্যাটফর্মটি তৈরি করেছে। অ্যাপ এবং ওয়েবসাইট, উভয় মাধ্যমেই এটি পাওয়া যাবে। দেশের স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে এটি অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ হতে চলেছে বলে আশা করা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই এই প্রকল্পের জন্য ৪৭০ কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দ করেছে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক। তবে এর জন্য আরও ৪০০ কোটি টাকা লাগতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: করোনা মুক্ত অমিত শাহ, থাকবেন হোম আইসোলেশনে, জানালেন নিজেই