যোগী রাজ্যে ফের খুন সাংবাদিক, গল্প সাজাচ্ছে পুলিশ, অভিযোগ পরিবারের

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

ফের এক সাংবাদিক খুন হলেন উত্তরপ্রদেশে। পুলিশের নাকের ডগায় তাঁকে গুলি করে খুন করল এক দল দুষ্কৃতী। সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ এবং পুরনো শত্রুতার জেরে তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে দাবি পুলিশের। কিন্তু নিহত সাংবাদিকের পরিবারের দাবি, সম্পত্তি সংক্রান্ত কোনও ঝামেলাই ছিল না তাঁদের। পুলিশে মিথ্যে গল্প সাজাচ্ছে।

ক্রমেই যেন অপরাধীদের স্বর্গরাজ্যে হয়ে উঠছে উত্তরপ্রদেশে। গোটা রাজ্যে গত মাস থেকেই লাগামহীন ভাবে বেড়ে চলছে সমাজবিরোধী কার্যকলাপ। বাড়ছে খুন, ধর্ষণের ঘটনাও। এবার সেই যোগীরাজ্যেই ফের রক্তাক্ত সংবাদমাধ্যম।

সোমবার রাতে লখনউ থেকে ২৬০ কিলোমিটার দূরে বালিয়া জেলার ফাফনা এলাকায় পুলিশ পোস্ট থেকে মাত্র কয়েক গজ দূরে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটে। ওই এলাকাতেই নিহত সাংবাদিকের বাড়ি। দুষ্কৃতীদের তাড়া খেয়ে তিনি যখন বাড়ির কাছাকাছি, সেইসময় তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে দুষ্কৃতীরা। স্থানীয়রা মিলে তড়িঘড়ি স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান তাঁকে। কিন্তু সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।

আরও পড়ুন : Unlock 4: চালু হতে পারে মেট্রো পরিষেবা, স্কুল-কলেজ আরও কিছু দিন বন্ধ রাখার ভাবনা

নিহত সাংবাদিকের নাম রতন সিংহ। বয়স ৪২ বছর। স্থানীয় একটি বেসরকারি চ্যানেলে যুক্ত ছিলেন তিনি। খবরের জোগান দিতেন তিনি। তাঁর হত্যার তীব্র নিন্দা করেছে বালিয়া ওয়ার্কিং জার্নালিস্টস ইউনিয়ন। গোটা ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি তুলেছেন তাঁরা। তবে পুলিশের দাবি, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে নিহতের পেশার কোনও যোগসূত্র নেই। বরং সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের জেরেই তাঁকে খুন করা হয়েছে। অরবিন্দ সিংহ, দীনেশ সিংহ এ বং সুনীল সিংহ-সহ অভিযুক্ত ছ’জনকেই গ্রেফতার করা হয়েছে।

 

এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। অভিযুক্তরা হলেন দীনেশ সিং, অরবিন্দ সিং, সুনীল সিং ও মতি সিং। আজমগড় জেলার ডিআইজি সুভাষচন্দ্র দুবে জানিয়েছেন, ঘটনাস্থল থেকেই তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে আরও একজন অভিযুক্ত ধরা পড়েছে। মৃত ব্যক্তি সাংবাদিক হলেও এর সঙ্গে সাংবাদিকতার কোনও যোগ নেই বলেই দাবি পুলিশের।

ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (আজমগড় রেঞ্জ)সুভাষ দুবে বলেছেন, রতন সিং ও তাঁর আত্মীয়দের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই জমিজায়গার দখল নিয়ে বিবাদ চলছিল। অভিযুক্তরা তাঁর গ্রামের বাড়ির কাছে একটি পাঁচিল তুলেছিল যেটা রতন ভেঙে দেন। তারপরই অশান্তি চরমে ওঠে। গতকাল রাতে কোনও খবর সংগ্রহের জন্য তিনি নিজের গ্রামেই গিয়েছিলেন। সেখানে তাঁর সঙ্গে বচসা শুরু হয় অভিযুক্তদের। হাতাহাতির পর্যায়ে গেলে রতন সেখান থেকে পালাতে চেষ্টা করেন। তাঁর পিছু নেয় অভিযুক্তরা। পিছন থেকেই পর পর গুলি চালায় তারা। রক্তাক্ত লুটিয়ে পড়ের রতন। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। ডিআইজির দাবি, পারিবারিকর সমস্যার জন্যই খুন হতে হয়েছে সাংবাদিককে, আর অন্য কোনও কারণ নেই।

পুলিশের এই দাবি মানতে চাননি রতনের বাবা। তাঁর অভিযোগ, পারিবারিক বিবাদ ছিল ঠিকই, তবে সেই বিবাদের কারণে রতনকে খুন করা হয়নি। এর পিছনে অন্য কোনও ষড়যন্ত্র রয়েছে। গোটা ঘটনাকেই ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে পুলিশ।সাংবাদিক খুনের ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। মৃতের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা দেওয়ার ঘোষণাও করেছেন তিনি।

পুলিশের এই দাবি খারিজ করেন নিহতের বাবা। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘‘জমি নিয়ে কোনও ঝামেলা ছিল না। আর তার জন্য আমার ছেলে খুনও হয়নি। আপনারা গিয়ে দেখে আসতে পারেন। পুলিশ মিথ্যে গল্প সাজাচ্ছে। ফাফনা থানার দায়িত্বে রয়েছেন যিনি, তিনিই আসল অপরাধী। গাড়ি নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েও পালিয়ে যান তিনি। স্থানীয় পুলিশের তরফে ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে। থানা থেকে ২০ পা দূরত্বে আমার ছেলেকে খুন করা হয়েছে।’’

আরও পড়ুন : দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি রত্নাকে, শোভনের “ঘর ওয়াপসি” আটকাতে মরিয়া বিজেপি

 

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest