জন্মাষ্টমী হিন্দুদের কাছে অত্যন্ত প্রিয় আর পবিত্র একটি তিথি। এই তিথিতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ জন্ম নেন। গোটা ভারতে এই দিনটি খুব পবিত্রতার সঙ্গে পালন করা হয়। এই বছর অর্থাৎ ২০২০ সালে জন্মাষ্টমী তিথিও খুব সুন্দর করে পালন করা হবে মথুরা বা বৃন্দাবনে। করোনার এই সময়ে কৃষ্ণের আশীর্বাদ আমাদের বড়ই প্রয়োজন।
আমরা জানি যে জন্মাষ্টমী পুজো হয়ে থাকে মূলত রাতে। ১১ই অগস্ট রাত ১১.২০ থেকে রাত ১২.০৪, যা ১২ই অগস্টের মধ্যে চলে আসছে, এই সময়টা সবচেয়ে ভালো। এই ৪৪ মিনিটের সময়ই সবচেয়ে পবিত্র। ১২ অগস্ট সকাল ১১.১৬ এর মধ্যে পারণ তিথি পড়ে যাচ্ছে, মানে অষ্টমী তিথি ছেড়ে যাচ্ছে। যেহেতু শ্রীকৃষ্ণ রাতে জন্ম নেন, তাই রাতে এই পুজো করা সবচেয়ে ভালো। ১২ই অগস্ট হল নন্দ উৎসব।
শ্রীকৃষ্ণ সম্পর্কে জন্মাষ্টমীর আগে জেনে নিন কিছু তথ্য।
* শ্রীবিষ্ণুর অষ্টম অবতার হলেন কৃষ্ণ। দ্বাপরযুগে তাঁর জন্ম হয়।
* জৈন ধর্মের ২২তম তীর্থঙ্কর আরিশটা নেমিনাথ শ্রীকৃষ্ণের সম্পর্কে ভাই ছিলেন বলে মনে করা হয়।
* ৩১১২ খৃস্টপূর্বাব্দে শ্রীকৃষ্ণের জন্ম হয় বলে বিশ্বাস।
* শ্রীকৃষ্ণ শ্যামবর্ণ ছিলেন বলে কথিত আছে। তবে পুরাণে উল্লেখ পাওয়া যায় যে তাঁর গায়ের রং ছিল বর্ষার মেঘের মতো।
* জন্মের রাতেই তাঁকে কংসের কারাগার থেকে গোকূলে নন্দের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে নন্দ ও যশোদার সন্তান হিসেবে প্রতিপালিত হন তিনি।
আরও পড়ুন: Happy Janmashtami 2020: সামনেই জন্মাষ্টমী, জানুন শুভক্ষণের খুঁটিনাটি
* কৃষ্ণই যে বড় হয়ে তাঁকে হত্যা করবেন, সেই বিষয়ে অবগত ছিলেন কংস। সেই কারণে কৃষ্ণের জন্মের আগেই দেবকী ও বসুদেবকে কারাগারে নিক্ষেপ করেন তিনি। দেবকীর গর্ভের একের পর এক সন্তানের জন্মমাত্রই তাদের হত্যা করেন তিনি। ছোট্ট কৃষ্ণকেও নানা ভাবে হত্যার চেষ্টা করেন কংস। একের পর রাক্ষস ও অসুরকে কৃষ্ণ বধের উদ্দেশ্যে গোকূলে পাঠান তিনি। কিন্তু প্রতিবারই ব্যর্থ হতে তাঁর পাঠানো মৃত্যুদূতদের।
* শ্রীবিষ্ণুর ষষ্ঠ অবতার পরশুরাম কৃষ্ণকে সুদর্শন চক্র দিয়েছিলেন বলে পুরানে উল্লেখ পাওয়া যায়। এই বিষয়ে গল্পটি হল নিম্নরূপ —
পুরাণমতে পরশুরাম চিরঞ্জীবী বা অমর। সত্যযুগ থেকে শুরু করে ত্রেতা ও দ্বাপর যুগেও পরশুরামের উপস্থিতির কাহিনি পাওয়া যায়। ত্রেতাযুগে সীতার স্বয়ংবর সভায় যখন রাম হরধনু ভঙ্গ করে ফেলেন তখন রুষ্ট হয়ে তাঁকে শাস্তি দিতে মহেন্দ্র পর্বত থেকে সেখানে উপস্থিত হন পরশুরাম।
কিন্তু বিষ্ণুর আর এক অবতার রামের আসল প্রকৃতি জানতে পেরে তাঁকে সম্মান প্রদর্শন করেন তিনি। সেই সময় রাম তাঁকে সুদর্শন চক্রটি গচ্ছিত রাখতে অনুরোধ করেন। তিনি বলেন যে দ্বাপর যুগে তিনি যখন আবার জন্ম নেবেন, তখন যেন পরশুরাম সেটি ফিরিয়ে দেন। দ্বাপর যুদে শ্রীকৃষ্ণের রূপ ধরে বিষ্ণু ধরাধামে অবতীর্ণ হলে ধর্ম রক্ষা করার জন্য তাঁকে সুদর্শন চক্রটি ফিরিয়ে দেন পরশুরাম।
* শ্রীকৃষ্ণের ধনুকের নাম ছিল সরঙ্গ, তাঁর খড়গের নাম ছিল নন্দক, তাঁর গদার নাম ছিল কৌমুদকী এবং তাঁর শঙ্খের নাম ছিল পাঞ্চজন্য।
আরও পড়ুন: কেন শিবের ত্রিশূলে বাঁধা ডমরু? কিসের প্রতীক এটি? জেনে নিন এই শ্রাবণে…