নয়াদিল্লি: ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৪০ হাজার পেরিয়ে গিয়েছে। রাজধানী দিল্লিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৪১২২। মৃত্যু হয়েছে ৬৪ জনের। এতদিন লকডাউন তোলার বিরোধিতা করে এলেও এবার নিজেই লকডাউন তোলার পক্ষে সওয়াল করলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। জানালেন, দিল্লিতে এবার লকডাউন তোলার সময় হয়েছে। তবে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে দিল্লিবাসীকে।
রবিবার সাংবাদিক সম্মেলনে কেজরিওয়াল বলেন, “দিল্লি সরকার লকডাউন তুলতে তৈরি। বাকিটা আমাদের করোনাকে সঙ্গে নিয়েই বাঁচতে হবে। কন্টেইনমেন্ট জোন ছাড়া বাকি এলাকায় লকডাউন শিথিল করা হবে।” কিছু পরিষেবা ও কল-কারাখানা খোলা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে সেইসঙ্গে বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলারও নির্দেশ দিয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী।
কেজরিওয়াল বলেন, “হাসপাতাল ও টেস্টিং কিটের হিসেবে আমরা তৈরি আছি। আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি সব কন্টেইনমেন্ট এলাকাগুলি সিল করা থাক। বাকি এলাকাগুলিকে গ্রিন জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হোক। জোড়-বিজোড় নীতিতে দোকান খোলা যেতে পারে। এমনকি লকডাউন পুরো তুলে নেওয়ার পরেও যদি কিছু সংক্রমণ হয়, তা ভালভাবে সামলাতে আমরা তৈরি।”
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী জানান, বর্তমানে গণ পরিবহণ বন্ধ থাকবে। কিন্তু প্রাইভেট দু’চাকা, চারচাকার গাড়ি চলতে পারে। দু’চাকার গাড়িতে একজন ও চারচাকার গাড়িতে দু’জনের বেশি থাকবেন না। বেসরকারি অফিসও খোলা যাবে। তবে ৩৩ শতাংশের বেশি কর্মচারী যেন একসঙ্গে না থাকেন সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এই বেসরকারি অফিসের মধ্যে আইটি সেক্টর ও ই-কমার্স সংস্থাগুলিকেও হিসেব করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: করোনা ত্রাণ তুলতে ‘ডিনার ডেট’-এর অফার দিচ্ছেন এই টেনিস সুন্দরী, যেতে পারবেন আপনিও
বিয়ে বা শ্রাদ্ধের মতো সামাজিক অনুষ্ঠানেও ছাড় দিয়েছে দিল্লি সরকার। কিন্তু বিয়েতে ৫০ জনের বেশি ও শ্রাদ্ধে ২০ জনের বেশি ব্যক্তি যেন উপস্থিত না থাকেন তার নির্দেশ দিয়েছেন কেজরিওয়াল। তিনি জানান, লকডাউন উঠলেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
২৪ মার্চ দেশজুড়ে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য কেন্দ্রে মোদী সরকারেরও প্রশংসা করেছেন কেজরিওয়াল। তিনি বলেন, “দেশজুড়ে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়া সেই সময় খুবই জরুরি ছিল। যদি সেটা না করা হত তাহলে এই সময়ে দেশের অবস্থা ভয়ঙ্কর হত। সেইসময় আমাদের দেশ করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রস্তুত ছিল না। আমরা সামাজিক দূরত্বের মানে জানতাম না। হাসপাতালগুলিও তৈরি হয়নি। পিপিই কিট ও টেস্টিং কিটও ছিল না আমাদের কাছে।”
লকডাউনের ফলে রাজ্যের অর্থনৈতিক অবস্থা অনেকটা ধাক্কা খেয়েছে বলেই এদিন জানান অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তিনি বলেন, “আমরা লকডাউন আর চালিয়ে যেতে পারব না। কারণ অর্থনীতি বিশাল ধাক্কা খেয়েছে। গত বছর এপ্রিল মাসে রাজ্যের রাজস্ব বাবদ আয় ছিল ৩৫০০ কোটি টাকা। সেটা এ’বছর এপ্রিল মাসে হয়েছে ৩০০ কোটি টাকা। কী ভাবে সরকার কাজ করবে?”
আগামীকাল থেকে তৃতীয় পর্যায়ের লকডাউন শুরু হচ্ছে দেশে। আপাতত ১৭ মে পর্যন্ত করা হয়েছে এই লকডাউনের মেয়াদ। অবশ্য রেড জোন ও কন্টেইনমেন্ট জোন বাদ দিয়ে বাকি জায়গায় কিছু পরিষেবা শুরু করা হয়েছে। সেই পরিষেবা আরও কিছুটা বাড়ানোর আবেদন জানালেন কেজরিওয়াল।
আরও পড়ুন: বাংলার রেড জোনেও খুলছে মদের দোকান! জেনে নিন খুঁটিনাটি