নয়াদিল্লি: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডাকে সারা দেশে জারি লকডাউন। টানা লকডাউনের জেরে তলানিতে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি। এই চরম সংকট থেকে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। তাই ঘুরে দাঁড়ানোর উপায় খুঁজতে এবার প্রধানমন্ত্রীর মোদীর সঙ্গে বৈঠক করলেন দেশের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।
জনতা কার্ফুর পর ২৫ মার্চ টানা ২১ দিনের লকডাউন ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তারপর দেশে সংক্রমণের পরিস্থিতি মাথায় রেখে ১৪ এপ্রিল লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেন নমো। আপাতত দেশে ৩ মে পর্যন্ত জারি রয়েছে লকডাউন। লাগাতার লকডাউনের জেরে বন্ধ দেশের বড় বড় সমস্ত শিল্প। দেশের আয়ের সব রাস্তাই বন্ধ। যার দরুণ যথেষ্ট উদ্বেগে দেশের অর্থ মন্ত্রক। এই পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দেওয়া যায় তা নিয়েই বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী সীতারামন।
আরও পড়ুন: করোনায় আক্রান্ত পিৎজা ডেলিভারি বয়, দিল্লিতে ৭২ পরিবার কোয়ারেন্টাইনে
সূত্রের খবর, দ্বিতীয় দফার আর্থিক প্যাকেজ নিয়েই বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। লকডাউনের মধ্যেই ২০ এপ্রিল থেকে গ্রামীণ এবং শিল্প ও নির্মাণ ক্ষেত্রে কাজ শুরু করার ব্যাপারে বেশ কিছু ছাড় দেওয়ার কথা বুধবারই ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। সম্ভব হলে সেই ছাড় চালু হওয়ার আগেই আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করে ফেলতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার।
অর্থ মন্ত্রকের কর্তাদের বক্তব্য, প্রথম দফায় মূলত গরিব, প্রান্তিক মানুষকে সুরাহা দিতে ১.৭ লক্ষ কোটি টাকার গরিব কল্যাণ প্রকল্প ঘোষণা হয়েছিল। এ বার আর্থিক প্যাকেজের লক্ষ্য হবে মূলত ছোট-মাঝারি শিল্প, বিমান, পর্যটন, হোটেল-রেস্তরাঁর মতো ক্ষেত্র, যেখানে করোনার ধাক্কা সব থেকে বেশি লেগেছে। তবে একবারে সমস্ত আর্থিক দাওয়াই ঘোষণা না-করে অর্থ মন্ত্রক ধাপে ধাপে এগোতে চাইছে। পাশাপাশি, এখনই বড় মাপের নীতিগত সিদ্ধান্ত বা কঠোর আর্থিক সংস্কারও করতে চাইছে না কেন্দ্র।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন, আর্থিক প্যাকেজের পরিমাণ জিডিপি-র ৬ শতাংশ করা হোক। অর্থাৎ, প্রায় ১২ লক্ষ কোটি টাকা। কিন্তু গরিব কল্যাণ প্যাকেজের পরিমাণ জিডিপি-র ১ শতাংশও নয়। কংগ্রেসেরও একই দাবি। অর্থ মন্ত্রক সূত্রের খবর, আর্থিক প্যাকেজের মোট পরিমাণ জিডিপি-র ৩ থেকে ৩.৫ শতাংশের মধ্যে থাকবে। এর বেশি অর্থ ঢালতে হলে রাজকোষ ঘাটতি মাত্রাছাড়া হয়ে পরিস্থিতি নাগালের বাইরে চলে যেতে পারে।
সরকারি সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রী অর্থনীতির সার্বিক পরিস্থিতি নিয়েও অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেন। সম্প্রতি সরকারের বিভিন্ন টাস্ক ফোর্স ও ক্ষমতাসম্পন্ন গোষ্ঠীগুলির সঙ্গেও মত বিনিময় করেছেন মোদী। এদিন রাহুল গান্ধী দাবি তুলেছেন, আয়ের দিক থেকে নীচের সারিতে থাকা ২০ শতাংশ মানুষকে নগদ টাকা দেওয়া হোক। অর্থ মন্ত্রকের খবর, ন্যূনতম আয়ের মতো কোনও প্রকল্পের কথা পরের ধাপে ভাবা হবে। আপাতত ছোট-মাঝারি শিল্পের দিকেই বেশি নজর দেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: Lockdown 2.0: খিদে মেটাতে শ্মশানের ‘পচা’ কলা খাচ্ছে পরিযায়ী শ্রমিকরা