একের পর এক দলের গোপন বৈঠকের তথ্য চলে আসছে প্রকাশ্যে। যা নিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে গেরুয়া শিবিরকে। সেই কারণেই এবার মুরলীধর সেন লেনে রাজ্য বিজেপি সদর দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করল দল। ওই সিঁড়ির মুখে একটি লোহার গেটও বসানো হয়েছে। দেওয়ালে লেখা হয়েছে, সাংবাদিক প্রবেশ নিষিদ্ধ। গেটের সামনেই রয়েছেন একজন নিরাপত্তারক্ষা ৷ বিশেষ অনুমতি ছাড়া তাঁকে এবং ওই লোহার গেট টপকে আর উপরে ওঠা সম্ভব নয় ৷ সাংবাদিকদের ঠেকাতেই এই ব্যবস্থা ৷
কেন এমন পোস্টার? তার অবশ্য কোনও সদর্থক উত্তর পাওয়া যায়নি বুধবার রাজ্য নেতাদের কাছে। তবে জানা গিয়েছে, নতুন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের নির্দেশেই এই লোহার দরজা এবং সাংবাদিকদের প্রবেশের নতুন নিয়ম। সদ্য লোকসভার অধিবেশনে যোগ দিতে দিল্লি যাওয়ার আগেই নাকি সুকান্ত এই নির্দেশ দেন এবং তার পরেই এই উদ্যোগ।
বিজেপি দফতরে সাংবাদিকদের অবারিত দ্বার ছিল বরাবরই। সেটা সদ্য প্রাক্তন হওয়া রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের আমলেও ছিল। অতীতে বিষ্ণুকান্ত শাস্ত্রী, তপন সিকদার, তথাগত রায়রা রাজ্য সভাপতি থাকার সময়েও গোটা বাড়িতে সাংবাদিকদের আড্ডার পরিসর ছিল। কিন্তু এখন আর সেটা থাকবে না। জানা গিয়েছে, নতুন নিয়মে একতলায় সংবাদমাধ্যমের জন্য নির্দিষ্ট ঘরেই সীমাবদ্ধ থাকবে সাংবাদিকদের যাতায়াত। একতলায় শুধু যুবমোর্চার দফতর রয়েছে আর সাংবাদিকদের বসার জায়গা।
আরও পড়ুন: নারকেল গাছ কাটা দেখতে গিয়ে বিপত্তি! নিউ টাউনে মৃত্যু ৯ বছরের শিশুর
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তীর নির্দেশেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে ৷ উল্লেখ্য, মঙ্গলবার রাতে বিজেপির একটি ভার্চুয়াল বৈঠক হয় ৷ সূত্রের দাবি, বৈঠকের মাঝখান থেকেই উঠে যান রাজ্যসভার সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্য়ায় ৷ সেই খবর পরে সংবাদমাধ্যমে চাউর হয়ে যাওয়াতেই ক্ষুব্ধ অমিতাভ ৷ তাঁর প্রশ্ন, এমন একটা গোপনীয় বিষয় সংবাদমাধ্যম জানল কীভাবে ? এরপরই দলীয় সদর কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রবেশের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি ৷
রাজ্য বিজেপি-র মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বিষয়টাকে এত গুরুত্ব দিয়ে ভাবার কিছু নেই। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে অতীতের মতোই সুসম্পর্ক থাকবে। তবে এখন দল বড় হয়েছে। কাজ বেড়েছে। কর্মীদের যাতায়াত বেড়েছে। অন্য দিকে, সংবাদমাধ্যমের সংখ্যাও বেড়েছে। কাজের সুবিধার জন্যই দোতলায় ভিড় কমানো দরকার।’’ তবে আর এক রাজ্য নেতা এই ব্যবস্থা প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আমাদের দফতরেই সবচেয়ে বেশি স্বাধীনতা পাওয়া যায়। সিপিএম বা তৃণমূল দফতরে কেউ এ ভাবে ঘুরে বেড়াতে পারেন না। এ বার আমরাও দলীয় কাজের গোপনীয়তা রক্ষার জন্য এই ব্যবস্থা করলাম।’’
আরও পড়ুন: ‘সিঁদুর নিয়ে ছেলেখেলা করিনি, বৈশাখীর মেয়েও আমার সন্তান; ‘শপথ’ নিয়ে বললেন শোভন