টুইটারকে তীব্র ভর্ৎসনা করল কেন্দ্র। ভারতে বাক্স্বাধীনতা নিয়ে তারা চিন্তিত। বৃহস্পতিবার সকালেই এ নিয়ে প্রশ্ন তুলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল টুইটার। এ বার তার পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিয়েছে সরকার। তারা জানিয়েছে, আন্দাজে কথা বলা বন্ধ করে আইন মেনে চলার চিন্তাভাবনা করুক টুইটার।
শুধু তাই নয়, বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র সম্পর্কে এ ধরনের মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে টুইটারকে। এক বিবৃতি জারি করে কেন্দ্রীয় বৈদ্যুতিন এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক জানিয়েছে, একটা সার্বভৌম দেশে নিজস্ব আইন এবং নীতি রয়েছে। টুইটার শুধুমাত্র একটা সমাজমাধ্যম। ভারতের আইনি নীতির কাঠামো কেমন হওয়া উচিত সেটা টুইটারের বলার অধিকার নেই। টুইটার যে ধরনের বিবৃতি দিয়েছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, মিথ্যা এবং ভারতের ভাবমূর্তি নষ্ট করার প্রচেষ্টা।
আরও পড়ুন : জল্পনাই সত্যি হল, রিয়াল মাদ্রিদের কোচের পদ থেকে ইস্তফা জিনেদিন জিদানের
কেন্দ্রের জারি করা নয়া ডিজিটাল আইন নিয়ে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ-সহ বেশ কিছু নেটমাধ্যম সরব হলেও টুইটার এত দিন কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি। তবে বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলে তারা। জানিয়ে দেয়, ভারতে বাক্স্বাধীনতার বিষয়টি নিয়ে তারা খুব চিন্তিত। সেই সঙ্গে এ দেশে তাদের কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগে রয়েছে তারা। বিশেষ করে সোমবার যে ভাবে দিল্লি পুলিশ টুইটারের অফিসে গিয়ে অভিযান চালিয়েছে তার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে একটা আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।
এর আগেই মোদী সরকার বলেছে ,ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকার কখনোই চূড়ান্ত নয়। হোয়াটসঅ্যাপে কোনও মেসেজের উৎস কোথায়, অর্থাৎ সেই বার্তাটি কে পাঠিয়েছেন, সেটা খুঁজে বের করতে হবে। আর এতেই বেঁকে বসেছে হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষে। তাদের দাবি, এর ফলে ব্যবহারকারী নাগরিকদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ক্ষুণ্ণ হবে। কারণ, তখন এন্ড টু এন্ড এনক্রিপশনের কোনও ভূমিকা থাকবে না।
Press Release by Ministry of Electronics and IT (@GoI_MeitY) in response to the statements made by Twitter Inc (@Twitter). pic.twitter.com/HhuDnAGBsU
— Live Law (@LiveLawIndia) May 27, 2021
এর উত্তরে অবশ্য কেন্দ্রের বক্তব্য খুব স্পষ্ট। তাদের দাবি, সরকার অবশ্যই দেশের নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য গোপন ও সুরক্ষিত রাখার পক্ষপাতী। কিন্তু তারও কিছু ‘সীমাবদ্ধতা’ আছে। আর তা ছাড়া সাংবিধানিক অধিকার কখনওই ‘চূড়ান্ত’ নয়।কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, ‘আইনি পরিকাঠামোয় কোনও মৌলিক অধিকার, এমনকী গোপনীয়তার অধিকারও শেষ কথা নয়। এরও কিছু যৌক্তিক সীমানা রয়েছে।’ বিশেষজ্ঞদের মতে, ভেঙে না বললেও ‘সীমানা’ বলতে এখানে তিনি হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজে সোর্স বা উৎসের খুঁজে বের করা সংক্রান্ত বিষয়টিকেই বুঝিয়েছেন।
টুইটারের এই দুটি মন্তব্যের প্রেক্ষিতেই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিয়েছে কেন্দ্র। টুইটারকে সতর্ক করেছে এ ধরনের আলটপকা মন্তব্য থেকে তারা যেন বিরত থাকে। সেই সঙ্গে সরকার এটাও জানিয়েছে, এ দেশে নেটমাধ্যমের সব কর্মীই সুরক্ষিত। তাঁদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তাও বিঘ্নিত হবে না। এর পরই সরকার বলেছে, ভারতের মতো একটি গণতান্ত্রিক দেশে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে বাক্স্বাধীনতার বিষয়টি চলে আসছে। এটা এ দেশের ঐতিহ্য।
টুইটার এ দেশের আইনি ব্যবস্থাকে ইচ্ছাকৃত ভাবে খাটো করে দেখানোর চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ তুলেছে কেন্দ্র। সেই সঙ্গে তারা জানিয়েছে, টুইটার-সহ সব সমাজমাধ্যমে সরকার দেশের সমস্ত নাগরিকের প্রশ্ন এবং সমালোচনা করার অধিকারকে সম্মান করে। পাশাপাশি তাঁদের গোপনীয়তার অধিকারকেও সম্মান করা হয়।
আরও পড়ুন : AbRam নাকি শাহরুখের বড় ছেলে আরিয়ানের পুত্র! জবাবে যা বলেছিলেন SRK