Reserve Bank Of India approves ₹2.11 lakh crore dividend payout to govt for 2023-24

Reserve Bank Of India: খালি কেন্দ্রের ভাঁড়ার, রেকর্ড পরিমাণ সাহায্য করে দেশকে খাদের কিনারায় নিয়ে গেল রিজার্ভ ব্যাংক

জল্পনা ছিল যে আগামী অর্থবর্ষে কেন্দ্রকে কয়েক লক্ষ কোটি টাকা অর্থ সাহায্য করতে চলেছে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (Reserve Bank of India)। বুধবার তাতে সিলমোহর দিল খোদ RBI। এদিন শীর্ষ ব্যাঙ্কের তরফে জানানো হল, ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে কেন্দ্রকে ২.১১ লক্ষ কোটি টাকা হস্তান্তর করতে চলেছে তারা। কেন্দ্রকে এবার যে অঙ্কের উদ্বৃত্ত দেওয়া হচ্ছে, তা সাম্প্রতিক অতীতে রেকর্ড। এর জেরে বিতর্ক দানা বাধছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের লভ্যাংশ বা সারপ্লাস গচ্ছিত থাকে দুঃসময়ের জন্য। জনমুখী প্রকল্প চালাতে গিয়ে ঘাটতি পূরণে সেই টাকায় হাত পড়াকে ভালো চোখে দেখছেন না অর্থনীতিবিদরা।

কদিন আগেই এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম দাবি করেছিল, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (Reseve Bank) কেন্দ্রকে এবার যে অঙ্কের সারপ্লাস দিতে চলেছে, তা সাম্প্রতিক অতীতে রেকর্ড। সেই অঙ্কটা হতে পারে ১ লক্ষ কোটি টাকা বা তার বেশি। সত্যিই তাই ঘটল। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের তুলনায় ১৪০ শতাংশ বেশি লভ্যংশ দেওয়া হচ্ছে মোদি সরকারকে। গতবার যেখানে ৮৭, ৪১৬ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল, সেখানে এবার দেওয়া হচ্ছে ২, ১০, ৮৭৪ কোটি টাকা।

রিজার্ভ ব্যাঙ্কের লভ্যাংশ অর্থাৎ সারপ্লাস দেশের জন্য লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মতোই। এই গচ্ছিত টাকা মূলত রাখা থাকে দুঃসময়ের জন্য। দুর্ভিক্ষ, যুদ্ধ বা মহামারীর মতো আপাৎকালীন পরিস্থিতিতে সরকার সংকটে পড়লে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সঞ্চয় কাজে আসে। বিদেশি মুদ্রার সংকট তৈরি হলেও এই রিজার্ভ ব্যাবহার করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক অতীতে একাধিকবার কেন্দ্রের মোদি সরকার তেমন কোনও সংকটের পরিস্থিতি না থাকা সত্ত্বেও আরবিআইয়ের সারপ্লাসে হাতে দিয়েছে। যা মোটেই অর্থনীতির জন্য ভালো বিজ্ঞাপন নয়।

আসলে ভোটের আগে শেষ বাজেটে একাধিক জনকল্যাণমুখী প্রকল্প ঘোষণা করেছে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার। বিশেষ করে ৮০ কোটি মানুষকে নিয়মিত রেশন দেওয়ার যে প্রকল্প বাজেটে ঘোষণা করা হয়েছে সেই প্রকল্পের জন্য মোটা অঙ্কের অর্থ প্রয়োজন। মনে করা হচ্ছে সেই প্রকল্পের খরচ জোগাতেই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এই ভাণ্ডারে হাত দিতে হচ্ছে কেন্দ্রকে।

এর আগে অব্দি কেন্দ্র সরকার দ্বারা সর্বোচ্চ ৫০-৫৫ হাজার কোটি টাকা অবধি ডিভিডেন্ড হিসেবে RBI থেকে নেওয়ার ইতিহাস পাওয়া যাচ্ছে। এমনকি বাংলাদেশ মুক্তি যুদ্ধের সময়ে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী যখন RBI থেকে প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকা নেওয়ার সরকারী আর্জি জানান, ভারতের সর্বোচ্চ ব্যাঙ্ক RBI সেই আর্জি সোজাসুজি প্রত্যাখান করেন এবং সে সময়ের কেন্দ্র সরকার তা মেনেও নিয়েছিল।

অর্থনীতিবিদ শ্রী বিজয় ঘোরপাড়ে এক নিবন্ধে জানিয়েছেন, ‘ডক্টর মনমোহন সিং এর প্রধানমন্ত্রীত্বের আট বছর (২০০৬-২০১৪) বনাম মোদি জমানার আট বছর (২০১৪- ২০২২) তথ্যের নিরিখে তুলনা করে দেখলেই স্পষ্ট প্রমাণিত হয় যে, ডক্টর মনমোহন সিং এর নেতৃত্বকালীন সরকার RBI থেকে যেখানে নিয়েছে মাত্র ১,০১,৬৭৯ কোটি টাকা, মোদি সরকার সেখানে নিয়েছে ৫,৭৪,৯৭৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ ৫ গুণের থেকেও বেশি! পাশাপাশি তথ্য বিচারে এটাও প্রশ্ন উঠছেই যে ২০১৪ অবধি যে ভারতের বৈদেশিক ঋণ ছিল প্রায় ৫৫ হাজার কোটি টাকা, সেখানে গত দশ বছরের মোদি জমানায় এই বোঝা প্রায় চারগুণ বেড়ে যখন ২লক্ষ ৫ হাজার কোটি টাকা হল, তখন এত নোটবন্দী, GST, ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ আর ‘সবকা বিকাশ’ গলাবাজি করা মোদি সরকারের হাতে ভারতের অর্থনৈতিক উন্নতিই বা কি হল, আর কোথায় বা হল!!??’