বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) নেতৃত্বে বিধানসভা থেকে ওয়াকআউট করেছিলেন বিজেপির বিধায়করা। কিছুক্ষণের মধ্যেই অধিবেশনে নিজের বক্তব্যে রাখলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। নাম না করেই শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যের প্রবল বিরোধিতা করলেন তিনি। । মুখ খুললেন বিরোধীদের ভোট হিংসার অভিযোগ নিয়েও। নজিরবিহীন ভাবে বিজেপি-কে আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাদের ‘ল্যাজ ছাড়া হনু’ বলে কটাক্ষ করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন : ঝুলন গোস্বামীর বায়োপিকে অভিনয় করবেন অনুষ্কা শর্মা, কাজ শুরু হতে পারে বছর শেষে
বিজেপির ওয়াকআউট নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, “আমাকে মুখ খুলিয়ে লাভ নেই। মেদিনীপুরে ঘরে ঘরে গেলে মানুষ উত্তর দেবেন। বিজেপির কথায় সভ্যতা, সংস্কৃতি নেই।” নাম না করেই বিরোধী দলনেতার উদ্দেশ্যে তাঁর তোপ, “বিধানসভায় নিজের প্রচার করতে এসেছেন।চিৎকার করেছেন, কারও বক্তৃতা শোনেননি। ১ মিনিট নিজের কথা বলে মিডিয়ায় মুখ দেখাতে গেছেন।”
বিধানসভা সূত্রে খবর, এদিন তৃণমূলের হয়ে রাজ্যপালের ভাষণের ওপর যাঁরা বক্তব্য রাখছেন, তাদের বক্তব্য শুরু হলেই অধিবেশন কক্ষ ত্যাগ করছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি শুধু বিজেপি বিধায়কদের বলার সময়েই হাজির থাকছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিকের বলার সময় মাঝপথে তিনি যদিও আসেন। পার্থ ভৌমিক কথার মধ্যে শিশির অধিকারীর নাম নিলে তাই নিয়ে হই হট্টোগল শুরু হয়। স্পিকার বিষয়টি রেকর্ডে থাকবে না বাদ যাবে তা নিয়ে বিবেচনা করবেন বলে জানান। শুভেন্দু অধিকারী বলার সুযোগ পেতেই নন্দীগ্রামের ভোটের ফল নিয়ে মত দিতে থাকেন। স্পিকার তাঁকে স্পষ্ট বলেন, বিচারাধীন বিষয়ে মন্তব্য করা যাবে না। এসব রেকর্ডেও থাকবে না। শুভেন্দুরা তখনই ওয়াকআউট করেন।
মুখ্যমন্ত্রী নিজে বলতে উঠে সেই নাম না করে সেই প্রসঙ্গেরই অবতারণা করেন। বলেন, আমি যেখানে লড়েছিলাম ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। পুলিশ, প্রশাসনকে বদল করা হয়েছে। জায়গার নাম বলব না, বিষয়টা বিচারাধীন।৩ ঘণ্টা লোডশেডিং করে রেখেছি। নির্বাচন কমিশনের মদত ছাড়া ৩০ আসন পেত ন বিজেপি। বিজেপি ভোট পরবর্তী হিংসার কথা টেনেছে। প্রত্যুতরে শাসক দলের সুপ্রিমো শীতলকুচি কাণ্ডের কথা নিয়ে এলেন।তাঁর প্রশ্ন, বুথের ভিতর গুলি কীভাবে? তিনি বলেন, শীতলকুচিকাণ্ডের তদন্ত চলছে। ৩ মাস বাংলায় কী করা হয়াছিল বলতে চাই না।
মমতা বলেন, “বিজেপি-র সঙ্গে এর আগেও কাজ করেছি। অটলবিহারী বাজপেয়ী, সুষমা স্বরাজ, রাজনাথ সিংহদেরও দেখেছি। কিন্তু এখন বিজেপি খায় না মাথায় দেয় কেউ জানে না।” এর পরই তাঁর মন্তব্য, ‘‘এই বিজেপি ল্যাজ ছাড়া হনু।’’ রাজ্যপাল কেন্দ্রীয় সরকার মনোনীত। অথচ তাঁকে বলতে দেওয়া হল না বলেও অভিযোগ তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তৃণমূলের বিরুদ্ধে মিথ্যা এবং কুৎসার ঝড় তোলা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন মমতা।
মঙ্গলবার মমতার বক্তব্যে উঠে এসেছে নির্বাচনের প্রসঙ্গও। কী ভাবে ভোটের আগে জেলাশাসক, পুলিশ সুপারদের বদলি করা হয়েছে তা নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন মমতা।
ফের বহিরাগত প্রসঙ্গ টেনে তৈাঁর মন্তব্য, “বাংলাকে বহিরাগতদের আখড়া বানিয়ে ফেলেছিল। কিন্তু বাংলার মানুষ বহিরাগতদের মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছে।” বাংলার মেরুদণ্ড ভাঙা অত সহজ নয় বলেই পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
সব মিলিয়ে দ্বিতীয় দিনে টানটান নাটক দেখতে পেল রাজনীতিপ্রেমীরা। নেতারা অবশ্য বলছেন পিকচার আভি বাকি হ্যায়।
আরও পড়ুন : অফলাইন ক্লাস শুরু ভাবনা, একাধিক রাজ্যের বিধি মেনে খুলছে স্কুল