পার্ক সার্কাসের ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথ থেকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ। রাস্তা মেরেকেটে ৬ কিলোমিটারের। অথচ সেই দূরত্ব যেতেই ৯ হাজার টাকা দাবি করে বসল অ্যাম্বুল্যান্স চালক। দাবি মতো টাকা দিতে না পারায় অ্যাম্বুল্যান্স থেকে করোনা আক্রান্ত ৯ মাসের শিশু এবং সাড়ে ৯ বছরের বালককে তাদের মায়েদের সঙ্গে নামিয়ে দেওয়া হয়। এক চিকিৎসকের মধ্যস্থতায় নিরুপায় রোগীকে শেষ পর্যন্ত মেডিক্যাল কলেজে পৌঁছে দেন অন্য এক চিকিৎসক।
শুক্রবার রাতে এমনই মারাত্মক অভিজ্ঞতা হল হুগলির ঝিকিরার বাসিন্দা শ্যামল পালের। শনিবার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের সুপার স্পেশ্যালিটি ব্লকের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি বলছিলেন রাতের অভিজ্ঞতা।
আরও পড়ুন: LIC-তে Insurance Adviser পদে নিয়োগ হচ্ছে , নিয়ম জেনে আবেদন করুন
শ্যামলের কথায়, ‘‘আমার ছেলে শুভজিৎ। সাড়ে ৯ বছর বয়স। গত সপ্তাহের শেষের দিক থেকে শরীর খারাপ হয় তার। শ্বাসকষ্ট সঙ্গে পেট ব্যথা। সোমবার নিয়ে আসি কলকাতায়। পার্ক সার্কাসে একটি বেসরকারি শিশু হাসপাতালে ভর্তি করি।”
শ্যামলের দাবি, ‘‘ওই অ্যাম্বুল্যান্সটি রোগী নামিয়ে দিতেই আমরা চালককে বলি মেডিক্যাল কলেজে যাবেন কি না? চালক রাজি হন। আর এক জনও অ্যাম্বুল্যান্স খুঁজছিলেন। এই অ্যাম্বুল্যান্সটা বড়। তাই তাঁর শিশুকে নিয়েও উঠে পড়েন ওই ব্যক্তির স্ত্রী। কাছেই যাব। কত টাকা আর চাইবে? এটা ভেবেই আমরা আর ভাড়ার কথা বলিনি।”
অ্যাম্বুল্যান্সের চালক রোগী পিছু ৬ হাজার টাকা চান। অর্থাৎ দুই রোগী মিলিয়ে ১২ হাজার টাকা। শ্যামলের দাবি, তিনি সঙ্গে সঙ্গে বলেন যে অত টাকা দিতে পারবেন না। অন্য শিশুর বাবাও বলেন ওই বিশাল পরিমাণ টাকা তিনিও দিতে পারবেন না। অ্যাম্বুল্যান্স চালক দরাদরি করে ৯ হাজার টাকা চান শেষ পর্যন্ত। কিন্তু তাতে শ্যামলরা রাজি না হওয়ায় রীতিমতো গালিগালাজ করেন অ্যাম্বুল্যান্স চালক, এমনটাই অভিযোগ। দুই নাবালক রোগী এবং তাদের মায়েদের হাত ধরে টেনে নামিয়ে দেওয়া হয় অ্যাম্বুল্যান্স থেকে। শত অনুনয় অনুরোধেও ওই টাকার কমে রোগী পৌঁছতে অস্বীকার করেন ওই চালক।
বেসরকারি হাসপাতালের এক চিকিৎসক উদ্যোগী হয়ে একটি অ্যাম্বুল্যান্স জোগাড় করে দেন। সেই অ্যাম্বুল্যান্সের চালকের আবার কোভিড রোগী পরিবহনের জন্য প্রয়োজনীয় পিপিই কিট নেই। মোশারফ আলি গাজি নামে ওই চালকের বাড়ি হাসপাতালের পাশেই লোহাপুলে।
তিনি জানান ,‘‘ডাক্তারবাবু বললেন, অল্প সংক্রমণ দু’জনের। রোগী বা সঙ্গের আত্মীয়দের খুব কাছে না গেলে ভয় নেই। তাই আমি খালি মাস্ক পরেই পৌঁছে দিই।” মোশারফের দাবি তিনি ২ হাজার টাকা নিয়েছেন দুই রোগীকে পৌঁছে দিতে।
আরও পড়ুন: করোনার কারণে পার্লার যেতে ভয় পাচ্ছেন? রইল বাড়িতে ফেসিয়াল করার পদ্ধতি…