সংসদে মোদী সরকারের তীব্র সমালোচনা করলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। এদিন মোদী সরকারের গণতন্ত্র বিরোধী নীতি নিয়ে তিনি সরাসরি খোঁচা দেন। একই সঙ্গে দেশের বিচার ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মহুয়া। রাখ ডেষ্ক না করে তিনি বলে দেশের বিচার ব্যবস্থাকে এখন আর পবিত্র বলা যায় না। তার সপক্ষে যুক্তিও দেন তিনি। নাম না করে তিনি রাজ্যসভার বর্তমান সাংসদ এবং দেশের প্রাক্তন বিচারপতির প্রসঙ্গ তোলেন।
সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সম্পর্কে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বক্তব্যের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করছে না কেন্দ্র। একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের দাবি, মহুয়ার বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হবে না বলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদী সরকার।
আরও পড়ুন: ১৫-১৬ মার্চ দেশ জুড়ে ধর্মঘট, টানা ৪ দিন বন্ধ ব্যাঙ্ক, ভোগান্তির আশঙ্কা
বাজেট অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর আলোচনার সময় কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া টেনে আনেন দেশের বিচারব্যবস্থা প্রসঙ্গ। পরে টুইটারে সেই বক্তব্যের অংশ বিশেষ তুলে ধরেন মহুয়া।
তিনি লেখেন, ‘দেশের বিচারব্যবস্থা পবিত্র নেই। যে দিন শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি নিজেই নিজের বিরুদ্ধে ওঠা যৌন হেনস্থার অভিযোগের বিচার করেছেন, সেই দিন থেকে ভারতীয় বিচার ব্যবস্থার পবিত্রতা নষ্ট হয়েছে। নিজেকে দোষমুক্ত ঘোষণা করা এবং অবসর নেওয়ার তিন মাসের মধ্যে রাজ্যসভার সাংসদ হিসাবে নিজের মনোনয়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, পেয়েছেন জেড ক্যাটেগরির নিরাপত্তা’।
The sacred cow that was the judiciary is no longer sacred. It stopped being sacred day a sitting CJI was accused of sexual harassment, presided over own trial, cleared himself & accepted a nomination to Upper House within 3 months of retirement replete with Z+ security cover pic.twitter.com/ODFn2pd2Z1
— Mahua Moitra (@MahuaMoitra) February 9, 2021
আগের অনেকগুলি ভাষণের মতো মহুয়ার এদিনের ভাষণও ভাইরাল হয় নেটমাধ্যমে। কেন্দ্রীয় সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী জানান, মহুয়ার মন্তব্যের জন্য তাঁর বিরুদ্ধে ‘স্বাধিকার ভঙ্গের প্রস্তাব’ আনা হতে পারে। কারণ, তিনি প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈকে আক্রমণ করেছেন বলে জোশীর দাবি।
সোমবার সন্ধ্যায় জোশী এ কথা জানালেও, মঙ্গলবার একেবারে উল্টো অবস্থান নিল কেন্দ্রীয় সরকার। যদিও মহুয়া নিজের অবস্থান থেকে নড়তে নারাজ। তাঁর বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের অভিযোগ আসতে পারে জেনেও একের পর এক টুইটে মঙ্গলবার নিজের পক্ষে যুক্তি দিয়েছেন তিনি।
আসলে এমনিতেই বিজেপির মুখোশ খুলে গিয়েছে। গণতন্ত্রের সঙ্গে যা খুশি করা যায়, এই ‘মোদীও’ নীতি আপাতত ধাক্কা খেয়েছে। নেপথ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা বদল। যে ট্রাম্পের বলে আরএসএস এবং মোদী বাবু স্বয়ং নাচছিলেন, তা ধাক্কা খেয়েছে। একইভাবে সিএএ ও এনআরসির বিরুদ্ধে দেশজুড়ে আলোড়ন হয়েছিল, কিন্তু মোদীর পাত্তা দেয়নি। কারণ তখন মার্কিন কুর্সিতে ছিলেন ট্রাম্প।
বিজেপি যে মহুয়া মিত্রের বিরুদ্ধে দলের নেতাদের লেলিয়ে দেয়নি তার কারণ রয়েছে। বিদেশের চোখে যে ভাবমূর্তিটি এখনও বেঁচে রয়েছে, সেটি মোদী সরকার নষ্ট করতে চাইছে না। তাছাড়া তাদের রাজ্যসভার সাংসদ, তথা প্রাক্তন প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে কথা উঠলে, আখেরে জল কোনদিকে গড়াবে তার ঠিক নেই। ফলে মহুয়ার ভাষণ কার্যত হজম করতে বাধ্য হয়েছে বিজেপি।
আরও পড়ুন: লঞ্চ হয়েছে রিয়েলমি এক্স সিরিজের দু’টি নতুন মডেল, জেনে নিন অসাধারণ ফিচার