বনগাঁর গোপালনগরে প্রশাসনিক সভা থেকে এনআরসি ইস্যুতে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্পষ্ট হুঁশিয়ারি, ‘‘এ রাজ্যে বসবাসকারী সবাই নাগরিক। মতুয়ারা এ দেশের নাগরিক। এখানে এনআরসি করতে দেব না।’’ একই সঙ্গে হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মদিনে রাজ্যে সরকারি ছুটির ঘোষণাও করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ওরা (বিজেপি) বলছে এনআরসি ও এনপিআর বলবৎ করা হবে। নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে ওরা আপনার ঠাকুরদার বার্থ সার্টিফিকেট চাইবে। আমি জানি না আমার মা কবে জন্মেছিলেন। আগে এমনই চলত সব কিছু। শিশু প্রসব হত বাড়িতে। তাই মানুষ সার্টিফিকেট পেত না। যাঁরা বাংলায় থাকেন, তাঁরা সকলেই বাঙালি এবং নাগরিক।’
আরও পড়ুন: অমিত-কথাতেও অটল কৃষকেরা, কেন্দ্রের সঙ্গে ষষ্ট বৈঠক বাতিলের ঘোষণা, খসড়া পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ
মমতা বলেন, ‘আমি বাংলাকে গুজরাত হতে দেব না। গুজরাত ও গান্ধীর জন্য আমার শ্রদ্ধা রয়েছে, কিন্তু বাংলা বাংলাতেই থাকবে। এ ব্যাপারে আমরণ আমি সংগ্রাম চালিয়ে যাব।’
কৃষি আইনের বিরুদ্ধে বুধবার ফের সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এমন আইন কেন্দ্র তৈরি করেছে যে কৃষকদের সব ফসল নিয়ে চলে যাবে। আর কৃষক অভাবে কাঁদবে। আলুসিদ্ধ-ভাতও খেতে পাবেন না। সেই কারণেই সারা দেশে এই তিন আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলছে। কেন্দ্রকে বলছি, এই আইন প্রত্যাহার করুন।’’
সভার চলাকালীন দর্শকদের মধ্যে থেকে কয়েক জন কিছু একটা দাবি করেন মমতার কাছে। তাতে কিছুটা বিরক্ত হন মুখ্যমন্ত্রী। বেশ কিছুক্ষণ মমতাকে বক্তব্য থামিয়ে তাঁদের কথা শুনতে হয়। তাঁদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘এত এত লোক সভায় আসেন। তার মধ্যে ২-৪ জন একটা প্ল্যাকার্ড নিয়ে এসে সভার কাজে বাধা দেন। এটা হতে পারে না। আপনাদের কোনও দাবিদাওয়া থাকলে নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে জানান। উপায় থাকলে তার ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু এ ভাবে সভার কাজ ব্যাহত করবেন না।’’ এমনকী, মুখ্যমন্ত্রকী আক্ষেপ করে বলতে শোনা যায়, ‘‘কিছু মনে করবেন না, আপনাদের কয়েক জনের জন্য মন খারাপ হয়ে গেল।’’
আরও পড়ুন: হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মতিথিতে ছুটি, পাঠ্য বইতে তাঁদের জীবনী, বনগাঁর সভায় বললেন মমতা