তিন দিন পরে পুলিশের জালে আনন্দপুরের অভিযুক্ত, ঘটনার পরও ঘুরেছেন কলকাতায়

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

অবশেষে তিন দিনের মাথায় গ্রেফতার হল আনন্দপুরে যৌন হেনস্থা এবং খুনের চেষ্টার ঘটনায় অভিযুক্ত অভিষেককুমার পাণ্ডে। মঙ্গলবার রাতে কলকাতা পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা অভিষেকের গ্রেফতারির কথা স্বীকার করেছেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দমদমের একটি গেস্ট হাউস থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে অভিষেককে।

জানা গিয়েছে, অভিযুক্তের মাকে আনন্দপুর থানা এবং লালবাজারে দফায় দফায় জেরা করেই অভিষেকের খোঁজ পেয়েছে পুলিশ। এদিকে, অভিযোগকারী যুবতী যে ফ্ল্যাটে থাকেন তার কেয়ারটেকার জানিয়েছেন, শনিবার রাতে ঘটনার পর সেখানে আসেন অভিযুক্ত অভিষেক। তাঁর কাছে চাবি আর মোবাইল ফোন দিয়ে সেগুলি ওই যুবতীকে দিয়ে দেওয়ার কথা বলেন। বিভিন্ন রাস্তার সিসি টিভি ফুটেজ থেকে দেখা গিয়েছে, এর পর শহরেরই বিভিন্ন এলাকায় অভিষেক তাঁর হন্ডা সিটি গাড়ি নিয়ে ঘুরেছেন। পরদিন সকালে তিনি একটি ফ্ল্যাটের নীচে গ্যারেজে গিয়ে গাড়ি রেখে আসেন। তার পরই গা–ঢাকা দেন। জানা গিয়েছে, বিধাননগর কমিশনারেটে তাঁর বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতনের পুরনো মামলা রয়েছে।

অভিষেকের মোবাইলের জিপিআরএস ডেটা ট্র‌্যাক করে তাঁর নাগাল পায় পুলিশ। ওই যুবককে জেরা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ডিসি (‌ইস্ট)‌ গৌরব লাল। প্রশ্ন উঠেছে, এমন একটি গুরুতর ঘটনার ক্ষেত্রে পুলিশের যতটা সক্রিয় হওয়া উচিত ছিল, ততটা কি তারা হয়েছিল? অন্যায়ের প্রতিবাদ করা বা অন্যকে বাঁচাতে এগিয়ে যাওয়ার প্রবণতা যেখানে ক্রমশ কমছে, সেখানে পুলিশের এই আচরণ সাধারণ মানুষকে আরও খানিকটা দমিয়ে দিতে পারে বলে মনে করছেন কেউ কেউ।

আরও পড়ুন: একদিনেই শেষ হবে বিধানসভার বাদল অধিবেশন, সিদ্ধান্ত সর্বদল বৈঠকে

তবে কলকাতা পুলিশের ডিসি (ইস্ট) গৌরবলাল শর্মা পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, প্রথম দিন থেকেই অভিযুক্তকে ধরার জোর চেষ্টা চালানো হয়েছে। এ দিন অভিষেক ধরা পড়ার আগে পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা বলেছিলেন, ‘‘অভিযুক্তকে আমরা খুব তাড়াতাড়ি গ্রেফতার করব।’’

পুলিশের একটি সূত্রেরও দাবি, ঘটনার রাত থেকেই অভিযুক্তের খোঁজ চালানো হচ্ছিল। কিন্তু পরে পুলিশ জানতে পারে, ওই নামটাই ভুয়ো। এর পরে আসল নাম জানতে পারেন তদন্তকারীরা। সেই সূত্র ধরে অভিষেকের গাড়ি ও বাড়ির সন্ধানও মেলে। ওই সূত্রের দাবি, পুলিশের দিক থেকে দেরির প্রশ্নই ওঠে না। বরং নির্যাতিতাই অভিযুক্তের আসল নাম এবং গাড়ির নম্বর জানা সত্ত্বেও পুলিশকে ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করেছিলেন। পরে তদন্তে নেমে জানা যায়, অভিযুক্ত যুবকই তাঁর প্রেমিক। আর তার নাম অমিতাভ বসু নয়, অভিষেককুমার পাণ্ডে।
এ দিন ঘটনাস্থল এবং অভিষেকের গাড়ি পরীক্ষা করে দেখেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা। সূত্রের খবর, গাড়ির দরজায়, ড্যাশবোর্ডে এবং পিছনের আসনে রক্তের দাগ মিলেছে। তরুণীকে মারধর করার ফলেই রক্তক্ষরণ থেকে ওই দাগ লেগেছে বলে পুলিশের অনুমান। ধস্তাধস্তিরও কিছু চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে।অভিষেকের মা দাবি করেছেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অভিযোগকারিণীর দীর্ঘ দিনের সম্পর্ক। দু’জনের বিয়ে হওয়ারও কথা ছিল। অভিষেকের পাড়া সূত্রে পুলিশ জেনেছে, বছর পাঁচেক আগে ওই যুবকের এক বার বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু আট মাস পরেই বিয়ে ভেঙে যায়। অভিযোগ, স্ত্রীকে মারধর করত অভিষেক। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, অভিযোগকারিণী আদতে জলপাইগুড়ির বাসিন্দা। বছরখানেক আগে তাঁর সঙ্গে আলাপ হয় অভিষেকের। অভিযুক্তের বাড়িতে ওই তরুণীর এবং তরুণীর নয়াবাদের ফ্ল্যাটে অভিযুক্তের নিয়মিত যাতায়াত ছিল।
পাশাপাশি এ ঘটনার প্রতিবাদ করার জন্য এবং ওই যুবতীকে রক্ষা করার জন্য নীলাঞ্জনা চট্টোপাধ্যায়কে সাহসিকতার জন্য উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফোনে নীলাঞ্জনার সাহসিকতার প্রশংসা করে কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা তাঁকে জানিয়েছেন, নীলাঞ্জনার চিকিৎসার সমস্ত খরচ বহন করবে রাজ্য সরকার।
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest