‘দাঙ্গাবাজ, লুটেরাবাজ বিজেপিকে চাই না’, পুরুলিয়ার হুটমুড়ার সভায় দাঁড়িয়ে হুঙ্কার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এদিন বিজেপির ‘মিথ্যা কথার’ ফিরিস্তি দিতে গিয়ে মমতা বলেন, “ভোটের আগে বাংলায় এসে বঙ্গাল বঙ্গাল বলে চিৎকার করে। এদিকে ঠিক করে বাংলাটা পর্যন্ত বলতে পারে না। ভোটের সময় বঙ্গাল, ভোট ফুরোলেই কঙ্গাল।” মুখ্যমন্ত্রীর কটাক্ষ, ভোটের আগে মন্ডা-মিঠাই খাওয়ায় বিজেপি, ভোট মিটলে আম-জনতার জন্য বরাদ্দ থাকে ‘কাঁচকলা’।
গত লোকসভা ভোটে রাজ্যের যে ১৮টি আসনে পদ্মফুল ফুটেছে, তার মধ্যে অন্যতম এই পুরুলিয়া। মমতার ‘মুখ’ মৃগাঙ্ক মাহাতোকে পিছনে ফেলে সেই ভোটে পুরুলিয়ায় গেরুয়া ঝড় ওঠে জ্যোতির্ময় সিং মাহাতোর হাত ধরে। গত দেড় বছরে এ জেলায় বিজেপি ভিতরে ভিতরে ভালই ডালপালা মেলেছে। আগামী বিধানসভা ভোটে পুরুলিয়ায় তৃণমূল-বিজেপির টক্কর যে হবেই, সে কথাও মানছে ওয়াকিবহাল মহল।
তৃণমূলও যে কিছুটা হলেও এ আঁচ পেয়েছে, এদিন মমতার কথায় সে ইঙ্গিত প্রকট হল। মমতা বলেন, “লোকসভায় যাঁকে ভোট দিয়েছিলেন তিনি তো ভোট নিয়ে দিল্লি পালিয়ে গিয়েছেন। কোনও উন্নয়ন করেননি। নির্বাচনের আগে খাওয়াবে, আর ভোট মিটলে কাঁচকলা দিয়ে চলে যাবে। বিজেপি এলে পুরুলিয়া থাকবে না। আবার আসবে মাওবাদীরা। বিজেপি মাওবাদীদের থেকেও ভয়ঙ্কর।”
আরও পড়ুন: রাজনীতি নাকি IPL নিলাম ! শতাব্দী আসবেন বিজেপিতেই , দাবি সৌমিত্র খাঁর
এদিন একাধিক ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রী নিশানা করেন বিজেপিকে। তিনি বলেন, “বিজেপি শুধু মিথ্যা কথা বলে, ঝাড়খণ্ড রাজ্যে ওরা বিদায় হয়েছে। বিহারে নীতিশ কুমারের সরকার। ওড়িশায় ওরা নেই। বাংলায় যা আছে সংবাদমাধ্যমকে ভয় দেখিয়ে ওরা দেখাচ্ছে। বিজেপি ফেক ভিডিও তৈরি করে ছাড়ে। সব জোচ্চুরি। হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করেছে বেনামি। সেই সব গ্রুপে কোনও কথাই বিশ্বাস করবেন না। বিজেপি আসলে পুরুলিয়া থাকবে না। মাওবাদীদের থেকে বিজেপি ভয়ঙ্কর। মাওবাদীরা আত্মসর্মপণ করে মূলস্ত্রোতে ফিরে এসেছে। আমি আত্মসমর্পণকারী মাওবাদীদের জন্য হোমগার্ডের চাকরির ব্যবস্থা করছি। আমরা বিনা পয়সা সবাইকে রেশন দিই। জুন মাসে আমাদের সরকার আসলে বিনা পয়সায় রেশন দেওয়া হবে। অনেকে চাকরি পেয়েছেন। ওরা বিরসা মুণ্ডাকে অপমান করেছেন। একজনের ছবিতে মালা দিলেন। এখানে কানহু মুর্মুর মূর্তি ভেঙে দিয়েছিল বিজেপি।“
এদিন মমতা অভিযোগ তোলেন, তাঁর সভার নির্ধারিত সময়ের থেকে তিন চার ঘণ্টা আগে এসে সভামঞ্চের ছবি তুলে নিয়ে গিয়েছে কেউ কেউ। সেই ছবি দেখিয়ে বলবে মমতার সভায় ভিড় হয় না। এসব দিল্লির অঙ্গুলি হেলনেই চলে বলে দাবি মুখ্যমন্ত্রীর। মমতার অভিযোগ, তাঁর প্রতিটা জনসভায় বিজেপি লোক পাঠায় ঝামেলা করার জন্য। মুখ্য়মন্ত্রীর হুমকি “আমিও বিজেপি, সিপিএমের সভায় লোক পাঠিয়ে দেব, বুঝবে!”
আরও পড়ুন: বাংলার মসনদ যাবে কার হাতে? কি বলছে সমীক্ষার ফলাফল? জেনে নিন ঝটপট…