বিতর্কিত একটি নাগরিকত্ব আইনের মেয়াদ বাড়াতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেটের নেতৃত্বাধীন ইসরায়েলের নতুন সরকার। এই আইনে ইসরায়েলি নাগরিকদের বিয়ে করা ফিলিস্তিনিদের ইহুদি রাষ্ট্রটির নাগরিকত্ব এবং সেখানে বসবাসের অনুমতি আটকানো হয়। প্রতিবছরই পার্লামেন্টে ভোটের মাধ্যমে আইনটির মেয়াদ বাড়াতে হয়। সেখানে ব্যর্থ হয়েছে বেনেট প্রশাসন।
আরও পড়ুন : ব্রা না-পরার একাধিক উপকারিতা রয়েছে জানেন কী?
এই পরাজয়কে জোড়াতালি দিয়ে জোট করে ক্ষমতায় আসা বেনেটের জন্য প্রথম রাজনৈতিক আঘাত হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকেরা। গত মাসে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারিয়ে এখন বিরোধীদলীয় নেতার আসনে বসা বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু নেতৃত্বাধীন সরকার ২০০৩ সালে বিতর্কিত এই আইন করেছিল। তখনই প্রতিবছরই আইনের মেয়াদ বৃদ্ধির শর্ত দেওয়া হয়েছিল।
Racist amendment against Palestinian family reunification expired! This is not the end and we’ll keep facing obstacles, but this is a victory for thousands of families. We did everything we could and finally managed to score a victory despite of Meretz and UAL. pic.twitter.com/iIjWOQFYPf
— Sami Abou Shahadeh (@ShahadehAbou) July 6, 2021
ইসরায়েলের পার্লামেন্ট নেসেটে সোমবার রাতভর চলা অধিবেশন শেষে মঙ্গলবার সকালে বিতর্কিত এই আইনের মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব নাকচ হওয়ার খবর আসে। আট দলের সমন্বয়ে গড়া বেনেট সরকারের প্রস্তাবটির পক্ষে ও বিপক্ষে ৫৯টি করে ভোট পড়ে। ভোটদানে বিরত থাকেন দুজন এমপি। ক্ষমতাসীন জোটের দলগুলোতেই এ আইনের বিরোধিতা রয়েছে। বেনেট সরকারের জোটে থাকা দ্য ফিলিস্তিনিয়ান জয়েন্ট লিস্ট পার্টির সদস্য সামি আবৌ শাহাদাহ বলেছেন, এই পরাজয় হাজার হাজার ফিলিস্তিনি পরিবারের জন্য বিজয়।
শুধু ইসরায়েলে বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের দলটির সদস্যরাই নন, ছয়জন এমপি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী হওয়া বেনেটের নিজের দলের এক এমপিও এই আইনের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন।
এদিকে এই আইনের বিরোধিতা করে সোমবার নেসেটের বাইরে জড়ো হন ইসরায়েলে বসবাসরত ফিলিস্তিনিরা। তাঁরা বলছেন, এই আইনের ফলে তাঁদের সঙ্গীদের (স্বামী বা স্ত্রী) সঙ্গে মিলিত হতে পারছেন না। ফিলিস্তিন সীমান্তে থাকা তাঁদের সঙ্গীরা ইসরায়েল অংশে প্রবেশে সহজে অনুমতি পান না। আবার অনুমতি ছাড়া তাঁদের ইসরায়েলের অধিকৃত অঞ্চলে প্রবেশও বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। সেখানে আলি মেটাব নামের এক ফিলিস্তিনি ইসরায়েলি বলেন, তাঁর স্ত্রীর ইসরায়েলে বসবাসের অধিকার নেই। এর ফলে তাঁদের পরিবারটি কার্যত এমন কারাগারে রয়েছে, যার শেষ নেই।
সোমবার এক টুইটে ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়ার লাপিড বলেন, এই আইনের উদ্দেশ্য লুকোনোর কিছু নেই। এই আইনের উদ্দেশ্য হলো ইসরায়েলকে ইহুদি সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্র হিসেবে টিকিয়ে রাখা। তিনি এই আইনকে ইহুদি সংখ্যাগরিষ্ঠতা টিকিয়ে রাখার অন্যতম উপাদান হিসেবে বর্ণনা করেন।
ফিলিস্তিনিদের আইনি সহায়তা দানকারী ইসরায়েলি মানবাধিকার সংগঠন হ্যামোকেডের প্রধান জেসিকা মনটেল বলেন, এই আইনের কারণে লাখ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
২০০৫ সালে এ আইনের সংশোধন এনে বলা হয়, ২৫ বছরের বেশি বয়সী নারী এবং ৩৫ বছরের বেশি বয়সী পুরুষ ইসরায়েলে অস্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
আরও পড়ুন : করোনার ফলে লিঙ্গশৈথিল্য? সমস্যায় যৌনজীবন? জানুন বিশেষজ্ঞের মত