‘আশ্বিনের শারদপ্রাতে, বেজে উঠেছে আলোক মঞ্জির…।’ বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠই যেন মায়ের আগমনি বার্তা বহন করে আনে প্রতিবার। এবারও ব্যতিক্রম নয়। তবে এবার দেবীর বোধনেই করোনাসুরের বিনাশ হবে। দূর হবে অশুভ শক্তির প্রকোপ। মুক্তি মিলবে এই ভয়ংকর মহামারী থেকে। নতুন আলোর দিশা পাবে মানুষ। মহালয়ায় এই প্রার্থনা আর বিশ্বাস নিয়েই দুর্গাপুজোর দিন গোনা শুরু হল বাঙালির। আর এই পুণ্য তিথিতে গান গেয়ে দেবী দুর্গাকে শারদ অর্ঘ্য দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
এদিন মহালয়া ও বিশ্বকর্মা উপলক্ষ্যে ট্যুইট করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি লেখেন, ‘মহালয়ার শুভক্ষণে সকল রাজ্যবাসীকে শুভেচ্ছা জানাই। করোনার কারণে নানা ধরনের বিধিনিষেধ থাকলেও দুর্গাপুজোর আনন্দ কোনওভাবেই মাটি হবে না। মহালয়ায় আমি আপনাদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, কেউ দুর্গাপুজোর আনন্দ থেকে বঞ্চিত হবেন না।’ আবার বিশ্বকর্মা পুজোর শুভেচ্ছা জানিয়েও তিনি লেখেন, ‘শ্রমিক ভাই ও বোনেদের এবং তাদের পরিবার পরিজনদের বিশ্বকর্মা পুজোর শুভেচ্ছা জানাই। তারা আমাদের গর্ব। সমাজের উন্নয়নের জন্য নিরলস পরিশ্রম করেন তারা।’
কবিতা লেখা থেকে ছবি আঁকা- সব বিষয়েই মুখ্যমন্ত্রীর অশেষ আগ্রহ। হাজারো কর্মব্যস্ততার মধ্যেও নিজের মতো করে সময় বের করে নেন পছন্দের কাজগুলির জন্য। কখনও তাঁর কবিতা ঐক্যবদ্ধ হওয়ার বার্তা দেয়, তো কখনও হয়ে ওঠে প্রতিবাদের ভাষা। এবার মহালয়ায় খানিকটা অন্য ভূমিকাতেই দেখা গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। মায়ের আগমনির সুর তাঁর কণ্ঠে। ‘বাজল তোমার আলোর বেণু…’, মহিষাসুরমর্দিনীর এই অতি পরিচিত গানটি গেয়েই মা দুর্গাকে শারদ অর্ঘ্য নিবেদন করলেন তিনি। ফেসবুকে নিজের পেজেই গানের ভিডিওটি পোস্ট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
সম্প্রতি হোয়াটসঅ্যাপে সরকারের নির্দেশিকা দাবি করে দুর্গাপুজো নিয়ে একাধিক বিধিনিষেধ সম্বলিত মেসেজ পাঠানো হচ্ছিল। তাতে লেখা ছিল এবার দুর্গাপুজোয় সারারাত ঘুরে প্রতিমা দর্শন বন্ধ থাকবে! পঞ্চমী থেকে একাদশী, বিকেল পাঁচটার পর থেকে জারি থাকবে নাইট কারফিউ। শুধু তাই নয়, ওই মেসেজে লেখা ছিল, কোনও মণ্ডপে একসঙ্গে পাঁচজনের বেশি প্রবেশ করা যাবে না। এমনকী অষ্টমীতে অঞ্জলির সময় ফুলও দেওয়া যাবে না। সেইসঙ্গেই প্রতিমা নিরঞ্জনের সময় শোভাযাত্রা বন্ধ রাখারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করা হয়। যদিও সেই মেসেজ সর্বৈব মিথ্যা।