বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে আচমকাই এল জনপ্রিয় ফ্যাশন ডিজাইনার শর্বরী দত্তের মৃত্যু সংবাদ। এই অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে ক্রমেই বাড়ছে ধোঁয়াশা। কীভাবে কিংবা কখন মৃত্যু হয়েছে শর্বরী দত্তের তা জানা যায় নি। রাত ১১.৩০ টা নাগাদ পরিবারের লোক উদ্ধার করে শর্বরী দেবীর দেহ।
পরিবার সূত্রে খবর ১৬ তারিখ রাতে ডিনারে শেষবার শর্বরী দত্তের সঙ্গে দেখা হয় ছেলের। বৃহস্পতিবার দিনভর কোনও যোগাযোগ হয়নি। সকলেই ভেবেছিলেন কাজে ব্যস্ত রয়েছেন শর্বরী দত্ত। অবশেষে রাতে ডিনারের সময়ও দেখা না মেলায় খোঁজ শুরু হয় তাঁর। অবশেষে ড্রয়িং রুমের শৌচাগার থেকে ডিজাইনারের নিথর দেহ মেলে।
সেই সময় খবর দেওয়া হয় পারিবারিক চিকিত্সক অমল ভট্টাচার্যকে। তিনি পুলিশকে খবর দিতে বলেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায় কড়েয়া থানার পুলিশ।একই সঙ্গে পৌঁছান চিকিত্সক। পৌঁছেছিল লালবাজার হোমিসাইড শাখার আধিকারিকরাও।পুলিশ সূত্রে খবর- শর্বরী দত্তের বাঁ পায়ের গোড়ালির কাছে আঘাতের চিহ্ন, মুখ থেকে রক্ত বেরিয়েছে। বাথরুমেও রক্তের দাগ স্পষ্ট ছিল। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। আজ এনআরএস হাসপাতালে দুপুর ১২টার পর ময়নাতদন্ত হয় শর্বরী দত্তের। সেই রিপোর্ট এসেই মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কিছু বলা সম্ভবপর হবে, জানিয়েছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: ‘স্টপ বডি শেমিং’, মহালয়ার সকালে নয়া ভাবনা নিয়ে হাজির শিবপ্রসাদ-নন্দিতা জুটি
পরিবারের দাবি দীর্ঘদিন ধরেই বেশ কিছু ওষুধ খেতেন শর্বরী দত্ত।’উনি একটা হরমোনের ওষুধ খেতেন, যার জন্য উনার রেগুলার পিরিয়ডসের মতো রক্তপাত হত, বাথরুমে তেমনই রক্ত পড়ে আছে বলেই ওঁর পুত্রবধূর দাবি’, জানিয়েছেন চিকিত্সক অমল ভট্টাচার্য।সেই সব ওষুধের স্যাম্পেলও ইতিমধ্যেই সংগ্রহ করেছে পুলিশ। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে যান শর্বরী দেবী নাকি ওষুধের সাইড এফেক্ট কিংবা অন্য কোনও রহস্য- সব দিক খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
অন্যদিকে, পুলিস জানতে পেরেছে, শ্বশুরবাড়ির তরফে একটি জমি নিয়ে ছেলের সঙ্গে মন কষাকষি চলছিল শর্বরী দত্তের। জমিটি বীরভূমের আহমেদপুরে। ওই জমিতে অংশীদার ছিলেন মোট তিনজন। শর্বরীদেবীর স্বামী আলোকময় দত্ত ও তাঁর দুই ভাইয়ের। স্বামীর মৃত্যুর পর শর্বরীদেবীর নামে সেই সম্পত্তি চলে যায়। ওই জমিটি নিতে চেয়েছিলেন অমলিন। সেখানে শর্বরীদেবীর স্বাক্ষরের দরকার ছিল। তাই কিছুদিনের আগে মাকে নিয়ে সেখানে যান তিনি। আহমেদপুরের জমির ওই অংশ ছেলের নামে করে দেন শর্বরীদেবী। সাময়িকভাবে ঝামেলা মিটে যায়। কিন্তু ফের অশান্তি শুরু হয় মা ও ছেলের মধ্যে।
এছাড়াও জানা গিয়েছে, লকডাউনে বেশ কিছু কাজ শর্বরীদেবীর হাত থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল। তা নিয়েও মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। উপরন্তু সম্প্রতি শর্বরীদেবীর ভার্টিগো ধরা পড়ায় মাথাও ঘুরত তাঁর। বেশ কয়েকবার মাথা ঘুরে নাকি পড়েও গিয়েছিলেন। বন্ধু সংযুক্তা বসু জানিয়েছেন, স্বামীর মৃত্যুর পর থেকেই শর্বরীদেবী একাকীত্বে ভুগতেন। ছেলে ও বউমার সঙ্গে কিছু বিষয়ে মন কষাকষি চলছিল বলেই অনেকসময় ওষুধও ঠিকমতো খেতেন না।
আরও পড়ুন: এথনিক হোক বা ওয়েস্টার্ন- সব ধরণের পোশাকেই ভক্তদের মন কাড়ছেন অভিনেত্রী জুহি সেনগুপ্ত