নয়াদিল্লি: ১৭ বছরের লড়াইয়ের পর অবশেষে কিছুটা হলেও স্বস্তি পেতে চলেছেন ২০০২ সালের গুজরাত দাঙ্গায় গণধর্ষিতা বিলকিস বানো। যে অত্যাচারের মধ্যে দিয়ে তিনি গিয়েছেন, তাতে কোনও ক্ষতিপূরণই যথেষ্ট নয়। তবে এদিন সুপ্রিম কোর্ট তাঁকে ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দিয়েছে গুজরাত সরকারকে। আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে তাঁর হাতে টাকা তুলে দিতে হবে। একই সঙ্গে তাঁকে সরকারি চাকরি এবং বাসস্থানের ব্যবস্থাও করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে গুজরাত সরকারকে।
এর আগে, মার্চ মাসে মামলার শুনানি চলাকালীন বিলকিস বানোকে ৫ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণের প্রস্তাব দিয়েছিল গুজরাত সরকার। কিন্তু সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন বিলকিস। যার পর এ দিন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি দীপক গুপ্ত এবং বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, ‘‘দোষীদের শাস্তি হয়েছে। কিন্তু চরম উন্মত্ততার সাক্ষী থাকা বিলকিস বানোকে ছেড়ে দেওয়া হয় রাস্তায়।’’
আদালত আরও বলে, ‘‘২১ বছরের বিলকিসকে শুধুমাত্র ২২ বার ধর্ষণই করা হয়নি, নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছিল তাঁর তিন বছর দু’মাসের মেয়েকেও। তার পর থেকেই যাযাবরের মতো ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন বিলকিস। এখন তাঁর ৪০ বছর বয়স। তাঁর পরিবারের আর কেউ বেঁচে নেই। পড়াশোনাও তেমন জানেন না। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দয়ায় বেঁচে রয়েছেন।’’
রাজ্যের বেশ কিছু পুলিশ অফিসার তদন্ত বিপথে চালিত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে এর আগে বম্বে হাইকোর্টে অভিযোগ করেছিলেন বিলকিস বানো। ২০০৮ সালে সেখানে ১১ জন দোষী সাব্যস্ত হলেও, ওই পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। এ দিন বিলকিস বানোর আইনজীবী আদালতে জানান, অভিযুক্তদের মধ্যে চারজন অবসর নিয়েছেন। পঞ্চম জন, আইপিএস অফিসার আরএস ভাগোরা অবসর নেওয়ার পথে। অবিলম্বে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে বলে গুজরাত সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। সবিস্তার রিপোর্টও চেয়ে পাঠানো হয়েছে।