#অমৃতসর: ফের রাজনৈতিক আক্রমণের মুখে ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী। শিরোমণি অকালি দলের জাতীয় মুখপাত্র মনজিন্দ্র সিংহ সিরসা এ বার রাজীবকে দেশের বৃহত্তম গণহত্যার সব থেকে বড় চক্রী বললেন। ইন্দিরা হত্যার পর দেশ জুড়ে শিখ দাঙ্গার ঘটনা মনে করিয়ে দিয়েই রাজীবের উদ্দেশে এই তোপ দাগলেন মনজিন্দ্র। কংগ্রেসের বর্তমান সভাপতি রাহুল গান্ধীর দিকেও প্রশ্ন ছুঁড়েছেন এই অকালি নেতা। তাঁর কথায়, ‘‘শিখ গণহত্যায় জড়িত থাকার দায় এখনও কেন স্বীকার করেনি কংগ্রেস? ১৯৮৪-র গণহত্যায় মৃতদের পরিবারের কাছে এখনও কেন ক্ষমা চাননি আপনি?’’
অবশ্য এই প্রথম নয়, রাজীবকে আক্রমণ করার ট্রেন্ড শুরু করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীই। গত শনিবার উত্তরপ্রদেশের জনসভায় বফর্স কাণ্ডের প্রসঙ্গ তুলে তিনি মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘নিজের সভাসদদের কাছে রাজীব গাঁধী ‘মিস্টার ক্লিন’ হতেই পারেন, কিন্তু উনি জীবন শেষ করেছিলেন ‘এক নম্বর দুর্নীতিগ্রস্ত’ হিসেবেই।’’ সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘এক নম্বরের দুর্নীতিগ্রস্ত’ মন্তব্যের সঙ্গে সহমত পোষণ করে মনজিন্দ্র বলেন, ‘‘রাজীব গান্ধী হলেন পৃথিবীর একমাত্র প্রধানমন্ত্রী যিনি একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে গণহত্যার চক্রান্ত করেছিলেন।’’ একই সঙ্গে মনজিন্দ্রের অভিযোগ, রাজীব যে শুধুই শিখ গণহত্যায় মদত দিয়েছিলেন তা নয়, যাঁরা প্রত্যক্ষ ভাবে এই গণহত্যায় জড়িত, তাঁদের রক্ষা ও পুরস্কৃত করার দায়িত্বও নিয়েছিলেন। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশনে নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগ দায়ের করেছে কংগ্রেস। অবিলম্বে মোদীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করে তাঁর প্রচারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারির আবেদন করা হয়েছে চিঠিতে। কংগ্রেসের আরও অভিযোগ, ওই ধরনের মন্তব্য করে শুধু বিধিভঙ্গই করেননি মোদী, একজন ভারতরত্ন শহিদকে অপমানও করেছেন। এই ইস্যুতে মোদিকে আইনি নোটিস পাঠাচ্ছেন কংগ্রেসনেতা প্রমোদ তিওয়ারি। মোদীকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার দাবিও তুলেছে কংগ্রেস।
দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে সুর নরম করা তো দূর, বরং রাজীব গান্ধীর নামে কংগ্রেস নির্বাচন লড়ে দেখাক বলে এবার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন তিনি।সোমবার ঝাড়খণ্ডের চাইবাসায় নির্বাচনী জনসভা ছিল। সেখানেই কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলিকে নিশানা করেন নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, “পরিবারতান্ত্রিক কংগ্রেস, অনুগ্রহপ্রার্থী এবং চাটুকারদের চ্যালেঞ্জ করছি, কংগ্রেসের যে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে, যাঁর জন্য গত দু’দিন ধরে কেঁদে ভাসাচ্ছেন আপনারা, তাঁর নামে দিল্লিতে নির্বাচন লড়ে দেখান।”তিনি আরও বলেন, “পাঁচ দফার নির্বাচন তো মিটেই গেল। সে যাক গে। যে দুই দফা বাকি রয়েছে, তাতেই রাজীব গান্ধীর নামে নির্বাচন লড়ে দেখান।”
রাফাল বিতর্কে বিগত দীর্ঘ দিন ধরেই নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করে আসছেন রাহুল গান্ধী-সহ বিরোধীরা। সেই প্রসঙ্গ টেনে মোদী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী পদটির মর্যাদা ভুলে গিয়েছেন নামদার পরিবার। তাই দেশের প্রধানমন্ত্রীকে লাগাতার কুকথা বলেন। কিন্তু যেই না বফর্স প্রসঙ্গ খুঁচিয়ে তুলেছি, অমনই শোরগোল পড়ে গিয়েছে চারদিকে। কিন্তু দেশের যুব সমাজেরও জানা উচিত যে, একটা পরিবার কীভাবে দেশে লুটপাট চালিয়েছে। আসুন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর মান-সম্মান নিয়েই শেষ দু’দফায় লড়ি আমরা। ক্ষমতা থাকলে ময়দানে নামুন।”