দেবাঞ্জনকাণ্ডের রেশ কাটতে না কাটতেই খোঁজ মিলল আরও এক ভুয়ো সরকারি আধিকারিকের। গতকাল রাতে থিয়েটার রোড এলাকা থেকে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে বেনিয়াপুকুর থানার পুলিশ। ধৃত আসিফুল হক পার্ক স্ট্রিট থানা এলাকার কলিন্স স্ট্রিটের বাসিন্দা।
আরও পড়ুন : ‘জঙ্গিদের থেকেও ভয়ংকর’ দেবাঞ্জন, কসবার ভুয়ো টিকা কাণ্ডে কড়া ব্যবস্থার নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর
পুলিশের দাবি, নিজেকে সেন্ট্রাল ভিজিল্যান্স অফিসার বলে পরিচয় দিতেন ওই যুবক। গাড়িতে লাগানো ছিল নীল বাতি, ভিআইপি স্টিকার। কালো কাঁচ ঢাকা গাড়িতে চড়ে ঘুরে বেড়াতেন ওই যুবক।
পুলিশ সূত্রে খবর, গতকাল থিয়েটার রোডে নাকা চেকিংয়ের সময় নীল বাতি লাগানো গাড়ি আটকায় ইস্ট ট্রাফিক গার্ড। বয়ানে অসঙ্গতি মেলায় পরে ওই যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃত কোনও প্রতারণাচক্রের সঙ্গে জড়িত কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
দেবাঞ্জন দেবের প্রতারণা নিয়ে এখনও তোলপাড় রাজ্য। ভুয়ো ভ্যাকসিনকাণ্ডে তিনি গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন পরিচয়ে কীভাবে একের পর এক সুবিধা আদায় করেছেন, তার তালিকা দিন দিন দীর্ঘ হয়ে যাচ্ছে। IAS পরিচয়ে ২০২০ থেকে কসবার রাজডাঙার একটি মাল্টিজিমে যাওয়া থেকে শুরু করে, ২০২০-তে কলকাতা পুরসভার আধিকারিক পরিচয় দিয়ে পারচেজ অর্ডার দেখিয়ে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে ৩ হাজার পিস হলোগ্রাম তোলা- আরও কত কি ! আইএমএ-র বাংলা শাখা জানিয়েছে, সংস্থার দুটি অনুষ্ঠানে ভুয়ো ভ্যাকসিনকাণ্ডের প্রতারককে দেখা গিয়েছিল। একটি অনুষ্ঠানে ছিলেন তৎকালীন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। যেখানে নিজেকে সমাজকর্মী হিসেবে পরিচয় দেন দেবাঞ্জন। অপর অনুষ্ঠানে ছিলেন শান্তনু সেন। কিন্তু, সেখানে তাঁকে কেউ আইএএস অফিসার হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেননি।
ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার বিকেলে। শেক্সপিয়র সরণিতে বেআইনি পার্কিং ধরতে অভিযান চালাচ্ছিল ইস্ট ট্রাফিক গার্ড। সেই সময় বেআইনি পার্কিং লটে একটি গাড়ি নজরে আসে। কালো কাঁচ লাগানো গাড়িতে ছিল সেন্ট্রাল ভিজিলেন্সের স্টিকার লাগানো । এরপরেই শুরু হয় গাড়ির মালিকের খোঁজ। পুলিশ আটক করে সেন্ট্রাল ভিজিলেন্সের স্টিকার লাগানো গাড়িটিকে। এই সময় বছর ২৫-২৬-এর এক যুবক সামনে এসে দাবি করেন গাড়িটি তার। তিনি সেন্ট্রাল ভিজিলেন্সের আধিকারিক। তবে পুলিশি জেরায় মুখে পড়ে ঘাবড়ে যায় ওই যুবক। এরপরেই তিনি নারকোটিক সেলের আধিকারিক বলে পরিচয় দেন। কিন্তু জিজ্ঞাসাবাদে অসংলগ্ন উত্তর দেওয়ায় সন্দেহ হয় ট্রাফিক সার্জেন্টের। তার কাগজপত্র দেখাতে চাওয়া হয়। কিন্তু নিজের পরিচয় পত্র বা গাড়ির কাগজপত্র কিছুই দেখাতে পারেনি ওই যুবক।
জেরায় যথাযথ উত্তর দিতে না পারায় ওই যুবককে বেনিয়াপুকুর থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তাকে গ্রেফতার করে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম মহঃ আসিফুল হক। সে পার্ক স্ট্রিটের বাসিন্দা বলে জানা যাচ্ছে। ধৃত যুবক সদ্য ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেছে। তবে কী কারণে সে নীল বাতি লাগানো গাড়ি নিয়ে ঘুরছিল তা এখনো জানা যায়নি। ধৃতকে জেরা করে পুলিশ জানার চেষ্টা করছে, সে এই নীল বাতি লাগানো গাড়ি নিয়ে আর কোন অপরাধে যুক্ত ছিল কিনা। আজ তাকে শিয়ালদহ কোর্টে তোলা হবে৷
আরও পড়ুন : উনি দুর্নীতিগ্রস্ত লোক, জৈন হাওয়ালা কেসের চার্জশিটে নাম ছিল’ ধনখড়কে তীব্র আক্রমণ মমতার