বিদ্বেষ রাজনীতিতে বিজেপি সিদ্ধহস্ত। বলতে গেলে সেটাই তাদের রাজনীতির প্রধান পরিচয়। মুসলিম এবং খ্রিস্টানদের নিশানা করে বহু বিজেপি নেতা গরম গ্রাম বাসন দিয়ে হাততালি কুড়িয়েছেন। একসময় সামাজিক মাধ্যমে সেই বিদ্বেষ ছড়িয়ে বিজেপি রাজনীতি করেছে। তার গুরু আরএসএস তাদের সেই মন্ত্রেই উদ্বুদ্ধ করেছিল। তেমনটাই সকলে জানে।
আরও পড়ুন : না জানিয়ে বিধায়করা কোথাও যেতে পারবেন না, শুভেন্দুকে রুখতে মরিয়া দিলীপ!
সংঘের মুসলিম-বিরোধী ভাবমূর্তি খণ্ডনে আসরে নামলেন খোদ মোহন ভাগবত। বললেন, ‘কেউ যদি বলেন, মুসলিমদের ভারতে থাকা উচিত নয়, তাহলে তিনি হিন্দু নন।’ সঙ্গে দাবি করলেন, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) বরাবর ভারতের মানুষের ডিএনতে বিশ্বাস করে এসেছে। আর হিন্দু এবং মুসলিমদের একই চোখে দেখে এসেছে।
রবিবার গাজিয়াবাদে খাওয়াজা ইফতেকারের বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে ভাগবত দাবি করেন, আরএসএস সংখ্যালঘু-বিরোধী বা ভারতে মুসলিমরা বিপদের মধ্যে আছেন বলে যে ‘ভয়’ দেখানো হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। সংঘ প্রধান বলেন, ‘যখন লোকজন হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে কথা বলেন, তখন আমরা বলি যে আমরা ইতিমধ্যে ঐক্যবদ্ধ। আমরা পৃথক নই।’
তিনি জানান, রাজনৈতিক দলগুলি মানুষকে একত্রিত বা বিবাদ বৃ্দ্ধির ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে না। তবে প্রভাবিত করতে পারে। ভারতে সংখ্যাগুরুদের আধিপত্য বাড়ছে বলে যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তা সেই ভয়ও কাটানোর চেষ্টা করেন ভাগবত। তিনি দাবি করেন, সংখ্যালঘুদের উপর যখন অত্যাচার হয়, তখন সংখ্যাগুরুদের তরফেই প্রতিবাদের আওয়াজ তোলা হয়।
সংখ্যালঘুদের উপর গো-রক্ষকদের বিরুদ্ধে যে হামলার অভিযোগ ওঠে, তা নিয়েও মুখ খুলেছেন সংঘ প্রধান। তিনি জানান, গরুকে ভারতে পুজো করা হয়। কিন্তু গো-রক্ষার নামে হিংসাত্মক পথে যাওয়ার ঘটনা কখনওই বরদাস্ত করা হবে না। তিনি বলেন, ‘আইন নিজস্ব পথে চলবে। পক্ষপাতহীনভাবে ওদের (পুলিশকে) তদন্ত করতে হবে এবং অভিযুক্তদের শাস্তি দিতে হবে। কিন্তু যে গণহত্যায় জড়িত থাকে, সে কখনও হিন্দু হতে পারে।’
অনেকে বলছে সবটাই হচ্ছে যোগীর ভাবমূর্তিওকে উজ্জ্বল করার চসেটা থেকে। বাংলায় বিজেপির ছক ফ্লপ হয়েছে। হিন্দু-মুসলিম বিভাজন বাংলার মানসু সেইভাবে পছন্দ করেনি। অথচ এর বাইরে গিয়ে যে বিজেপি উন্নয়নের কথা বলবে সে যে নেই। কারণ বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে সাধারণ মানুষ যে খুব একটা ভালো অবস্থায় নেই, সে খবর আর গোপন নেই। বিশেষ করে উত্তরপ্রদেশে। উন্নয়নকে দূরে সরিয়ে রেখে যোগী কেবল ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করেছে। যা হিন্দুরাও ভালো চোখে দেখছে না। হিন্দুত্বে তাদের অনেকের আপত্তি নেই। তাদের আপত্তি অহেতুক বিদ্বেষ রাজনীতিতে। সেটাই ভাবাচ্ছে বিজেপিকে। তাছাড়া ফেসবুক ও টুইটারের যে সুবিধা তারা আগে উপভোগ করেছে, তা আর হবে না। ফলে এই সাইটগুলোর দিকেও গরম চোখে তাকাচ্ছে বিজেপি।
আরও পড়ুন : শীর্ষ নেতাদের অপসারণ চেয়ে আলিমুদ্দিনে চিঠি কান্তি গাঙ্গুলির, দল ছাড়ার জল্পনা