গুরুতর অসুস্থ বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। লিভার-সহ একাধিক সমস্যায় ভুগছেন দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি’র সুপ্রিমো। তাঁকে দ্রুত বিদেশে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসার করানোর দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
খালেদা জিয়া বর্তমানে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ৭৬ বছর বয়সী খালেদা জিয়া আর্থরাইটিস, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি এবং ফুসফুসের সমস্যাসহ নানা জটিলতা ভুগছেন দীর্ঘদিন ধরে। এখন উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকায় এবং জ্বরের কারণে তাকে হাসপাতালে সিসিইিউতে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে। তাঁর একজন ব্যক্তিগত চিকিৎসক জাহিদ হোসেন জানিয়েছেন, সিসিইউতে মেডিকেল বোর্ড গঠন করে বিভিন্ন পরীক্ষা করা হচ্ছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেয়ার অনুমতি চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে লিখিত আবেদন করেছেন তার ভাই শামীম ইস্কান্দার।
মঙ্গলবার ঢাকায় দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন। তাঁর শারীরিক নানা জটিলতার মধ্যে এই মুহূর্তে লিভারের সমস্যাই সবচেয়ে বেশি। মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকদের পরামর্শ, খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে বিদেশের হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার প্রয়োজন রয়েছে। কারণ, এখানকার হাসপাতালগুলিতে অত্যাধুনিক সরঞ্জামের অভাব রয়েছে। এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য বা জার্মানির কোনও হাসপাতাল হতে পারে।
তবে বৃহস্পতিবার সংসদে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, খালেদা জিয়ার করা আবেদনটি ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী আগেই নিষ্পত্তি হয়ে যাওয়ায় তাকে বিদেশে যেতে অনুমতি দেয়ার আইনি কোন সুযোগ নেই। বাংলাদেশের আইনের বইয়ে এটা নেই।
এর আগে বুধবার খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার সুযোগ দেয়ার বিষয়ে তার পরিবারের করা আবেদন সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা অমানুষ না। অমানুষ না বলেই তাকে অন্তত তার বাসায় থাকার ব্যবস্থাটুকু, নির্বাহী ক্ষমতা আমার হাতে যতটুকু আছে, আমি সেটুকু দিয়ে তাকে বাসায় থাকার, চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। বাকিটা আইনগত ব্যাপার। আর কত চান?”
এদিকে, বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার (Khaleda Zia) শারীরিক অবস্থা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় কেউ যাতে গুজব ছড়িয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে না পারে, সে জন্য সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে পুলিশকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে দেশজুড়ে গোয়েন্দা তৎপরতাও বাড়ানো হয়েছে। বলে রাখা ভাল, ২০১৮ সাল থেকে দুই বছরের বেশি সময় ধরে কারাগারে রয়েছেন খালেদা জিয়া। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট এবং চ্যারিটেবল ট্রাস্ট সম্পর্কিত দুটি দুর্নীতির মামলায় ১৭ বছরের সাজা নিয়ে খালেদা জিয়া কারাভোগ করছিলেন।