আর কয়েক দিন পরেই বিশ্ব জুড়ে পালিত হবে ঈদ। ঈদের দিনের দুপুরের পারিবারিক ভোজসভার টেবিল থেকে বিয়ের আসর, উৎসব মানেই বিরিয়ানি। বিরিয়ানি শব্দটি এসেছে ফারসি শব্দ ‘বিরিয়ান’ এবং ‘বিরিঞ্জি’ থেকে। ‘বিরিয়ান’ অর্থ রান্নার আগে ভেজে নেওয়া এবং ‘বিরিঞ্জি’ মানে চাল। বিরিয়ানি রান্না করার আগে সুগন্ধি চাল ঘি দিয়ে ভেজে নিতে হয়, সেজন্যই এই নামকরণ।
দেখে নিন স্পেশ্যাল মটন বিরিয়ানির এই রেসিপি।
যা যা লাগছে
মটন- ১ কেজি
বাসমতী চাল- ৫০০ গ্রাম
টকদই- ২০০ গ্রাম
স্লাইস করা পেঁয়াজ- এক কাপ
আদা-রসুনের পেস্ট- ১৫০ গ্রাম
লঙ্কা গুঁড়ো
ধনে গুঁড়ো
ক্যাওড়া এসেন্স
গরম মশলা গুঁড়ো
গোটা গরম মশলা
ঘি, তেল প্রয়োজন মতো
আলু
স্বাদমতো নুন, চিনি
জাফরান
দুধ- ১ কাপ
যেভাবে বানাবেন
মটন ভালো করে ধুয়ে নিয়ে ফেটিয়ে রাখা টকদই, আদা-রসুনের পেস্ট, লঙ্কা গুঁড়ো, ধনে গুঁড়ো, ক্যাওড়া এসেন্স, গরম মশলা গুঁড়ো, স্বাদমতো নুন-চিনি দিয়ে ম্যারিনেট করে রাখুন তিন থেকে চার ঘন্টা। এবার একটা প্যানে দু চামচ ঘি আর এক চামচ সাদা তেল দিয়ে গোটা গরম মশলা দিয়ে দিন। ওর মধ্যে একে একে মাটনের টুকরো দিয়ে ভালো করে রান্না করে নিন। দেখবেন মটন ভাজা হলে লালচে রং আসবে আর সেই সঙ্গে সেদ্ধও হয়ে যাবে। অন্য একটা পাত্রে এককাপ দুধ আর জাফরান মিশিয়ে ফুড কালার তৈরি করে রাখুন। এবার আলু কেটে নিয়ে তার সঙ্গে ফেটিয়ে রাখা টকদই, আদা-রসুনের পেস্ট, স্বাদমতো নুন চিনি, সামান্য ক্যাওড়া এসেন্স আর দুধ-জাফরান একসঙ্গে দিয়ে ভালো করে ম্যারিনেট করে নিন। এবার প্রেসারে সেদ্ধ করে নিন। সেদ্ধ হলে লালচে করে ভেজে নিন।
এবার ওই তেলেই পেঁয়াজের স্লাইস দিন। লাল করে ভাজতে থাকুন। চাল একটু আগেই ভিজিয়ে রাখুন। এবার ডেকচি কিংবা হাঁড়িতে এলাচ দিয়ে তার মধ্যে চাল তুলুন। প্রয়োজনমতো জল দিন। স্বাদমতো নুন-চিনি দিন। সামান্য ক্যাওড়া এসেন্স আর কয়েকটা দারচিনি ফেলে দিন। খেয়াল রাখবেন চাল যেন খুব বেশি সেদ্ধ না হয়। ৮০ শতাংশ রান্না হলেই নামিয়ে নিন। কারণ বাসমতী চাল খুব তাড়াতাড়ি সেদ্ধ হয়ে যায়। তাই ভাত সামান্য শক্ত অবস্থাতেই নামান। ফ্রিজে যদি আগের দিনের চিকেন কিংবা মটনের গ্রেভি থাকে তাহলে খুব ভালো। নইলে ম্যারিনেটের মশলা দিয়েই গ্রেভি বানিয়ে নিন। এবার ওই গ্রেভির সঙ্গে ফেটিয়ে রাখা টকদই, আর সামান্য জীফরান দুধ মিশিয়ে নিন। এবার অন্য একটি পাত্রে প্রথমে এই গ্রেভি ২ চামচ দিয়ে বেস বানান। ওর মধ্যে একে একে মাংসের টুকরো, আলু দিন।
এরপর কিছুটা ভাত দিন। সামান্য গরম মশলা ছড়িয়ে দিন। একচামচ জাফরান দুধও দিন। আবার ভাতের একটা লেয়ার দিন। একই ভাবে মাংস, আলুর টুকরো, গরম মশলা দিয়ে লেয়ার করুন। সব হয়ে গেলে উপরে গ্রেভি দিন। কারণ গ্রেভি না থাকলে বিরিয়ানি একদম শুকনো হয়ে যাবে। আবার উপর থেকে জাফরান মেশানো দুধ ছড়িয়ে দিন। সবার শেষে লাল করে ভেজে রাখা পেঁয়াজ ছড়িয়ে দিন। এবার ৩০ মিনিট দমে বসান। ৩০ মিনিট পর গ্যাস বন্ধ করে ওই ঢাকা অবস্থাতেই আরও ৩০ মিনিট রাখুন। ব্যাস এবার বাঁড়ি ঝাঁকিয়ে নিয়ে প্লেটে পরিবেশন করুন গরম মটন বিরিয়ানি।
আরও পড়ুন: রান্নায় কোন তেল বেশি স্বাস্থ্যসম্মত, সয়াবিন না সরষে?
এবার দেখে নিন স্পেশ্যাল চিকেন বিরিয়ানির এই রেসিপি।
কী কী লাগবে
বাসমতী চাল ৭০০ গ্রাম (বাড়ির ভাতের চালেও করা যাবে ), মুরগির মাংস দেড় কেজি, পেঁয়াজ কুচি ৪ টি বড় মতো, রসুন 8 কোয়া, কাঁচালঙ্কা, আদাবাটা ২ টেবিল চামচ, টক দই ৪ টেবিল চামচ, টক দই ৪ টেবিল চামচ, গোটা মশলা যেমন- লবঙ্গ, দারচিনি, এলাচ, জায়ফল, জয়িত্রী , ধনে, আন্দাজ মতো, দুধে ভেজানো জাফরান অথবা কামধেনু রঙ অল্প। কেওড়া জল আন্দাজ মতো। দেশি ঘি ২ টেবিল চামচ ৷
পেঁয়াজ কুচি করে দুধে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখুন।তেল খুব গরম হলে পেঁয়াজ কুচিগুলি তুলে নিয়ে ভাজুন।এতে পেঁয়াজে তাড়াতাড়ি বাদামি রঙ ধরবে এবং পেঁয়াজ কুচিগুলিও মুচমুচে হবে ৷
তৈরি করুন এভাবে-
প্রথমে গোটা মশলা গুলো মিক্সিতে পিষে নিন। এবার কাঁচালঙ্কা,পেঁয়াজ , রসুন ও আদা মিক্সিতে পেষ্ট করে রাখুন। টকদই –এ গুড়ো মশলাগুলো দিয়ে ফেটিয়ে রাখুন। এবার মাংসের মধ্যে সব বাটা মশলা এবং -গুঁড়ো মশলা মেশানো টক দই ও নুন-চিনি দিয়ে মেরিনেট করুন। জল দিতে হবেনা।বেশি সময় ধরে মেরিনেট করলে মাংস নরম হয়। ফ্রিজেও রাখতে পারেন বেশ কিছু সময়। এবার মেরিনেট করা মাংস ও গোটা আলু প্রেসার কুকারে দিয়ে ২/ ৩ টি সিটি দিন।খেয়াল রাখবেন রান্নার সময় আঁচ হালকা করে নিতে হবে।
বিরিয়ানি ভাতের জন্য যা যা করতে হবে:—
চাল অন্তত এক ঘণ্টা মতো জলে ভিজিয়ে রাখুন।এবার একটিপাত্রে জল দিয়ে ফুটতে দিন। তাতে জল ঝরিয়ে চালগুলো দিয়ে দিন।ঐ সঙ্গে তেজপাতা ও নুন দিন।জলের পরিমাণ চাল অনুযায়ী দিতে হবে । ভাত একটু শক্ত থাকতে নামিয়ে নিন। মশারির নেটে ঢেলে দিয়ে ভাত ঝরঝরে করে নিন।এবার দুধে ভেজানো জাফরান দিয়ে অথবা অতি সামান্য কামধেনু রঙ দিয়ে ভাত সামান্য ঝাঁকিয়ে নিন।
এবার সাজানোর অর্থাৎ লেয়ার বানানোর পর্যায় :—একটি পাত্রে প্রথমে আন্দাজ মতো ভাত দিন। তারপর রান্না করা মুরগির মাংসের কয়েকটি টুকরো, আলু এরপর পেঁয়াজ ভাজা ছড়িয়ে দিন।পুনরায় একইভাবে লেয়ার বানান। সবশেষে কেওড়ার জল ছড়িয়ে দিন। এবার ২ টেবিল চামচ দেশী ঘি ছড়িয়ে ঢাকা দিয়ে রাখুন।
এইবার উনানে একটা তাওয়া রেখে কিংবা একটি ফুটন্ত জলের পাত্রের উপর বিরিয়ানির পাত্রটি বসিয়ে রাখুন ২০ — ২৫ মিনিট মতো। বিরিয়ানির পাত্রের ঢাকনা ভালভাবে বন্ধ করতে হবে।দরকার হলে মাখা ময়দার প্রলেপ দিয়ে ফাঁক বন্ধ করলে ভাল হয়।
আরও পড়ুন: Mother’s Day 2021: মা কে চমকে দিয়ে বানিয়ে ফেলুন স্পেশাল এই রেসিপি!