হরিদ্বারে (Haridwar in Uttarakhand) ‘ধর্ম সংসদে’ গণহত্যার উসকানি। মুসলিমদের বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নিতে বলা হল হিন্দু সম্প্রদায়কে। এরপরেই অভিযোগ দায়ের করল তৃণমূল। দলের মুখপাত্র সাকেত গোখলে উত্তরাখণ্ডের জ্বালাপুর থানায় একটি এফআইআর দায়ের করেছেন ওই সভার উদ্যোক্তা ও বক্তাদের বিরুদ্ধে।
সেই সঙ্গে হরিদ্বার পুলিশ স্টেশনে একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। জওলপুর এলাকার গুলবাহার খান নামে জনৈক ব্যক্তি এই অভিযোগ দায়ের করেন। কোতওয়ালি হরিদ্বার পুলিশ স্টেশনের ইনচার্জ রাকেশ সিং জানিয়েছেন, জিতেন্দ্র নারায়ণ সিং ত্যাগী (যিনি ধর্ম পরিবর্তনের আগে ওয়াসিম রিজভি নামে পরিচিত ছিলেন) বিরুদ্ধে এই ইস্যুতে অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
জানা গিয়েছে, ১৭ থেকে ১৯ ডিসেম্বরে পুন্যভূমি হরিদ্বারে অনুষ্ঠিত হয়েছে এই রুদ্ধদ্বার ধর্মীয় সংসদ। যেখানে উপস্থিত ছিলেন এই সংসদের অসংখ্য প্রতিনিধি। বিতর্কিত ধর্মগুরু যতি নরসিংহনন্দ (Yati Narasimhanand) যার মূল আয়োজক। এর আগেও একাধিকবার উসকানিমূলক মন্তব্য করে বিতর্ক জড়ান তিনি। তবে হরিদ্বারের ধর্ম সংসদ তার চরম রূপ দেখল।
Thread on a 3 day "Dharm Sansad" organised in Haridwar by Hindutva groups where explicit calls were given for Hindus to pick up arms against Muslims.#HaridwarGenocidalMeet
Day 1, 17 Dec: Yati Narsinghanand said, "swords won't be enough to kill Muslims. We need beater weapons." pic.twitter.com/MTL8u1H7F3
— Kaushik Raj (@kaushikrj6) December 22, 2021
বিতর্কিত সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন হিন্দু রক্ষা সেনার প্রবোধানন্দ গিরি, বিজেপির মহিলা মোর্চার নেত্রী উদিতা ত্যাগী এবং বিজেপি নেতা অশ্বিনী উপাধ্যায়। একটি ক্লিপে দেখা যায় প্রবোধানন্দ গিরি বলছেন, “মায়ানমারের মতো আমাদের পুলিশ, সেনা, রাজনীতিবিদ এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের সমস্ত মানুষকে হাতে অস্ত্র তুলে নিতে হবে। এবার ‘সাফাই অভিযান’ চালাতে হবে।” অন্য একটি ক্লিপে পূজা শাকুন পান্ডে নামের এক বক্তা বলেন, “যদি ওদের সমূলে ধ্বংস করতে চান, তাহলে ওদের হত্যা করুন। আমরা এমন ১০০ জন যোদ্ধাকে চাই, যারা ওদের ২০ লাখ লোককে হত্যা করবে।”
আরও একটি ক্লিপে স্বামী ধরমদাস মহারাজ বলেন, সুযোগ পেলে তিনি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে হত্যা করতেন। তাঁর কথায়, “যদি আমি সেদিন সংসদে উপস্থিত থাকতাম, যেদিন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বলেছিলেন, জাতীয় সম্পদের উপর সংখ্যালঘুদের প্রথম অধিকার, আমি নাথুরাম গডসেকে অনুসরণ করতাম। একটি রিভলবার দিয়ে ওঁকে ছ’ বার বুকে গুলি করতাম।”
ওই ধর্মসংসদে বক্তাদের ঘৃণাভাষণ নেটমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশ জুড়েই তা নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও এর সমালোচনা করেন। কংগ্রেস নেতা শামা মহম্মদ টুইট করেন, ‘মস্করার অভিযোগে মুনাওয়ার ফারুকিকে কঠোর শাস্তির মুখে পড়তে হয়েছিল অথচ তিনি সেই বিতর্কিত মন্তব্য করেননি। অথচ ধর্ম সংসদের বিরুদ্ধে কোনওরকম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। প্রকাশ্যে বক্তারা হত্যার হুমকি দিয়েছেন।’