২১ ডিসেম্বর ২০২০। ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর টুইট করেছিলেন, বাংলায় ভোটবাক্সে দুই সংখ্যাও পেরোবে না বিজেপি। তাঁর কথা মনে রাখতে বলেছিলেন। তিনি বিশেষ দ্রষ্টব্য উল্লেখ করে এও লেখেন, “টুইটটি সেভ করে রাখুন, বিজেপি এর থেকে ভাল করতে আমি পেশা ছেড়ে দেব।”
২ মে, ২০২১। দুপুর ৩টে পর্যন্ত ৮১টি আসনে এগিয়ে বিজেপি। তৃণমূল এগিয়ে ২০৮টি আসনে। তাতে নিজেই নিজের ভবিষ্যদ্বাণীর কথা মনে করিয়ে দিলেন ভোটকুশলী। রবিবার নিজের টুইটার হ্যান্ডলে চার মাস আগের সেই টুইটই একেবারে উপরে তুলে এনেছেন তিনি। ট্রেন্ড অনুযায়ী, হ্যাটট্রিক করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই আবহে ফল ঘোষণা নিয়ে প্রথমবার মুখ খুললেন প্রশান্ত কিশোর।
এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে পিকে বলেছেন, ‘ফল একতরফা হতে পারে। কিন্তু, এটা কঠিন লড়াই ছিল।’ পিকে আরও বলেছেন, ‘মোদীর জনপ্রিয়তা রয়েছে মানেই যে BJP সব নির্বাচনে জিতবে, তার কোনও মানে নেই।’ তাঁর কথায়, ‘নির্বাচন কমিশন পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করেছে। আমাদের প্রচার করা মুশকিল হয়ে গিয়েছিল। আমরা আত্মবিশ্বাসী ছিলাম।’
For all the hype AMPLIFIED by a section of supportive media, in reality BJP will struggle to CROSS DOUBLE DIGITS in #WestBengal
PS: Please save this tweet and if BJP does any better I must quit this space!
— Prashant Kishor (@PrashantKishor) December 21, 2020
আরও পড়ুন: বুথের মধ্যে তৃণমূলের এজেন্টের শ্লীলতাহানির অভিযোগ, BJP এজেন্ট আটক
বিহারে নীতীশ কুমার বিজেপি-র সঙ্গে হাত মেলানোর পরেই তাঁর সঙ্গে রাজনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেন প্রশান্ত। তার পর ২০২১-এ বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তৃণমূলকে জেতানোর ভার হাতে তুলে নেন তিনি। অতীতে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কাজ করলেও, মমতার সঙ্গে হাত মেলানোয় প্রশান্তর উপর চটে যায় বিজেপি। কিন্তু প্রশান্তের সাফ বক্তব্য ছিল, বিজেপি-র বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধেই তাঁর লড়াই।
এত দিন ওই ভবিষ্যদ্বাণী নিয়ে প্রশান্তকে কম বিদ্রূপ করেননি বিজেপি নেতৃত্ব। এমন ভবিষ্যদ্বাণী করলে অবিলম্বে তাঁকে রাজনীতি থেকে অতি শীঘ্র তাঁকে রাজনীতি ছেড়ে অন্য পেশা খুঁজতে হবে বলে কটাক্ষও করেন তাঁরা। তবে রবিবার ভোটের ফলাফল প্রকাশ হওয়ার পর বিজেপি-র তরফে এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় ১৮টি আসন জিতে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলার কুর্সি দখলে ঝাঁপিয়ে পড়েছে গেরুয়াবাহিনী। এদিকে, উনিশের ‘ধাক্কা’ সামলে একুশে ঘুরে দাঁড়িয়ে নিজের জমি ধরে রাখতে মরিয়া মমতা বাহিনী। উনিশের নির্বাচনে বিপর্যয়ের পরই একদা মোদী-শাহের ভোটগুরু প্রশান্ত কিশোরের শরণাপন্ন হন তৃণমূল সুপ্রিমো। একুশের বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে পিকের কৌশলেই এগোচ্ছে মমতার দল, এমনটাই পর্যবেক্ষণ রাজনৈতিক মহলের একাংশের। প্রশান্ত কিশোরের কৌশলেই ‘দিদিকে বলো’-সহ একাধিক জনসংযোগ কর্মসূচিতে জোড়াফুল শিবির ঝাঁপিয়ে পড়েছে বলে মত রাজনীতির কারবারিদের একাংশের।
আরও পড়ুন: ভোটের ফল প্রকাশের আগের দিনই রাজভবনে মিঠুন, শুরু গুঞ্জন