বাবা শোভন চট্টোপাধ্যায়ের আচরণে ফের একবার গর্জে উঠলেন ছেলে ঋষি চট্টোপাধ্যায়। দশমীর সন্ধ্যায় বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে শোভনের সিঁদুরদানকে বেআইনি বলে দাবি করলেন তিনি। তাঁর দাবি, স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়কে অপমান করতেই এই কাজ করেছেন শোভন। তাঁর কথায়, ‘ওঁরা চেষ্টা করছেন সম্পর্কটাকে রোমান্টিকভাবে উপস্থাপন করতে। কিন্তু, আদতে তাঁরা বেলেল্লাপনা করে বেড়াচ্ছেন। ‘
সেই পুজোর আগে শুরু হয়েছিল, কখনও বাড়ির ব্যালকনিতে রবীন্দ্র সঙ্গীতে নাচ। আবার কখনও শাম্মি কাপুরের হিন্দি সিনেমার গানে নাচ। আর শেষমেশ ঘোড়ার গাড়ি করে ভিক্টোরিয়ায় গিয়ে উত্তম কুমারের কালজয়ী গান। সবেতেই সবার নজর কেড়েছিল শোভন-বৈশাখী জুটি। আর এবার কোনও লুকোচুরি না করেই দশমীর দিন মাকে বিদায় দেওয়ার মুহূর্তে বান্ধবী বৈশাখীর (Baisakhi Banerjee) সিঁথিতে সিঁদুর পরিয়ে বিয়েও সেরে ফেলেন শোভন চট্টোপাধ্যায় (Sovan Chattopadhyay)।
সেই সিঁদুর দানের মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। চারিদিকে ফের শুরু হয় শোভন-বৈশাখীকে নিয়ে চর্চা। বৈশাখী বলেন, ‘শোভন আমার সিঁথিতে সিঁদুর পরিয়ে দিল।” এর পরই শুরু হয় নতুন বিতর্ক। তবে কি বৈশাখীকে স্ত্রী হিসাবে মেনে নিলেন শোভন। রত্নাদেবীর সঙ্গে আইনি বিচ্ছেদ না হলেও কী ভাবে তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করলেন?
এবার ভাইরাল এই ছবি নিয়ে মুখ খুললেন শোভনপুত্র। তিনি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘সিঁদুর খেলা দুর্গাপুজোয় হতেই পারে। কিন্তু, আমার একটা প্রশ্ন রয়েছে। আমাদের দেশে শরিয়ত আইন মানা হয় না। দুর্গাপুজো হিন্দুদের উৎসব। আইনত যখন শোভন চট্টোপাধ্যায় বিবাহিত, তখন তিনি কী করে এমন একজনের সিঁথিতে সিঁদুর পরিয়ে দেন যিনি অন্যের স্ত্রী এবং তাঁরও বিবাহ বিচ্ছেদ হয়নি’!
এখানেই শেষ নয়, ঋষি আরও বলেন, ‘শোভন চট্টোপাধ্যায় স্নান করে বেরোনোর পর কালী পুজো করেন। তিনি যখন হিন্দু ধর্ম মানেন, তখন এত বড় আইন কী করে ভাঙেন! দুর্গাপুজোয় মহিলাকে সর্বোচ্চ শক্তি হিসেবে আরাধনা করা হয়। আমরা বলি, সব মহিলার মধ্যে দুর্গা রয়েছেন। আজ তিনি দুর্গাপুজোয় নিজের স্ত্রীকে অপমান করে অন্যের স্ত্রীকে সিঁদুর পরিয়ে দিচ্ছেন। ইসলামেও বলা হয়েছে যদি আপনি দ্বিতীয় বিয়ে করতে চান তাহলে প্রথম স্ত্রীর অনুমতি প্রয়োজন। কিন্তু, এখানে তো উনি বেলেল্লাপনা করে বেড়াচ্ছেন।
মিডিয়ার সামনে তা তা থৈ থৈ করে নাচা হচ্ছে, তাঁরা সব কিছু রোমান্টিকভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা করছেন। কিন্তু, এতবড় আইন ভঙ্গ হল, সমাজের মানুষজনের কি প্রশ্ন তোলা উচিত নয়? শোভন চট্টোপাধ্যায় কোনও সাধারণ ব্যক্তিত্ব নন। তিনি কলকাতার মেয়র থাকাকালীন মন্ত্রিত্ব সামলেছেন। ওঁর বাড়ি থেকে সোনিয়া গান্ধীর বাড়ি পর্যন্ত শাড়ি যেত। আমার উত্তর চাই, শোভন চট্টোপাধ্যায় ধার্মিক বিষয় নিয়ে কেন খেলছেন? এবার দেশের মানুষের কাছে তাঁকে উত্তর দিতে হবে।’ সমাজের মানুষের কাছে শোভন চট্টোপাধ্যায়কে জবাব দিতে হবে, দাবি ঋষির। মোটের উপর এই ভাইরাল ছবি নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়ে তাঁর বক্তব্য, ‘এভাবে অন্যের স্ত্রীকে সিঁদুর পরিয়ে দেওয়া হিন্দু আইন বিরুদ্ধ’।
বৈশাখীর সিঁথিতে শোভনের সিঁদুর পরানো নিয়ে ইতিমধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তাঁর স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়। প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন শ্বশুর দুলাল দাসও।