শিশুকে স্তন্যপান তো সব মা করান। কিন্তু জরুরি বহু কিছু তাদের মাথায় থাকে না। নতুন মায়েদের জন্য রইল বেশ কিছু টিপস ৷ যেগুলি তাঁরা মনে রাখলে মা ও শিশু দু’জনেই উপকৃত হবে ৷
- মা ও সদ্যোজাতর শারীরিক জটিলতা না থাকলে সন্তানের জন্মের পর থেকেই স্তন্যপান করানো শুরু করুন ৷
- সন্তান প্রসবের পর থেকেই মায়ের স্তনে হলুদ কলোস্ট্রাম ক্ষরণ হয় ৷ নবজাতকের জন্য এটা খুবই প্রয়োজনীয় ৷ পুষ্টিমূল্যে ভরপুর কলোস্ট্রাম সদ্যোজাতকে অবশ্যই পান করাবেন ৷
- প্রতি দু’ ঘণ্টা অন্তর ব্রেস্টফিডিংয়ের চেষ্টা করুন ৷ সন্তানের জন্য ‘এক্সক্লুসিভ ব্রেস্টফিডিং’ রুটিন পালন করতে পারলে সেটা খুবই ভাল ৷ এর অর্থ জন্মের পর থেকে ৬ মাস পর্যন্ত শিশুকে শুধুই ব্রেস্টমিল্ক ডায়েটে রাখা ৷
- স্তন্যপান করানোর আগে ঈষদুষ্ণ জলে স্নান করে নিলে ভাল হয় ৷ এতে শরীর ঝরঝরে লাগে ৷ দুধের যোগানও পর্যাপ্ত হয় ৷
- যদি জনসমক্ষে ব্রেস্টফিডিং করাতে হয়, নিভৃত কোণ বেছে নিন ৷ আপনি নিজে স্বচ্ছন্দ না হলে ভাল করে ব্রেস্টফিড করাতে পারবেন না ৷ ব্রেস্টফিডিং করানোর সময় চিন্তামুক্ত থাকার চেষ্টা করবেন ৷
- শিশুর খাওয়ার সময়সূচি মেনে চলার চেষ্টা করবেন ৷ দেরি করবেন না ৷ যদি বাচ্চা কান্নাকাটি নাও করে, তাও নির্দিষ্ট সময়েই ব্রেস্টফিড করান ৷ মনে রাখবেন, শিশু কাঁদছে মানে তার খুবই খিদে পেয়েছে ৷ অল্পস্বল্প খিদে অনুভূতির ক্ষেত্রে অন্য লক্ষণ দেখা দেয় ৷ যেমন, অনেক ক্ষেত্রে খিদে পেলে শিশু জিভ বার করে তার ঠোঁট চাটতে থাকে ৷ কখনও কখনও সে আঙুলও চোষে ৷ এই ভঙ্গিগুলো দেখলে সতর্ক হবেন ৷ বুঝবেন ওর খিদে পেতে শুরু করেছে৷
আরও পড়ুন : আপনি জানেন কি বিজ্ঞানের আলোয় লিঙ্গ মূলত ৭ প্রকার!
- ব্রেস্টফিডিং করানোর আগে বাচ্চার ডায়াপার পাল্টে দিন৷ ভিজে ও অস্বস্তিজনক অবস্থায় কোনও শিশুই ভাল করে খেতে পারে না ৷ পাশাপাশি নিজেও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয়ে নিন ৷ প্রতি বার বাচ্চাকে ব্রেস্টফিড করানোর আগে ও পরে পরিষ্কার ভিজে কাপড়ের টুকরো দিয়ে স্তনবৃন্ত পরিষ্কার করে নেবেন ৷ হাত ধোবেন সাবান দিয়ে ৷ আপনি এটুকু খেয়াল না রাখলে কিন্তু ক্ষতি হবে আপনার সন্তানেরই ৷
- সন্তানকে ব্রেস্টফিড করানোর আগে প্রচুর পরিমাণে জল বা ফলের রস খান ৷ মায়ের শরীরে ফ্লুইডের ভারসাম্য সামঞ্জস্যপূ্র্ণ না হলে দুধের উৎপাদন ব্যাহত হবে ৷ পাশাপাশি যত্ন নিন নিজের খাওয়াদাওয়ার দিকেও ৷ ডায়েটে রাখুন প্রোটিন ও ভিটামিনের সঠিক সামঞ্জস্য ৷ ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবারও অবশ্যই খাবেন নতুন মায়েরা ৷
- হাসপাতালের নার্স বা বাড়িতে অভিজ্ঞ কারওর কাছে শিখে নিন ব্রেস্টফিড করানোর সময় শিশুকে কীভাবে কোলে শোয়াবেন এবং ধরে থাকবেন৷ মায়ের কোলে সঠিক ভঙ্গিমায় শিশু না থাকলে কিন্তু মা ও সন্তান অসুবিধে হবে দু’জনেরই ৷
- সবার শেষে আরও একটা কথা ৷ ব্রেস্টফিডিং কিন্তু অত্যাচার বা নিপীড়ন নয় ৷ এই অভ্যাসে একদিকে যেমন নবজাতক সুস্থ থাকে, ঠিক সেরকমই অন্যদিকে মায়ের জন্যও ভাল৷ তাই স্বচ্ছন্দ হয়ে খুশি মনে সন্তানকে ব্রেস্টফিড করান ৷ ধৈর্য হারাবেন না ৷ মনে রাখবেন নতুন মায়েদের ক্ষেত্রে জীবনে প্রথম বার এই অভিজ্ঞতায় সাফল্যের মূল চাবিকাঠি কিন্তু ধৈর্য ৷
আরও পড়ুন : Sexual Health: বহু দিন যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হননি? জানুন কী ক্ষতি হচ্ছে এর জেরে